Dhaka বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইকুয়েডরের সবচেয়ে কম বয়সী প্রেসিডেন্ট হলেন নোবোয়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন ড্যানিয়েল নোবোয়া। রোববারের নির্বাচনে জয়ী হয়ে তিনি দক্ষিণ আমেরিকার দেশটিকে পুনর্গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কয়েক বছর ধরে ইকুয়েডর দুর্বল অর্থনীতি এবং ক্রমবর্ধমান অপরাধ ও সহিংসতার সঙ্গে লড়াই করছে। ৩৫ বছরের নোবোয়া দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী প্রেসিডেন্ট।

রোববার (১৫ অক্টোবর) ইকুয়েডরে দ্বিতীয় দফার ভোট গ্রহণ হয়। ৯০ শতাংশ ভোট গণনার পর গতকাল সোমবার ইকুয়েডরের নির্বাচন কর্তৃপক্ষ নোবোয়াকে বিজয়ী ঘোষণা করে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রথম দফার ভোটে এগিয়ে থাকা দুই প্রার্থী লুইসা ম্যাগদালেনা গঞ্জালেস ও ড্যানিয়েল নোবোয়া পরবর্তী দফার নির্বাচনে লড়েন।

নোবোয়া একজন কেন্দ্রবাদী। তাঁর বামপন্থী প্রতিদ্বন্দ্বী লুইসা গঞ্জালেজের চেয়ে চার শতাংশ পয়েন্টে এগিয়ে ছিলেন। গঞ্জালেজ এই নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিয়েছেন এবং বিজয়ী নোবোয়াকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

নোবোয়ার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী তাকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন যে, এটাই গণতন্ত্র।

নির্বাচনে জয়ের পর নোবোয়া বলেন, আগামীকাল আমরা নতুন ইকুয়েডরের জন্য কাজ শুরু করব। আমরা সহিংসতা, দুর্নীতি এবং ঘৃণা দ্বারা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত একটি দেশকে পুনর্গঠনের জন্য কাজ শুরু করব।

তিনি আরও বলেন, আগামীকাল থেকে ড্যানিয়েল নোবোয়া আপনার নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ শুরু করবেন।

তবে ইকুয়েডরের অবস্থা পরিবর্তনের জন্য নোবোয়ার সামনে ব্যাপক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। কারণ করোনভাইরাস মহামারিতে দেশটির অর্থনৈতিক সংকট গভীর হয়েছে। এছাড়া দেশটিতে খুন, ডাকাতি এবং কারাগারের দাঙ্গাসহ অপরাধ ব্যাপক হারে বেড়েছে।

এর আগে গত আগস্টে দেশটির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ফার্নান্দো ভিলাভিসেনসিও গুলিতে নিহত হন। তিনি দুর্নীতিবিরোধী হিসেবে পরিচিত। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে জানানো হয়, কুইটো শহরে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেন ফার্নান্দো। মিছিল শেষ হওয়ার পরপরই তাকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। এতে তার মৃত্যু হয়।

নোবোয়া এই বছরের ডিসেম্বর থেকে মে ২০২৫ পর্যন্ত ছোট মেয়াদে শাসন করার জন্য মাত্র ১৭ মাস সময় পাবেন। তিনি বলেন, ইকুয়েডরে অগ্রগতির বৈশ্বিক উদাহরণ হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত উপাদান রয়েছে। তিনি ২০২৫ সালে আবারও নির্বাচনে প্রতিযোগিতা করবেন।

নোবোয়ার বাবা আলভারোর একাধিকবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ব্যর্থ হয়েছেন। ছেলে পরিবারের সেই উচ্চাকাঙ্খা পূরণ করলেন।

রোববারের নির্বাচনে ৯০ শতাংশ ভোট গণনার পর দেখা যায়, নোবোয়া ৫২ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। অপরদিকে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী লুইসা গঞ্জালেস পেয়েছেন ৪৮ শতাংশ। গঞ্জালেজ নোবোয়াকে তার জয়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ড্যানিয়েল নোবোয়া, গভীর অভিনন্দন, কারণ এটিই গণতন্ত্র।

