নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিনেও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পশু কুরবানি করছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। মূলত, ঈদের দিন ভোর থেকে বিকাল পর্যন্ত রাজধানীতে বৃষ্টি হওয়ায় অনেকেই পশু জবাই দেননি। তাই, দ্বিতীয় দিনে অনেকেই পশু কুরবানি দিচ্ছেন।
প্রথম দিনে বৃষ্টির কারণে এবং কসাই সংকটের কারণে অনেকে শুক্রবার কোরবানি দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। তবে প্রথম দিনের অনুপাতে এ সংখ্যা খুবই কম। এদিকে দ্বিতীয় দিনের কোরবানি বর্জ্য অপসারণের জন্যও প্রস্তুতি আছে বলে জানিয়েছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন।
শুক্রবার (৩০ জুন) ফজরের নামাজ পর পরই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পশু কুরবানি শুরু হয়।
ইসলামের বিধি মোতাবেক, ঈদের তৃতীয় দিন পর্যন্ত পশু কুরবানি দেওয়া যায়।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ঈদের দ্বিতীয় দিন সকালে পশু কোরবানি দিচ্ছেন অনেকে। কেউ কেউ পারিবারিক ঐতিহ্যের কারণে, আবার অনেকে ঈদের দিন কসাই না পাওয়ায় কোরবানি করতে পারেননি। তাই দ্বিতীয় দিনে কোরবানি দিচ্ছেন তারা। পাড়া-মহল্লার অলিগলি, বাসার নিচের গ্যারেজে, প্রধান সড়কে পছন্দের গরু, মহিষ, খাসি, ভেড়া, দুম্বা কোরবানি করছেন সামর্থ্যবান মুসলমানরা।
দ্বিতীয় দিনে একাধিক কুরবানিদাতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রথমদিন সবাই কোরবানি করেন, তাই কসাই পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। এ কারণে তারা দ্বিতীয় দিনে পশু কুরবানি করেন।
মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা পলাশ বলেন, ঈদের দিন ভোর থেকেই ঝুম বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টির মধ্যেই নামাজ আদায় করেছি। ভেবেছি নামাজ শেষ হওয়ার পর বৃষ্টি থামবে। কিন্তু বৃষ্টি না থামায় দুপুরে সিদ্ধান্ত নেই আজ আর পশু জবাই দিব না। তাই আজকে কুরবানি করছি।
ঈদের দিন গরু কিনেছেন তাই সেদিন কুরবানি দিতে পারেননি। তাই আজ কুরবানি দিচ্ছি বলে জানালেন শ্যামলী এলাকার বাসিন্দা সাইদুর।
তিনি বলেন, ঈদের আগের দিন গরু কিনতে পারেনি। ঈদের দিন গরু কিনে বাড়ি ফিরতে ভোর হয়ে গেছে। কসাই ঠিক করতে পারিনি। তাই ঈদের দ্বিতীয় দিন কুরবানি দিচ্ছি।
মালিবাগের টিপু সুলতান জানান, আমরা সবসময় ঈদের দ্বিতীয় দিনেই কুরবানি দিয়ে থাকি। তবে, আজ জুমার দিন হওয়ার ফজরের পরেই পশু জবাই দেওয়া হয়। সাড়ে ১২টায় আযান হয়ে যায়। তাই দ্রুত সবকিছু শেষ করে নামাজের প্রস্তুতি নেব।
শেওড়াপাড়ার বাসিন্দা রিপন জানান, গত দুইদিন ধরেই রাজধানীতে বৃষ্টি হচ্ছে। ঈদের দিন বৃষ্টি হবে আবহাওয়া অধিদপ্তর আগেই জানিয়েছিল। তাই, আগে থেকেই সিদ্ধান্ত ছিল ঈদের দ্বিতীয় দিন পশু কুরবানি করব।
খিলগাঁও সিপাহিবাগে কোরবানিদাতা জুয়েল আহমেদ জানালেন, প্রতিবার ঈদের দিনই পশু কোরবানি করি। এবার কসাই না পাওয়ায় আজ কোরবানি করছি। আর দ্বিতীয় দিনে কসাইয়ের খরচও কম। ঈদের দিন যেখানে ১২-১৩ হাজার টাকা দেওয়া লাগতো, আজ সেখানে ৫ হাজার টাকা দিলেই হচ্ছে। দ্বিতীয় দিনে কোরবানি দেওয়ার এটিও একটি সুবিধা।
এদিকে দ্বিতীয় দিনের কোরবানি বর্জ্য অপসারণের জন্যও প্রস্তুতি আছে বলে জানিয়েছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাছেরবলেন, প্রথম দিনের কোরবানি বর্জ্য আমরা রাত দেড়টার মধ্যে অপসারণ করেছি। আজকেও আমাদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মীরা কাজ করছে৷ আজ কোরবানি তুলনামূলক কম হওয়াতে আশা করছি আরও কম সময়েই আমরা বর্জ্য অপসারণ করতে পারবো।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) জনসংযোগ কর্মকর্তা মকবুল হোসেন জানান, দ্বিতীয় দিনের কোরবানি বর্জ্য তাদের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা সঙ্গে সঙ্গেই সরিয়ে নিচ্ছেন। তবে বিভিন্ন কীটনাশক ও ব্লিচিং পাউডার পরে একসঙ্গে দেওয়া হবে।