আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ভারতের রাজধানী দিল্লিতে ভারি বৃষ্টিপাতের ফলে বিভিন্ন জায়গায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় বুধবার জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছিল। এ সময় বৃষ্টিজনিত বিভিন্ন ঘটনায় অন্তত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া প্রাকৃতিক এই দুর্যোগে নিখোঁজ রয়েছেন আরও শতাধিক মানুষ।
বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, ভারী বৃষ্টিপাতে প্রাণহানির পাশাপাশি ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ভারতের আবহাওয়া বিভাগ বলেছে, বুধবার গভীর রাতে রাজধানী দিল্লিতে তুমুল বৃষ্টিপাত হয়েছে। দিল্লির পূর্বাঞ্চলে ও এর আশপাশের এলাকায় মোট ১৪৭ মিলিমিটার (৫.৮ ইঞ্চি) বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
গত ১৪ বছরে দিল্লিতে মাত্র ২৪ ঘণ্টায় এ পরিমাণ বৃষ্টি আর হয়নি বলে জানিয়েছে দেশটির গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা।
বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) ভারতের রাজধানী অঞ্চলে বজ্রসহ ভারি বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে দেশটির আবহাওয়া পরিষেবা। সোমবার পর্যন্ত এ পরিস্থিতি চলতে পারে বলে জানিয়েছে তারা। এ অবস্থায় দিল্লিজুড়ে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে আইএমডি।
নগরীর বাসিন্দাদের বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না বের হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে তারা। বুধবার রাতে দিল্লি সরকারের শিক্ষামন্ত্রী পহেলা অগাস্ট রাজধানী অঞ্চলের সব স্কুল বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন।
এদিকে ভারি বৃষ্টির ফলে দিল্লির পাশাপাশি দিল্লি-নয়ডা এক্সপ্রেসওয়েতেও ব্যাপক যানজটের কথা জানিয়েছেন যাত্রীরা। রাজধানী অঞ্চলের মেহরৌলি-ছত্তরপুর সড়কে প্রবল বৃষ্টির কারণে দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় রাস্তায় আটকে থাকার অভিযোগ করেছেন যাত্রীদের।
একইভাবে উত্তরপ্রদেশের নয়ডা থেকে দিল্লির মূলচাঁদ পর্যন্ত ডিএনডি ফ্লাইওভারে গাড়ির লম্বা লাইন দেখা গেছে।
ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, গাজিপুরের খোদা কলোনিতে জলমগ্ন নর্দমায় পা পিছলে তনুজা নামের ২২ বছর বয়সী এক নারী ও তার তিন বছরের ছেলের মৃত্যু হয়েছে। মিঠাপুরে নিজ বাড়ির সামনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ২৮ বছর বয়সী এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
রাতভর ভারি বৃষ্টির জেরে নয়ডার বেশ কয়েকটি আন্ডারপাস জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। এখানে একটি দেয়াল ধসে দুই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। গুরুগ্রামের আইএফএফসিও চকে জলমগ্ন রাস্তায় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
কয়েকদিন ধরে চলা ভারি বৃষ্টিতে দিল্লির বাসিন্দারা বিভিন্ন ধরনের দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। গত শনিবার নগরীর এক ভবনের বেজমেন্টের একটি কোচিং সেন্টারে পানিতে ডুবে তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। ওই ঘটনার পর থেকে এ নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
আবহাওয়ার কারণে বিমান চলাচলও বিঘ্নিত হয়েছে, দিল্লিগামী কমপক্ষে ১০টি বিমানকে জয়পুর ও লখনউয়ের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিমান সংস্থাগুলি আবহাওয়ার কারণে আরও সম্ভাব্য ফ্লাইট বিঘ্নের বিষয়ে সতর্ক করেছে।