নিজস্ব প্রতিবেদক :
অন্তর্বর্তী সরকারে যে দুই ছাত্র উপদেষ্টা (আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলম) রয়েছেন, তাদের সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
শনিবার (২৪ মে) দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক পার্টির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারে যে দুই ছাত্র উপদেষ্টা (আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলম) রয়েছেন, তাদের সঙ্গে এনসিপির কোনো সম্পর্ক নেই। তারা যদি রাজনীতি করতে চান, নির্বাচন করতে চান, তাহলে সরকারে থেকে সেটা করতে পারবেন না। তখন তারা সরকার থেকে বের হয়ে তাদের মতো সিদ্ধান্ত নেবেন।
তিনি বলেন, তারা (দুই ছাত্র উপদেষ্টা) গণঅভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে গণঅভ্যুত্থানের প্রতিনিধি হিসেবে সেই সময়ে সরকারে গিয়েছিলেন। আমিও তাদের সঙ্গে ছিলাম। তারা যদি রাজনীতি করতে চান, নির্বাচন করতে চায়, তাহলে তারা সরকারের থেকে সেটা পারবেন না।
নাহিদ ইসলাম বলেন, দুই উপদেষ্টার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক না থাকার পরও তাদেরকে জাতীয় নাগরিক পার্টির সঙ্গে সংযুক্ত করে এক ধরনের অপপ্রচার এবং তাদের হেয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা বলব এটি খুবই উদ্দেশ্যমূলক। গণঅভ্যুত্থানের প্রতিনিধি হিসেবে যারা গিয়েছে। সরকার থেকে তারা বের হবেন বা আদৌ বের হবেন কি না সেটা তাদের সিদ্ধান্ত। আমাদের প্রত্যাশা, গণঅভ্যুত্থানের বৈধতাসহ আকাঙ্ক্ষাগুলো বাস্তবায়নের ছাত্র উপদেষ্টাসহ সব উপদেষ্টা একত্রে কাজ করবেন। দুজন ছাত্র উপদেষ্টাকে জাতীয় নাগরিক পার্টির সঙ্গে সংযুক্ত করে যে অপপ্রচার করা হচ্ছে আমরা তার নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের সরকার। আমরা মনে করি, এই সরকার গণঅভ্যুত্থানের পরে তৈরি হয়েছে তাই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের দায়বদ্ধতা রয়েছে। গণহত্যার বিচার এবং রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কারের মধ্য দিয়েই সরকারকে নির্বাচনের দিকে যেতে হবে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা উচিত। বিচার সংস্কার এবং নির্বাচনী রোড ম্যাপ একত্রে ঘোষণা করা দরকার। সবার সঙ্গে আলোচনা করে একটা সুষ্ঠু সমাধানে যাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। আমাদের সবাইকে দায়িত্বশীলভাবে আলোচনা করতে হবে। আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা, ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের কথা ভেবে আমাদেরকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।
তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ৬২৬ জনের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এই তালিকা যদি আগেই প্রকাশ করা হতো তাহলে জনমনে শঙ্কা তৈরি হতো না। সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে পারতো না। আমরা দেখেছি সেনাবাহিনীর সঙ্গে রাজনীতির একটা সম্পর্ক তৈরি হয়। ওয়ান ইলেভেনের সময় আমরা দেখেছি। এটা সুখকর নয়। বিগত সময়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করা হয়েছে। মানবতাবিরোধী অভিযোগও তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে। যে সব সেনা অফিসারের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ রয়েছে অনেকেই গ্রেঢতার হয়নি, বা কি অবস্থায় আছে আমরা জানি না।
তিনি আরো বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দিকে যাওয়া উচিত। নির্বাচন কমিশন আস্থার জায়গা হারিয়েছে বলে আমরা মনে করি। কাজেই নির্বাচন কমিশনকে আস্থাটা তৈরি করতে হবে অথবা দায়িত্ব ছেড়ে দিতে হবে বলে আমরা মনে করি।
সরকারে থাকা দুইজন ছাত্র উপদেষ্টাকে নিয়ে এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, গণঅভ্যুত্থানের প্রতিনিধি হিসেবে তারা গিয়েছে। এটা তাদের সিদ্ধান্ত তারা সরকার থেকে বের হবে কি না। দুইজন ছাত্র উপদেষ্টাকে নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির সঙ্গে যেভাবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে আমরা এটির তীব্র নিন্দা জানাই।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ প্রমুখ।