Dhaka সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইসির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের নির্দেশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ১৮ ডিসেম্বর থেকে নির্বাচনী প্রচারণা ছাড়া কোনো সভা-সমাবেশ করা যাবে না। ইসির এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ জন্য পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল আল মামুনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট ইউনিটকে নির্দেশনা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা জানান তিনি।

নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণা ছাড়া অন্য যেকোনও মিছিল-সমাবেশ বন্ধ রাখার জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিদ্ধান্ত যথার্থ বলে মনে করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ‘আগামী ১৮ ডিসেম্বর থেকে নির্বাচনি প্রচারণা ছাড়া অন্য যেকোনও ধরনের সভা-সমাবেশ নয়’ নির্বাচন কমিশনের এমন নির্দেশনা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সবাই এখন নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত। এ সময় প্রতিটা দল তাদের প্রচার-প্রচারণা চালাবে। সেখানে কোনও দল নির্বাচন ছাড়া অন্য কোনও বিষয়ে সভা-সমাবেশ করলে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে। নির্বাচনি প্রচারণা ও কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি হতে পারে। সেজন্যই নির্বাচন কমিশন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নির্বাচন কমিশন অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যেটা মনে করেছে, আমি মনে করি সেটা যথার্থই মনে করেছে। সুষ্ঠু, সুন্দর ও স্বাভাবিকভাবে যাতে নির্বাচন হয়, সেজন্যই এমন নির্দেশনা দিয়েছে। সঠিক, সুন্দর ও নিরপেক্ষভাবে একটি নির্বাচন হতে দেওয়ার জন্য সিইসি যা যা নির্দেশনা দিয়েছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী সেগুলো পালন করবে।

ইসির এমন নিষেধাজ্ঞায় সংবিধান লঙ্ঘন হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইসির এ সিদ্ধান্তে সংবিধান লঙ্ঘন হয়েছে বলে মনে হয় না। নির্বাচন কমিশন তো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। তারা যখন একটি নির্দেশনা দিয়েছে, সংবিধান দেখেই দিয়েছে। এখানে সংবিধান লঙ্ঘন হওয়ার কিছু নেই, এখানে নির্বাচন কীভাবে হবে সেটা তিনি জানেন।

এর আগের নির্বাচনগুলোতে এমন হয়নি- দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আসাদুজ্জামান খান বলেন, এখন হয়তো তিনি (সিইসি) চিন্তা করছেন এ রকম হতে পারে, সেজন্য তিনি বলেছেন।

নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে, এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, মোটেই অবনতি হবে না। অবনতি ঘটানোর জন্য প্রচেষ্টা চলছে, সেটা আপনারা দেখছেন। জায়গায় জায়গায় বাস পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, জায়গায় জায়গায় রেললাইন উঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এগুলো স্বাভাবিক করার জন্য নির্বাচন কমিশন তাদের দৃষ্টিতে যেটা মনে হয়েছে, সেটা তারা ঘোষণা দিয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা বাস্তবায়নে কি আপনারা মাঠ পর্যায়ে নির্দেশনা দেবেন- এ বিষয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, নির্দেশনা পালন যাদের যাদের দায়িত্ব, আমার মনে হয় চিঠি অনুযায়ী তারা দায়িত্ব পালন করবে। তবে নির্বাচন কমিশন ভোটের প্রচার-প্রচারণা কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা দেয়নি ।

বিএনপি যাতে আগামী ১৮ ডিসেম্বরের পর সভা-সমাবেশ না করতে পারে সেজন্য কি এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এটি আপনি নির্বাচন কমিশনকে জিজ্ঞাসা করবেন। নির্বাচন কমিশন তো স্পষ্টই বুঝতে পারছে, তারা (বিএনপি) নির্বাচনে না এসে ধ্বংসের খেলায় নেমেছে। সে জায়গাটিতে যাতে তারা ধ্বংস করতে না পারে, নির্বাচন যাতে সুষ্ঠুভাবে হয়, দেশের জনগণ যাতে সুন্দরভাবে ভোট দিতে পারে, আমার মনে হয় সেজন্যই এটি করা হচ্ছে।

গাজীপুরে রেললাইন উপড়ানোর মূল পরিকল্পনাকারীদের শিগগির চিহ্নিত করে ধরা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

রেল মন্ত্রণালয় থেকে আপনার কাছে দুই হাজার ৭০০ রেল পুলিশ চাওয়া হয়েছে তাদের নিরাপত্তার জন্য। আর গতকালকের গাজীপুরের ঘটনার আপডেট কী- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘গতকাল যে ঘটনা ঘটেছে আপনারা দেখেছেন ওই জায়গাটি এমন এলাকা যেখানে জনমানুষ থাকে না, জনবসতিও নাই। একটা কুয়াশার রাত ছিল। যাই হোক যেভাবে হোক দুর্ঘটনাটা ঘটেছে। এজন্য দুটি তদন্ত টিম তাৎক্ষণিক দেওয়া হয়েছে। তারা কাজ করছে।’

তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন হাজার-হাজার কিলোমিটার রেললাইন এখানে সারা বাংলাদেশে। এরা টার্গেট করেছে যেখানে নাকি মানুষ থাকে না, সেই জায়গায় টার্গেট করেছে এবং টার্গেট করে তারা লোকচক্ষুর অন্তরালে এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে। রেল মন্ত্রণালয় থেকে যে চিঠিটি দিয়েছে আমাদের কাছে, আরও ফোর্স চেয়েছে। আমরা নিশ্চয়ই আলোচনা করে…আমাদের রেল পুলিশ বলে আমাদের একটা ডিপার্টমেন্টই রয়েছে, তারা আলোচনা করে সেখানে লোকবল বৃদ্ধির যা প্রয়োজন নিশ্চয়ই করা হবে।’

এ ঘটনায় কেউ এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছে কি না- জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মনে করি মাস্টারপ্ল্যানার (মূল পরিকল্পনাকারী) যারা, সবাইকেই আমরা আইডিন্টিফাই (চিহ্নিত) করবো। শিগগির আমরা ধরতে পারব বলে আমরা বিশ্বাস করি।’

তিনি বলেন, ‘রেললাইন উপড়ে ফেলা সত্যিই অত্যন্ত দুঃখজনক। যারা দেশকে ভালোবাসে তারা এ কাজটি করতে পারে না। ১৪ সনে আপনারা অগ্নিসন্ত্রাস দেখেছেন। তখনও রেললাইন উপড়ে ফেলা হয়েছিল। সেটাও দেখেছেন। জানমালের ক্ষতি তো হয়েছে, নিরীহ মানুষকেও হত্যা করা হয়েছে। সেসব দৃশ্য দেখেছেন। এবারও আমরা সেটি লক্ষ্য করছি। তারা শুধু গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করছে না, রেললাইনও উপড়ে ফেলেছে। এ ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন এবং সাতজন গুরুতর আহত অবস্থায় আছে।

আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘তারা মনে করে তারা একটি অসংবিধানিক ওয়েতে কীভাবে আবার ষড়যন্ত্র করে অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে আরেকটি সরকার পতন করা যায় কি না, সেটারই প্রচেষ্টায় তারা এগুলো করছে। এ দেশের জনগণ তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এটা তারা স্পষ্ট জেনেছে। সে জন্যই নির্বাচন না করে তারা ঘটনার অবতারণা ঘটাচ্ছে। আমরা মনে করি এদেশের জনগণ এসবগুলোর সঠিক জবাব দেবে ইনশাআল্লাহ।’

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘গাড়িতে যতগুলো অগ্নিসংযোগ হয়েছে সবগুলোকেই ধরা হয়েছে। এখন অগ্নিসংযোগের একটা নতুন মাত্রা তারা তৈরি শুরু করেছে। রাস্তার টোকাইদের তিন হাজার, দুই হাজার বা পাঁচ হাজার করে এরা কন্টাক্টে নিয়ে যায় এবং যারা নিয়ে যাচ্ছে টোকাইরা তাদের নাম আমাদের বলছেন। তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ইতোমধ্যে ব্যবস্থা শুরু হয়ে গেছে। বাসের অগ্নিসংযোগ যারাই করছেন হয় আমাদের জনতার কাছে ধরা পড়ছেন কিংবা আমাদের তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে।’

পাইকগাছায় গভীর রাতে আদালতে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করার ঘটনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এই জায়গায় কারও গাফিলতি আছে কি না, আমরা দেখছি এবং যারা করেছে আমরা নিশ্চয়ই আমাদের যে তথ্য, সে তথ্য অনুযায়ী আমরা ধরে ফেলতে পারবো।’

এসময় বিভিন্ন কার্যক্রমের জন্য তিনি পুলিশের প্রশংসা করেন। মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মনে করি আমাদের নির্বাচনের জন্য যে পুলিশ। সে জায়গায়ও তারা তৎপর রয়েছে। আমি মনে করি ১৫ বছর আগের যে পুলিশ, এ পুলিশের মধ্যে অনেক ডিফারেন্স। এরা দেশপ্রেমিক পুলিশ, এরা দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করছে। আমরা মনে করি এরা প্রফেশনাল এবং তারা অনেক দক্ষ। কাজেই এরা সুন্দরভাবে জানমাল রক্ষা করে নির্বাচনটি সুন্দরভাবে উঠিয়ে দিতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ঋণের দায়ে চার মৃত্যু, সেই ঋণ করেই ১২০০ মানুষকে খাওয়াল পরিবার