নির্বাচনী প্রচারণার সময় নানা সহিংসতা দেখেছে দেশটি। আগস্টে প্রথম দফার ভোটের কয়েক দিন আগে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ফার্নান্দো ভিলাভিসেনসিও খুন হয়েছিলেন। ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ইকুয়েডরে হত্যার হার চার গুণ বেড়েছে এবং জনমত জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে, ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে ভোটারদের প্রধান উদ্বেগ ছিল নিরাপত্তার বিষয়টি।

সশস্ত্র সৈন্যদের পাশে নিয়ে নোবোয়া মঞ্চে এসে বলেন, আগামীকাল থেকে আমরা একটি নতুন ইকুয়েডরের জন্য কাজ শুরু করব। সহিংসতা, দুর্নীতি এবং ঘৃণায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশটি পুনর্গঠন করব।’

বিশ্লেষকরা বলছেন, ড্যানিয়েল নোবোয়ার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা কম। সীমিত সময়ে ইকুয়েডরের নিরাপত্তা সমস্যা এবং খারাপ অর্থনীতির সঙ্গে মোকাবেলা করার ক্ষেত্রে তাঁকে কঠিন লড়াইয়ের মুখোমুখি হতে হবে। যদিও ইকুয়েডরে প্রেসিডেন্টের মেয়াদ সাধারণত চার বছর দীর্ঘ হয়। তবে এটা ছিল বিদায়ী প্রেসিডেন্ট গুইলারমো লাসোর পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার পর একটি প্রাথমিক নির্বাচন।

নোবোয়া ল্যাসোর শুরু হওয়া মেয়াদের জন্য কাজ করবেন। যা ২০২৫ সালের মে মাসে শেষ হবে। তারপর তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে দাঁড়াতে পারবেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নেপালে আটকে পড়া বাংলাদেশিরা নিরাপদে আছেন : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

ইকুয়েডরের সবচেয়ে কম বয়সী প্রেসিডেন্ট হলেন নোবোয়া

প্রকাশের সময় : ০৭:৩২:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন ড্যানিয়েল নোবোয়া। রোববারের নির্বাচনে জয়ী হয়ে তিনি দক্ষিণ আমেরিকার দেশটিকে পুনর্গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কয়েক বছর ধরে ইকুয়েডর দুর্বল অর্থনীতি এবং ক্রমবর্ধমান অপরাধ ও সহিংসতার সঙ্গে লড়াই করছে। ৩৫ বছরের নোবোয়া দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী প্রেসিডেন্ট।

রোববার (১৫ অক্টোবর) ইকুয়েডরে দ্বিতীয় দফার ভোট গ্রহণ হয়। ৯০ শতাংশ ভোট গণনার পর গতকাল সোমবার ইকুয়েডরের নির্বাচন কর্তৃপক্ষ নোবোয়াকে বিজয়ী ঘোষণা করে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রথম দফার ভোটে এগিয়ে থাকা দুই প্রার্থী লুইসা ম্যাগদালেনা গঞ্জালেস ও ড্যানিয়েল নোবোয়া পরবর্তী দফার নির্বাচনে লড়েন।

নোবোয়া একজন কেন্দ্রবাদী। তাঁর বামপন্থী প্রতিদ্বন্দ্বী লুইসা গঞ্জালেজের চেয়ে চার শতাংশ পয়েন্টে এগিয়ে ছিলেন। গঞ্জালেজ এই নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিয়েছেন এবং বিজয়ী নোবোয়াকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

নোবোয়ার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী তাকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন যে, এটাই গণতন্ত্র।

নির্বাচনে জয়ের পর নোবোয়া বলেন, আগামীকাল আমরা নতুন ইকুয়েডরের জন্য কাজ শুরু করব। আমরা সহিংসতা, দুর্নীতি এবং ঘৃণা দ্বারা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত একটি দেশকে পুনর্গঠনের জন্য কাজ শুরু করব।

