নিজস্ব প্রতিবেদক :
পবিত্র ঈদুল আজহার আগে সরকারি চাকরিজীবীদের শেষ কর্মদিবস সোমবার (২৬ জুন)। কর্মদিবস শেষ করে মোট পাঁচদিন ছুটিতে যাবেন সরকারি চাকরিজীবীরা। ইতোমধ্যে অন্যান্য পেশার মানুষের ঈদের ছুটি শুরু হলেও মূলত সোমবার (২৬ জুন) অফিস শেষে ছুটি মিলবে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। অফিস শেষে বাড়ি ফিরতে শুরু করবেন অনেকে। ঈদের পর আগামী ২ জুলাই খোলা হবে সরকারি অফিস।
সকাল থেকে খাদ্য মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ঘুরে দেখা গেছে, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্বাভাবিকভাবেই অফিস করছেন। তবে কর্মচারীদের উপস্থিতি কিছুটা কম।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দূর-দূরান্তেই প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে যাওয়ার জন্য কর্মচারীদের কেউ কেউ ঈদের আগের দু-একদিন ছুটি নিয়েছেন। আবার কেউ কেউ আজকে অফিসে উপস্থিতি দিয়েই ছুটবেন বাস ও ট্রেন স্টেশন এবং লঞ্চঘাটের দিকে।
সচিবালয়ে গাড়ি পার্কিংয়ের স্থানগুলো অন্যান্য দিনের মতোই গাড়িতে পূর্ণ ছিল। তবে দর্শনার্থীরা না থাকায় কিছুটা ফাঁকা ফাঁকা লাগছিল সচিবালয়। লিফটগুলোর সামনে ভিড় ছিল না। সোমবার সচিবালয়ে দর্শনার্থী প্রবেশ বন্ধ থাকে। সকাল ১০টার দিকে সচিবালয়ে ৪ নম্বর ভবনের নিচে মুদি-মনিহারির দোকানে ওএমএসের চাল ও আটা কিনতে কর্মচারীদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো. অলিউল্লাহ বলেন, আজকে অন্যান্য দিনের মতোই আমাদের মন্ত্রণালয়ের অফিস চলছে, একেবারেই স্বাভাবিক। ঈদুল আজহার সময় ছুটি নেওয়ার প্রবণতা খুব বেশি থাকে না। যেটা ঈদুল ফিতরের সময় থাকে। তবে নিচের লেভেলের কিছু কর্মচারী দু-একদিন ছুটি বাড়িয়ে নিয়ে থাকে। যেহেতু ঈদের ছুটি একদিন বাড়ানো হয়েছে। তাই আমাদের এখানে ওপরের লেভেলের কেউ ছুটি চাননি বা নেননি।
তিনি বলেন, কর্মচারীরা সাধারণত ঈদের সময় ২/১ দিন ছুটি বাড়িয়ে নেন। দূর-দূরান্তে তারা ঈদ করতে যান। আমরাও সেটা দিয়ে দেই।
স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মলয় চৌধুরী বলেন, স্বাভাবিকভাবেই অফিস চলছে। সকাল থেকে মিটিং করছি। আজকে আরও মিটিং আছে, সেগুলোও করবো। দু-একজন ছুটি নিয়েছেন, যাদের বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে। এছাড়া ঈদের জন্য স্বাভাবিকভাবে কোনো ছুটি আমাদের এখান থেকে কেউ নেননি।
২০২৩ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুযায়ী, আগামী ২৮ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ঈদুল আজহার নির্ধারিত সরকারি ছুটি ছিল। তবে এই ছুটি ২৭ জুন থেকে দেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রিসভা। এর ফলে আগামী ২৭ জুন থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত থাকবে ঈদের ছুটি। পরদিন ১ জুলাই (শনিবার) থাকবে সাপ্তাহিক ছুটি। সে হিসেবে মোট ৫ দিন ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা।
গত ১৯ জুন মন্ত্রিসভার বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্তের বিষয়ে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, মানুষ ঈদুল আজহা যাতে সুষ্ঠুভাবে উদযাপন করতে পারেন, সেজন্য প্রধানমন্ত্রী নির্বাহী আদেশে ছুটির অনুমোদন দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ঈদের আগে সাধারণত একদিন ছুটি থাকে। একদিন ছুটি থাকলে সবাই একসঙ্গে রওয়ানা করে। গত ঈদে আমরা একদিন বাড়তি ছুটি দিয়েছিলাম, দেখেছি ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট ঠিক থাকে। গত ঈদে দেখেছেন ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাটা ভালোভাবে করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন, যাতে সবাই সুন্দরভাবে বাড়ি যেতে পারেন। সেজন্য সবাইকে প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক করতে সর্বশেষ গত ঈদুল ফিতরে একদিন ছুটি বাড়ানোর অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। রমজান মাস ২৯ দিন ধরে ২২ এপ্রিল (শনিবার) ঈদুল ফিতরের তারিখ নির্ধারণ করে ছুটির তালিকা তৈরি করা হয়েছিল।
সে অনুযায়ী ২১, ২২ ও ২৩ এপ্রিল (শুক্র, শনি ও রোববার) ঈদের ছুটি ছিল। তার আগে ১৯ এপ্রিল (বুধবার) ছিল শবে কদরের ছুটি। মাঝে ২০ তারিখ ছুটি ঘোষণা করায় ১৯ থেকে ২৩ তারিখ পর্যন্ত টানা ৫ দিন ছুটি কাটান সরকারি চাকরিজীবীরা।