ইসির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের নির্দেশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর

প্রকাশের সময় : ০৮:২৪:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ১৮ ডিসেম্বর থেকে নির্বাচনী প্রচারণা ছাড়া কোনো সভা-সমাবেশ করা যাবে না। ইসির এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ জন্য পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল আল মামুনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট ইউনিটকে নির্দেশনা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা জানান তিনি।

নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণা ছাড়া অন্য যেকোনও মিছিল-সমাবেশ বন্ধ রাখার জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিদ্ধান্ত যথার্থ বলে মনে করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ‘আগামী ১৮ ডিসেম্বর থেকে নির্বাচনি প্রচারণা ছাড়া অন্য যেকোনও ধরনের সভা-সমাবেশ নয়’ নির্বাচন কমিশনের এমন নির্দেশনা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সবাই এখন নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত। এ সময় প্রতিটা দল তাদের প্রচার-প্রচারণা চালাবে। সেখানে কোনও দল নির্বাচন ছাড়া অন্য কোনও বিষয়ে সভা-সমাবেশ করলে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে। নির্বাচনি প্রচারণা ও কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি হতে পারে। সেজন্যই নির্বাচন কমিশন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নির্বাচন কমিশন অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যেটা মনে করেছে, আমি মনে করি সেটা যথার্থই মনে করেছে। সুষ্ঠু, সুন্দর ও স্বাভাবিকভাবে যাতে নির্বাচন হয়, সেজন্যই এমন নির্দেশনা দিয়েছে। সঠিক, সুন্দর ও নিরপেক্ষভাবে একটি নির্বাচন হতে দেওয়ার জন্য সিইসি যা যা নির্দেশনা দিয়েছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী সেগুলো পালন করবে।

ইসির এমন নিষেধাজ্ঞায় সংবিধান লঙ্ঘন হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইসির এ সিদ্ধান্তে সংবিধান লঙ্ঘন হয়েছে বলে মনে হয় না। নির্বাচন কমিশন তো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। তারা যখন একটি নির্দেশনা দিয়েছে, সংবিধান দেখেই দিয়েছে। এখানে সংবিধান লঙ্ঘন হওয়ার কিছু নেই, এখানে নির্বাচন কীভাবে হবে সেটা তিনি জানেন।

এর আগের নির্বাচনগুলোতে এমন হয়নি- দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আসাদুজ্জামান খান বলেন, এখন হয়তো তিনি (সিইসি) চিন্তা করছেন এ রকম হতে পারে, সেজন্য তিনি বলেছেন।

নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে, এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, মোটেই অবনতি হবে না। অবনতি ঘটানোর জন্য প্রচেষ্টা চলছে, সেটা আপনারা দেখছেন। জায়গায় জায়গায় বাস পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, জায়গায় জায়গায় রেললাইন উঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এগুলো স্বাভাবিক করার জন্য নির্বাচন কমিশন তাদের দৃষ্টিতে যেটা মনে হয়েছে, সেটা তারা ঘোষণা দিয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা বাস্তবায়নে কি আপনারা মাঠ পর্যায়ে নির্দেশনা দেবেন- এ বিষয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, নির্দেশনা পালন যাদের যাদের দায়িত্ব, আমার মনে হয় চিঠি অনুযায়ী তারা দায়িত্ব পালন করবে। তবে নির্বাচন কমিশন ভোটের প্রচার-প্রচারণা কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা দেয়নি ।

বিএনপি যাতে আগামী ১৮ ডিসেম্বরের পর সভা-সমাবেশ না করতে পারে সেজন্য কি এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এটি আপনি নির্বাচন কমিশনকে জিজ্ঞাসা করবেন। নির্বাচন কমিশন তো স্পষ্টই বুঝতে পারছে, তারা (বিএনপি) নির্বাচনে না এসে ধ্বংসের খেলায় নেমেছে। সে জায়গাটিতে যাতে তারা ধ্বংস করতে না পারে, নির্বাচন যাতে সুষ্ঠুভাবে হয়, দেশের জনগণ যাতে সুন্দরভাবে ভোট দিতে পারে, আমার মনে হয় সেজন্যই এটি করা হচ্ছে।

গাজীপুরে রেললাইন উপড়ানোর মূল পরিকল্পনাকারীদের শিগগির চিহ্নিত করে ধরা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

রেল মন্ত্রণালয় থেকে আপনার কাছে দুই হাজার ৭০০ রেল পুলিশ চাওয়া হয়েছে তাদের নিরাপত্তার জন্য। আর গতকালকের গাজীপুরের ঘটনার আপডেট কী- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘গতকাল যে ঘটনা ঘটেছে আপনারা দেখেছেন ওই জায়গাটি এমন এলাকা যেখানে জনমানুষ থাকে না, জনবসতিও নাই। একটা কুয়াশার রাত ছিল। যাই হোক যেভাবে হোক দুর্ঘটনাটা ঘটেছে। এজন্য দুটি তদন্ত টিম তাৎক্ষণিক দেওয়া হয়েছে। তারা কাজ করছে।’

তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন হাজার-হাজার কিলোমিটার রেললাইন এখানে সারা বাংলাদেশে। এরা টার্গেট করেছে যেখানে নাকি মানুষ থাকে না, সেই জায়গায় টার্গেট করেছে এবং টার্গেট করে তারা লোকচক্ষুর অন্তরালে এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে। রেল মন্ত্রণালয় থেকে যে চিঠিটি দিয়েছে আমাদের কাছে, আরও ফোর্স চেয়েছে। আমরা নিশ্চয়ই আলোচনা করে…আমাদের রেল পুলিশ বলে আমাদের একটা ডিপার্টমেন্টই রয়েছে, তারা আলোচনা করে সেখানে লোকবল বৃদ্ধির যা প্রয়োজন নিশ্চয়ই করা হবে।’

এ ঘটনায় কেউ এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছে কি না- জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মনে করি মাস্টারপ্ল্যানার (মূল পরিকল্পনাকারী) যারা, সবাইকেই আমরা আইডিন্টিফাই (চিহ্নিত) করবো। শিগগির আমরা ধরতে পারব বলে আমরা বিশ্বাস করি।’

তিনি বলেন, ‘রেললাইন উপড়ে ফেলা সত্যিই অত্যন্ত দুঃখজনক। যারা দেশকে ভালোবাসে তারা এ কাজটি করতে পারে না। ১৪ সনে আপনারা অগ্নিসন্ত্রাস দেখেছেন। তখনও রেললাইন উপড়ে ফেলা হয়েছিল। সেটাও দেখেছেন। জানমালের ক্ষতি তো হয়েছে, নিরীহ মানুষকেও হত্যা করা হয়েছে। সেসব দৃশ্য দেখেছেন। এবারও আমরা সেটি লক্ষ্য করছি। তারা শুধু গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করছে না, রেললাইনও উপড়ে ফেলেছে। এ ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন এবং সাতজন গুরুতর আহত অবস্থায় আছে।

আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘তারা মনে করে তারা একটি অসংবিধানিক ওয়েতে কীভাবে আবার ষড়যন্ত্র করে অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে আরেকটি সরকার পতন করা যায় কি না, সেটারই প্রচেষ্টায় তারা এগুলো করছে। এ দেশের জনগণ তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এটা তারা স্পষ্ট জেনেছে। সে জন্যই নির্বাচন না করে তারা ঘটনার অবতারণা ঘটাচ্ছে। আমরা মনে করি এদেশের জনগণ এসবগুলোর সঠিক জবাব দেবে ইনশাআল্লাহ।’

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘গাড়িতে যতগুলো অগ্নিসংযোগ হয়েছে সবগুলোকেই ধরা হয়েছে। এখন অগ্নিসংযোগের একটা নতুন মাত্রা তারা তৈরি শুরু করেছে। রাস্তার টোকাইদের তিন হাজার, দুই হাজার বা পাঁচ হাজার করে এরা কন্টাক্টে নিয়ে যায় এবং যারা নিয়ে যাচ্ছে টোকাইরা তাদের নাম আমাদের বলছেন। তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ইতোমধ্যে ব্যবস্থা শুরু হয়ে গেছে। বাসের অগ্নিসংযোগ যারাই করছেন হয় আমাদের জনতার কাছে ধরা পড়ছেন কিংবা আমাদের তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে।’

পাইকগাছায় গভীর রাতে আদালতে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করার ঘটনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এই জায়গায় কারও গাফিলতি আছে কি না, আমরা দেখছি এবং যারা করেছে আমরা নিশ্চয়ই আমাদের যে তথ্য, সে তথ্য অনুযায়ী আমরা ধরে ফেলতে পারবো।’

এসময় বিভিন্ন কার্যক্রমের জন্য তিনি পুলিশের প্রশংসা করেন। মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মনে করি আমাদের নির্বাচনের জন্য যে পুলিশ। সে জায়গায়ও তারা তৎপর রয়েছে। আমি মনে করি ১৫ বছর আগের যে পুলিশ, এ পুলিশের মধ্যে অনেক ডিফারেন্স। এরা দেশপ্রেমিক পুলিশ, এরা দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করছে। আমরা মনে করি এরা প্রফেশনাল এবং তারা অনেক দক্ষ। কাজেই এরা সুন্দরভাবে জানমাল রক্ষা করে নির্বাচনটি সুন্দরভাবে উঠিয়ে দিতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’