তিনি আরও বলেন, আগামীকাল থেকে ড্যানিয়েল নোবোয়া আপনার নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ শুরু করবেন।

তবে ইকুয়েডরের অবস্থা পরিবর্তনের জন্য নোবোয়ার সামনে ব্যাপক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। কারণ করোনভাইরাস মহামারিতে দেশটির অর্থনৈতিক সংকট গভীর হয়েছে। এছাড়া দেশটিতে খুন, ডাকাতি এবং কারাগারের দাঙ্গাসহ অপরাধ ব্যাপক হারে বেড়েছে।

এর আগে গত আগস্টে দেশটির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ফার্নান্দো ভিলাভিসেনসিও গুলিতে নিহত হন। তিনি দুর্নীতিবিরোধী হিসেবে পরিচিত। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে জানানো হয়, কুইটো শহরে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেন ফার্নান্দো। মিছিল শেষ হওয়ার পরপরই তাকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। এতে তার মৃত্যু হয়।

নোবোয়া এই বছরের ডিসেম্বর থেকে মে ২০২৫ পর্যন্ত ছোট মেয়াদে শাসন করার জন্য মাত্র ১৭ মাস সময় পাবেন। তিনি বলেন, ইকুয়েডরে অগ্রগতির বৈশ্বিক উদাহরণ হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত উপাদান রয়েছে। তিনি ২০২৫ সালে আবারও নির্বাচনে প্রতিযোগিতা করবেন।

নোবোয়ার বাবা আলভারোর একাধিকবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ব্যর্থ হয়েছেন। ছেলে পরিবারের সেই উচ্চাকাঙ্খা পূরণ করলেন।

রোববারের নির্বাচনে ৯০ শতাংশ ভোট গণনার পর দেখা যায়, নোবোয়া ৫২ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। অপরদিকে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী লুইসা গঞ্জালেস পেয়েছেন ৪৮ শতাংশ। গঞ্জালেজ নোবোয়াকে তার জয়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ড্যানিয়েল নোবোয়া, গভীর অভিনন্দন, কারণ এটিই গণতন্ত্র।

নির্বাচনী প্রচারণার সময় নানা সহিংসতা দেখেছে দেশটি। আগস্টে প্রথম দফার ভোটের কয়েক দিন আগে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ফার্নান্দো ভিলাভিসেনসিও খুন হয়েছিলেন। ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ইকুয়েডরে হত্যার হার চার গুণ বেড়েছে এবং জনমত জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে, ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে ভোটারদের প্রধান উদ্বেগ ছিল নিরাপত্তার বিষয়টি।

সশস্ত্র সৈন্যদের পাশে নিয়ে নোবোয়া মঞ্চে এসে বলেন, আগামীকাল থেকে আমরা একটি নতুন ইকুয়েডরের জন্য কাজ শুরু করব। সহিংসতা, দুর্নীতি এবং ঘৃণায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশটি পুনর্গঠন করব।’

বিশ্লেষকরা বলছেন, ড্যানিয়েল নোবোয়ার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা কম। সীমিত সময়ে ইকুয়েডরের নিরাপত্তা সমস্যা এবং খারাপ অর্থনীতির সঙ্গে মোকাবেলা করার ক্ষেত্রে তাঁকে কঠিন লড়াইয়ের মুখোমুখি হতে হবে। যদিও ইকুয়েডরে প্রেসিডেন্টের মেয়াদ সাধারণত চার বছর দীর্ঘ হয়। তবে এটা ছিল বিদায়ী প্রেসিডেন্ট গুইলারমো লাসোর পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার পর একটি প্রাথমিক নির্বাচন।

নোবোয়া ল্যাসোর শুরু হওয়া মেয়াদের জন্য কাজ করবেন। যা ২০২৫ সালের মে মাসে শেষ হবে। তারপর তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে দাঁড়াতে পারবেন।