আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর ওপর নিষেধাজ্ঞা আনতে যাচ্ছে পাকিস্তান সরকার।
সোমবার (১৫ জুলাইন) পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হলে পিটিআই’র অস্তিত্ব রাখা যাবে না। বিদেশি তহবিল মামলা, ৯ মে দাঙ্গা এবং সাইফার মামলার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রে পাস করা প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বিশ্বাস করি, পিটিআই’কে নিষিদ্ধ করার মতো যথেষ্ট বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ রয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা পিটিআই’র ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছি। আমরা বিশ্বাস করি, সংবিধানের ১৭ অনুচ্ছেদ সরকারকে রাজনৈতিক দলগুলো নিষিদ্ধ করার অধিকার দেয়।
বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে পাঠানো হবে বলেও জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী। ইমরান খানকে উদ্দেশ করে তিনি আরও বলেন, আপনি আপনার রাজনৈতিক স্বার্থের জন্য দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক নষ্ট করার চেষ্টা করেছিলেন এবং যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একটি প্রস্তাব পাস করতে গিয়েছিলেন।
এদিকে এ ঘটনাকে পিটিআই’র বিরুদ্ধে নতুন দমন-পীড়নের উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন। তারা লিখেছে, এ পদক্ষেপ কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দলকে জাতীয় পরিষদে একক বৃহত্তম দল হতে বাধা দেওয়ার প্রচেষ্টা বলে মনে হচ্ছে।
পাকিস্তানের সংবিধানের ১৭ (২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরিতে না থাকা পাকিস্তানের প্রত্যেক নাগরিকের একটি রাজনৈতিক দল গঠন করার বা সদস্য হওয়ার অধিকার থাকবে। তবে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব বা অখণ্ডতার স্বার্থে আইনের মাধ্যমে সেই দলের ওপর যুক্তিসঙ্গত বিধিনিষেধ আরোপ করা যাবে।
এতে আরও বলা হয়েছে, কোনো রাজনৈতিক দল পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব বা অখণ্ডতার জন্য ক্ষতিকর পদ্ধতিতে গঠিত হয়েছে বা এ ধরনের কাজ করছে, কেন্দ্রীয় সরকার এমন ঘোষণা দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে পাঠাতে হবে। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
ইময়ান খান ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। দুর্নীতির অভিযোগে তাকে ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। বিপত্তি সত্ত্বেও পিটিআইয়ের অনুগত প্রার্থীরা অন্য যেকোনো দলের চেয়ে বেশি আসনে জয়লাভ করে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহিদ হুসেন বলেছেন, সরকার পিটিআইকে নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপ নিয়েছে, কারণ তারা ‘আদালতের সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট’। তিনি আরো বলেন, ‘তারা এমন একটি রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করতে চলেছে, যার একটি বড় সমর্থন ভিত্তি রয়েছে। এ ধরনের সিদ্ধান্ত শেষ পর্যন্ত সরকারের জন্যই বিপর্যয়ের কারণ হবে।’
স্বাধীন আইন বিশেষজ্ঞ ওসামা মালিক হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের সামনে প্রমাণ করা খুব কঠিন হবে যে কয়েকজনের কাজের জন্য একটি সম্পূর্ণ দলকে নিষিদ্ধ করা উচিত।’