মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
ঈদ যাত্রার শুরুতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় প্রায় ১৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তৈরি হয়েছে যানবাহনের দীর্ঘ সারি। এতে তীব্র যানজটে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।
শুক্রবার (৫ এপ্রিল) ভোর ৪টা থেকে মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী (লেনে) সড়কে যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকে। পরে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তৈরি হয় দীর্ঘ যানজট।
সরেজমিনে জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গজারিয়া অংশের ১৩ কিলোমিটারজুড়ে কোথাও যানজট ও কোথাও ধীর গতিতে যানবাহন চলাচল করছে। এতে যাত্রীরা গাড়িতেই দীর্ঘক্ষণ ধরে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। সময় মতো গন্তব্যে পৌঁছাতে না পেরে অনেকে অস্বস্তি বোধ করছেন।
অন্যদিকে যানবাহনের বাড়তি চাপের কারণে গজারিয়ায় মেঘনা সেতু থেকে কুমিল্লার দাউদকান্দি মেঘনা-ঘোমতী সেতু পর্যন্ত ধীর গতিতে চলছে যানবাহন। এতে সড়কে যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় থেকে ভোগান্তি হচ্ছে যাত্রীদের। তবে ঈদযাত্রায় বাড়ি ফেরা মানুষের ভোগান্তি এড়াতে মহাসড়কে বিভিন্ন পয়েন্টে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
গজারিয়া হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ হুমায়ুন কবির জানান, পুরোপুরিভাবে ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার আগেই দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা। এছাড়া মহাসড়কে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সিসিটিভির মাধ্যমে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, গজারিয়ার মেঘনা সেতু থেকে গোমতী সেতু পর্যন্ত মহাসড়কের কিছু অংশ সরু হওয়ার কারণে সেখানে যানবাহনের জটলা দেখা দেওয়ায় পুরো মহাসড়কজুড়ে যানবাহনের ধীর গতির সৃষ্টি হয়েছে। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিকেলের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যেহেতু এখনও বিভিন্ন শিল্পের প্রতিষ্ঠান ও গার্মেন্টসের ছুটি হয়নি। ফলে অতিরিক্ত চাপ তৈরি হওয়ার আশঙ্কা নেই। তবে শুক্রবার রাত থেকে যানবাহনের চাপ বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হবে।
রুমা আক্তার নামের এক বাসযাত্রী বলেন, ‘পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঈদ করতে কুমিল্লায় বাড়িতে যাচ্ছি। কিন্তু যানজটের কারণে এক স্থানেই দীর্ঘক্ষণ বসে থাকতে হচ্ছে। সঙ্গে থাকা শিশুর সবচেয়ে বেশি কষ্ট হচ্ছে।’
কুমিল্লার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক রাজিব খান বলেন, গুরুত্বপূর্ণ কাজে জুমার নামাজের আগে ঢাকা যেতে হবে। যানজট ও ধীরগতির কারণে যাওয়া হলো না। এখন বাড়ি ফিরে যাব।’ আরেক যাত্রী মাসুদ মিয়া বলেন, ‘সকাল ৮টায় বাড়ি থেকে রওনা দিয়েছি। বাসে বসেই আছি। গাড়ি কোনো দিকে যায় না।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে চট্টগ্রামগামী সনি পরিবহনের বাসের চালক রাজু মিয়া বলেন, নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দে এসে যানজটে আটকা পড়ে ১৩ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে ২ ঘণ্টা সময় লেগেছে। এতে বাসের যাত্রীদের শৌচাগার, খাবারসহ বিভিন্ন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
ট্রাক চালক জসিম উদ্দিন বলেন, আজ সকালে নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দ এলাকা থেকে গজারিয়ায় আসতে অন্যদিনের চেয়ে অনেক বেশি সময় লেগেছে। বেশ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।