নিজস্ব প্রতিবেদক :
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে ইটভাটার মাটিবাহী গাড়ির কারণে পাকা সড়কগুলো যেনো কাঁচা মাটির রাস্তায় পরিণত হয়েছে। সড়কের উপরে চলন্ত গাড়ি থেকে পড়ে থাকা মাটি বৃষ্টির পানিতে ভিজে একাকার হয়ে যায়।
এরপর বিভিন্ন যানবাহন চলাচলের সময় সেগুলো পিচ্ছিল মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। তখন সড়কে পায়ে হেঁটে চলাচল করা যায়না। দু’চাকার মোটরসাইকেল বা সাইকেলে চলাচল করতে গেলে ঘটে দুর্ঘটনা।
জানা যায়, বোয়ালমারী উপজেলার বিভিন্নস্থানে প্রায় ১৫টির মতো ইটভাটা রয়েছে। এসব ইটভাটার জন্য বিভিন্ন ফসলি জমি ও ডোবাসহ বিভিন্নস্থান থেকে অননুমোদিত উপায়ে মাটি কেটে সেগুলো বিভিন্ন ধরনের যানবাহনে করে ভাটায় নেওয়া হচ্ছে। আর এসব গাড়ি থেকে মাটি পড়ে জমে থাকছে সড়কের উপরে।
বোয়ালমারীর মাঝকান্দি-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কসহ প্রায় সব কয়েকটি ইউনিয়নেই চলছে এসব মাটিটানা গাড়ি। এতে সড়কের উপরিভাগে পাকা রাস্তায় মাটির স্তর পড়ে পিচঢালা সড়ক যেনো কাঁচামাটির সড়কে পরিণত হয়েছে। এরমধ্যে কয়েকদিন আগে সৈয়দপুর অংশে আঞ্চলিক মহাসড়কের উপর পড়ে থাকা মাটি অপসারণ করা হয়েছিল স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশে। তবে এখন আবার সেই আগের দশা। সেখানে তিনটি ইটভাটার জন্য অবৈধযানে করে প্রতিদিন টানা হচ্ছে মাটি।
বোয়ালমারীর সাতৈর এলাকার জহিরুল ইসলাম বলেন, সকালে মাঝকান্দি-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের সৈয়দপুরে তিনি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন। পরে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেয়ে এক্সরে করার পর দেখা যায় তার কোমরের হাড্ডি সরে গেছে। চিকিৎসক তাকে বিশ্রামে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
বোয়ালমারীর স্থানীয় সাংবাদিক মহব্বত চৌধুরী (৪০) বলেন, লাইসেন্সবিহীন ট্রলি, নসিমন, আর খেক্করে করে এসব মাটি বহন করছে চালকেরা। যাদের নিজেদেরও ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। খুবই দুঃখজনক হলো এগুলো দেখার জন্য কেউ নেই। বোয়ালমারীর এসব রাস্তায় মোটরসাইকেল চালকদের সাবধানে গাড়ি চালানোর অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন সাবধান, অন্তত ৬টি এক্সিডেন্টের খবর পেলাম।
মিজানুর রহমান বলেন, আমি নিজে একবার বাইক নিয়ে পড়ে গিয়েছিলাম। এদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে কবে? সড়কে মাটিবাহী অবৈধ গাড়ি চলাচলের পাশাপাশি সড়কের উপরে চৈতালি ফসল রেখে প্রতিবন্ধকতা তৈরির অভিযোগও করেন অনেকে।
হাসিবুল ইসলাম বলেন, রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় মনে হয় যেনো মানুষের উঠানের উপর দিয়ে যাচ্ছি। মশুরি, ধান, পাট, গম, সরিষা সহ নানা ফসল রাস্তার উপরে ফেলে রাখে। আর মাটি খেকোদের কথা কি বলবো? রাস্তাটাই তো ওদের!
এব্যাপারে বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোশারেফ হোসেন বলেন, এব্যাপারে খবর পেয়ে আমি নিজেই আজ কয়েকটিস্থানে অভিযান চালিয়েছি। সকলকে কঠেরভাবে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা না মানলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।