আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ইন্দোনেশিয়ার জনপ্রিয় পর্যটন দ্বীপ বালির কাছে যাত্রীবাহী একটি ফেরি ডুবির ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে চারজনের মৃত্যু হয়েছে এবং বহু মানুষ এখনো নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছে উদ্ধারকারী দল। ফেরি ডুবে যাওয়ার পর রাতভর উত্তাল সমুদ্রে নিখোঁজদের সন্ধানে উদ্ধারকারীরা তৎপরতা চালিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা যায় ।
দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, বিবিসি, রয়টার্স, সিএনএনসহ একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফেরিটি স্থানীয় সময় বুধবার রাত ১১টার কিছু আগে ইন্দোনেশিয়ার মূল দ্বীপ জাভার একটি বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে। এতে ৫৩ জন যাত্রী এবং ১২ জন ক্রু ছিল। বালির উদ্দেশে এই যাত্রাটি সাধারণত এক ঘণ্টারও কম সময় লাগে। তবে কর্মকর্তাদের ভাষ্যমতে, রাত ১১টা ২০ মিনিটে ক্রুরা একটি বিপদসংকেত পাঠায় এবং তার ১৫ মিনিট পর ফেরিটি ডুবে যায়।
ফেরি ডুবে যাওয়ার পর রাতভর উত্তাল সমুদ্রে নিখোঁজদের সন্ধানে তৎপরতা চালিয়েছেন দেশটির উদ্ধারকারীরা। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত পূর্ব জাভার বড় শহর সুরাবায়ার উদ্ধার সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, চার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাতভর তল্লাশির সময় ছয় ফুটেরও বেশি উঁচু ঢেউয়ের মধ্যে ১০টির বেশি নৌকা এবং স্থানীয় জেলেদের সহায়তায় পানিতে ভাসমান ২৩ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
উদ্ধারকাজে নিয়োজিত কর্মকর্তারা জানান, ফেরিটিতে ৫৩ জন যাত্রী, ১২ জন কর্মী এবং ২২টি যানবাহন ছিল, যার মধ্যে অধিকাংশই ট্রাক। এখন পর্যন্ত চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং ২৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। জীবিতদের অনেকেই ঢেউয়ের সঙ্গে দীর্ঘ সময় লড়াই করার পর অচেতন অবস্থায় পাওয়া গেছে।
বানিউওয়াঙ্গির পুলিশ প্রধান রামা সম্তামাপুত্র জানিয়েছেন, ভুক্তভোগীদের উদ্ধারের সময় সাগরে ঢেউয়ের উচ্চতা ছিল প্রায় দুই মিটার (৬.৫ ফুট)। উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছে ৯টি নৌযান, যার মধ্যে রয়েছে দুটি টাগ বোট ও দুটি রাবার বোট।
এদিকে নিখোঁজ যাত্রীদের তথ্য জানার জন্য আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই পূর্ব জাভার বানিউওয়াঙ্গি বন্দরে ভিড় করছেন পরিবারগুলো।
প্রসঙ্গত, ১৭ হাজারের বেশি দ্বীপ নিয়ে গঠিত ইন্দোনেশিয়ায় নৌপথই অন্যতম প্রধান যোগাযোগ মাধ্যম। তবে নিরাপত্তার ঘাটতিতে প্রায়ই সেখানে নৌ দুর্ঘটনা ঘটে।বুধবার যে জাহাজটি ডুবেছে, এটি গত এক মাসে বালির উপকূলে ডুবে যাওয়া দ্বিতীয় যাত্রীবাহী ফেরি।
এর আগে জুনের শুরুতে আরেকটি ফেরি দ্বীপটির একটি বন্দর ছেড়ে যাওয়ার পর উল্টে যায়। ওই ঘটনায় ফেরিতে থাকা ৮৯ জন সবাইকে উদ্ধার করা হয়েছিল।