নিজস্ব প্রতিবেদক :
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নির্বাচন বিষয়ক অনুসন্ধানী দলের বৈঠক শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ জুলাই) বেলা ১১টায় ইসির সম্মেলন কক্ষে বৈঠকটি শুরু হয়েছে। বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ অন্যান্য কমিশনাররা উপস্থিত আছেন। অন্যদিনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিলের পাঁচ সদস্য উপস্থিত আছেন। বৈঠকে ইইউ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সংস্থাটির নির্বাচন পর্যবেক্ষণ বিশেষজ্ঞ চেলেরি রিকার্ডো।
ইসির সঙ্গে বৈঠকের আগে আজ সকালে রাজধানীর গুলশানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দূতাবাসে ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের সঙ্গে বৈঠক করে ইইউ প্রতিনিধি দল।
এর আগে গত রোববার (৯ জুলাই) ভোরে ঢাকায় আসে ইইউ প্রতিনিধি দল। নির্বাচন পর্যবেক্ষণ বিশেষজ্ঞ চেলেরি রিকার্ডোর নেতৃত্বে দুই সপ্তাহের সফরে বাংলাদেশের নির্বাচনী পরিবেশ মূল্যায়নের কাজ করবেন তারা। আগামী ২৩ জুলাই তাদের বাংলাদেশ সফর শেষ হবে। ইইউ প্রতিনিধি দলটি সরকার, রাজনৈতিক দলগুলো, নির্বাচন কমিশন, নিরাপত্তা কর্মকর্তা, সুশীল সমাজ এবং গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবে।
এর আগে, ঢাকা সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রাক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ দলের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল। সোমবার (১০ জুলাই) বিকেলে গুলশানে ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলির বাসবভনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও মানবাধিকার কমিশন, বাংলাদেশ পুলিশ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে প্রতিনিধি দলটি।
জানা গেছে, ইইউর প্রতিনিধি দলটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, রাজনৈতিক নেতা, নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও বৈঠকে বসবে।
নির্বাচন কমিশনের আমন্ত্রণে দুই সপ্তাহের জন্য বাংলাদেশ সফরে এসেছে ইইউ’র প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলটি। সফরের শুরুর দিন রোববার (৯ জুলাই) সকালে ঢাকায় ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াটলির গুলাশানের বাসায় শুরু হয় প্রথম কার্যক্রম। সেখানে ইইউর কয়েকটি সদস্য দেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে রুটিন বৈঠক করেন তারা। পরে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত এবং জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধির সঙ্গেও বৈঠক করেন তারা।
বৈঠকের পর ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ আবেদ আলী জানান, বৈঠকে বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চেয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এছাড়া আগের নির্বাচনগুলো সম্পর্কেও জানতে চেয়েছে তারা।
বাংলাদেশে দুই সপ্তাহ অবস্থান করবে ইইউ’র পর্যবেক্ষক দলটি। বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবেন তারা। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে ইইউ’র পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেলের কাছে তাদের মূল্যায়নের মতামত জমা দেবে বিশেষজ্ঞ দলটি।
তাদের মতামত ইতিবাচক হলে পরে আরও প্রতিনিধি দল পাঠাবে ইইউ। আর সবকিছু ঠিক থাকলে অর্থাৎ প্রতিনিধি দলের মূল্যায়নের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশে নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানো হবে কি না, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ইইউ প্রধান। পরে যে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ দল আসবে তাদের কর্মপরিধি, পরিকল্পনা, বাজেট, লজিস্টিকস ও নিরাপত্তা ইত্যাদি বিষয়াদি মূল্যায়ন করবে এ দলটি।
আগামী ১৫ জুলাই বিকেলে বিএনপি নেতাদের সঙ্গে দলটির বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এদিন আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গেও বৈঠকে বসবে সফররত দলটি। তাদের পর্যবেক্ষণের পরিপ্রেক্ষিতেই নির্ধারণ হবে বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ইইউ পর্যবেক্ষক পাঠাবে কি না।