নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৭ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে দুই জন প্রাপ্ত বয়স্ক ছাড়া বাকি সবাই শিশু। প্রাপ্ত বয়স্কদের একজন পাইলট তৌকির ইসলাম ও একজন শিক্ষিকা মাহরীন চৌধুরী। এছাড়া বর্তমানে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ৭৮ জন।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকালে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে এসব তথ্য জানান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের পরিচালক মো. নাসির উদ্দীন।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, সোমবার (২১ জুলাই) রাতে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আরও আটজনের মৃত্যুর পর এ সংখ্যাটি এসে দাঁড়িয়েছে ১০ জনে। এখানে ভর্তি আছে ৪২ জন। সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে গতকাল রাতে আরও তিনজন ভর্তি হয়ে এখন চিকিৎসাধীন আছেন ২৮ জন। সেখানে সবমিলিয়ে ১৫ জনের মরদেহ ছিল। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল থেকে নেওয়া হয় একজনের মরদেহ। এছাড়া উত্তরা আধুনিক হাসপাতাল থেকে আরেকজনের দেহাবশেষ নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যদিও চিকিৎসকরা এখনই এটিকে মরদেহ বলে শনাক্ত করেননি। এটি মরদেহ হিসেবে শনাক্তের পর ডিএনএ টেস্ট করা হবে। সিএমএইচ থেকে আটজনের মরদেহ স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পাইলট তৌকিরের মরদেহ সিএমএইচে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, ছয়জনের মরদেহের পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। তাদের ডিএনএ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন মারা গেছেন। সেখানে তিনজন এখন ভর্তি আছেন, যাদের দুইজন আইসিইউতে আছেন। এছাড়া ইউনাইটেড হাসপাতালে একজনের মরদেহ আনা হয়েছে। সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা ২৭ জন, হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৭৮ জন।
সায়েদুর রহমান বলেন, জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি রোগীদের মধ্যে পাঁচ জন আইসিইউতে ভর্তি আছেন। তাদের মধ্যে দুইজনকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে। এ পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
তিনি বলেন, আমাদের এ হাসপাতালের সঙ্গে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা আছে। তার ভিত্তিতে কারিগরি সহায়তার জন্য বাংলাদেশ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। রোগীদের কেইস সামারি তাদের পাঠানো হয়েছে। এ মুহূর্তে সিঙ্গাপুরে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার সেই হাসপাতালে উপস্থিত আছেন। সেই হাসপাতালের চিকিৎসকরা কেইস স্টাডি দেখে যদি মনে করেন কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পাঠাবেন অথবা তাদের পরামর্শ অনুসারে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
রক্তদাতাদের হাসপাতালে ভিড় না করার অনুরোধ জানিয়ে তিনি আরো বলেন, এখন ১০০ জনেরও কম রক্তদাতা প্রয়োজন। তাই নেগেটিভ গ্রুপের রক্তদাতা ছাড়া অন্যরা ভিড় করবেন না। আমাদের ব্যবস্থাপনা করতে অসুবিধা হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে সায়েদুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত বার্ন ইনস্টিটিউট থেকে ১০ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল থেকে আটজন, ইউনাইটেড হাসপাতাল থেকে একজন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে একজনের মরদেহ স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মাইলস্টোন স্কুলের অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের খোঁজ পেতে স্বজনরা হন্যে হয়ে এ হাসপাতাল থেকে ওই হাসপাতালে ঘুরছেন। তাদের বিষয়ে জানতে চাইলে সায়েদুর রহমান বলেন, পাবলিক ডোমেইনে ইতোমধ্যে ভর্তি রোগীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। কারা কোনো হাসপাতালে ভর্তি তা ওই তালিকা থেকে দেখে নেওয়ার অনুরোধ করছি।