আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে একটি প্রস্তাব বিপুল ভোটে অনুমোদন পেয়েছে। ইসরাইল এই ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করলেও জাতিসংঘ তা কার্যকর রাখতে অনঢ় রয়েছে। তবে ফলাফলে সন্তোষ প্রকাশ করেছে হামাস। বাংলাদেশসহ ১৪২টি দেশ ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকটের দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান বাস্তবায়নের রূপরেখা নির্ধারণ করেছে।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বিপুল সমর্থনে এই প্রস্তাব গৃহীত হয়।
ভোটে ১৪২টি দেশ পক্ষে ভোট দেয়, যা মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির পথে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এদিকে, প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রসহ ১০টি দেশ। আর ভোটদানে বিরত ছিল ১২ দেশ। সাধারণ পরিষদে প্রস্তাবটি উত্থাপন করেছিল ফ্রান্স ও সৌদি আরব।
সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই প্রস্তাবের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অধিকারের প্রতি সুস্পষ্ট সমর্থন দিয়েছে। তারা বলেছে, পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের দাবি এখন আরও জোরালো হলো।
ফিলিস্তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট হুসেইন আল-শেখ জাতিসংঘের এই সিদ্ধান্তকে ‘গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এটি দখলদারিত্ব শেষ করার এবং আমাদের স্বাধীন রাষ্ট্র অর্জনের পথে একটি মাইলফলক।
ঘোষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, হামাসকে অবশ্যই সব জিম্মি মুক্ত করতে হবে। ৭ অক্টোবর বেসামরিক লোকদের ওপর হামলার জন্য হামাসকে নিন্দা জানানো হচ্ছে। গাজায় যুদ্ধ বন্ধ ও স্থায়ী শান্তির লক্ষ্যে সমষ্টিগত পদক্ষেপ নিতে হবে। ঘোষণাটি ইতোমধ্যে আরব লীগ সমর্থন করেছে এবং জুলাই মাসে ১৭টি সদস্য রাষ্ট্র এতে স্বাক্ষর করেছে।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আগের দিনই ঘোষণা দেন, ফিলিস্তিন কখনোই স্বাধীন রাষ্ট্র হবে না। জাতিসংঘের ঘোষণাও প্রত্যাখ্যান করে তেল আবিব।
শুক্রবার ভোটের পর ইসরাইলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওরেন মারমোরস্টেইন বলেন, ঘোষণায় হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে উল্লেখ না করাই প্রমাণ করে যে সাধারণ পরিষদ বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন এক রাজনৈতিক সার্কাসে পরিণত হয়েছে।
যদিও, ইসরাইলের প্রত্যাখ্যান উপেক্ষা করে নিজেদের ঘোষণায় অনড় থাকার সিদ্ধান্ত জানায় জাতিসংঘ।
তবে, হামাস এই ঘোষণা অনুমোদনকে স্বাগত জানিয়েছে। তারা এটিকে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে। ভোটের ফলাফলের প্রেক্ষিতে ২২ সেপ্টেম্বর উচ্চপর্যায়ের সাধারণ পরিষদ বৈঠকে কিছু দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে পারে বলেও জানায় গণমাধ্যম।