Dhaka বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫, ৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইউক্রেনে রাশিয়ার ভয়াবহ হামলায় নিহত ২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ইউক্রেনে দোনেৎস্ক অঞ্চলের ডোব্রোপিলিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে রাশিয়ায়। এতে বেশ কয়েকটি আবাসিক ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। এই হামলায় কমপক্ষে ২৫ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা। আহত হয়েছেন আরো অনেকে। হতাহতদের মধ্যে শিশুও রয়েছে। এছাড়া হামলায় ঘরবাড়ি ও স্থাপনাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

শনিবার (৮ মার্চ) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, রাশিয়ার সর্বশেষ হামলায় ইউক্রেনে কমপক্ষে ২৫ জন নিহত হয়েছেন বলে ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। গত ৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই সংঘাত চলছে এবং নানা প্রচেষ্টার পরও সংঘাত প্রশমিত হওয়ার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

স্থানীয় কর্মকর্তারা শনিবার জানিয়েছেন, দোনেৎস্ক অঞ্চলে একটি হামলায় কমপক্ষে ১১ জন নিহত এবং আরও ৪০ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ছয় শিশুও রয়েছে। খারকিভ এবং ওডেসাসহ অন্যান্য অঞ্চলে বাড়িঘর এবং অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সাম্প্রতিক দিনগুলোতে পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে রাশিয়ার হামলা বেশ তীব্রতর হয়েছে, কারণ কিয়েভকে সামরিক সহায়তা এবং গোয়েন্দা তথ্য দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গত সপ্তাহে ওভাল অফিসে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের পর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ওয়াশিংটন।
রাশিয়ার সর্বশেষ হামলার পর পোলিশ প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া এক পোস্টে বলেছেন: যখন কেউ বর্বরদের তুষ্ট করে তখন এটিই ঘটে। আরও বোমা, আরও আগ্রাসন, আরও হতাহত।

বিবিসি বলছে, শুক্রবার গভীর রাতে দোনেৎস্ক অঞ্চলের ডোব্রোপিলিয়া শহরে সবচেয়ে মারাত্মক হামলা চালানো হয়। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আটটি আবাসিক ভবন এবং একটি শপিং সেন্টারে আঘাত করলে কমপক্ষে ১১ জন নিহত হয়।

জরুরি পরিষেবা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পর রাশিয়া “উদ্ধারকারীদের লক্ষ্য করে ইচ্ছাকৃতভাবে” আরেকটি হামলা চালায় বলে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি একটি টেলিগ্রাম পোস্টে দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, “এই ধরনের হামলা এটিই দেখায় যে— রাশিয়ার লক্ষ্য অপরিবর্তিত।”

স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শুক্রবার এবং শনিবার এই অঞ্চলে অন্যান্য হামলায় আরও নয়জন নিহত এবং ১৩ জন আহত হয়েছেন।

এছাড়া শনিবার ভোরে খারকিভ অঞ্চলের বোহোদুখিভে একটি কোম্পানিতে ড্রোন হামলায় তিনজন নিহত এবং আরও সাতজন আহত হয়েছেনন বলে আঞ্চলিক প্রধান ওলেহ সিনেহুবভ জানিয়েছেন।

শুক্রবার আরেকটি ড্রোন হামলায় ওডেসার বেসামরিক ও জ্বালানি অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে আঞ্চলিক প্রধান জানিয়েছেন। ডিটেক জ্বালানি কোম্পানি জানিয়েছে, তিন সপ্তাহের মধ্যে এই অঞ্চলের জ্বালানি ব্যবস্থার ওপর এটি সপ্তম আক্রমণ।

এদিকে ইউক্রেন এরমধ্যেই রাশিয়াকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাশিয়ার সামরিক বাহিনী রাতের আঁধারে ৩১টি ইউক্রেনীয় ড্রোন আটক করেছে।

এর আগে গত শুক্রবার ট্রাম্প বলেছিলেন, দুই দেশের মধ্যে শান্তি স্থাপনের প্রচেষ্টায় রাশিয়ার চেয়ে “সত্যি বলতে, ইউক্রেনের সাথে কাজ করা তার কাছে বেশি কঠিন”। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্র “রাশিয়ার সাখে খুব (কাজ) ভালো করছে” এবং কিয়েভের চেয়ে “মস্কোর সাথে কাজ করা সহজ হতে পারে”।

এর কয়েক ঘণ্টা আগে ট্রাম্প বলেছিলেন, ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধবিরতি না হওয়া পর্যন্ত তিনি রাশিয়ার ওপর বৃহৎ আকারের নিষেধাজ্ঞা এবং শুল্ক আরোপের বিষয়টি “জোরালোভাবে বিবেচনা” করছেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ইউক্রেনে রাশিয়ার ভয়াবহ হামলায় নিহত ২৫

প্রকাশের সময় : ১২:২৮:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ মার্চ ২০২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ইউক্রেনে দোনেৎস্ক অঞ্চলের ডোব্রোপিলিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে রাশিয়ায়। এতে বেশ কয়েকটি আবাসিক ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। এই হামলায় কমপক্ষে ২৫ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা। আহত হয়েছেন আরো অনেকে। হতাহতদের মধ্যে শিশুও রয়েছে। এছাড়া হামলায় ঘরবাড়ি ও স্থাপনাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

শনিবার (৮ মার্চ) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, রাশিয়ার সর্বশেষ হামলায় ইউক্রেনে কমপক্ষে ২৫ জন নিহত হয়েছেন বলে ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। গত ৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই সংঘাত চলছে এবং নানা প্রচেষ্টার পরও সংঘাত প্রশমিত হওয়ার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

স্থানীয় কর্মকর্তারা শনিবার জানিয়েছেন, দোনেৎস্ক অঞ্চলে একটি হামলায় কমপক্ষে ১১ জন নিহত এবং আরও ৪০ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ছয় শিশুও রয়েছে। খারকিভ এবং ওডেসাসহ অন্যান্য অঞ্চলে বাড়িঘর এবং অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সাম্প্রতিক দিনগুলোতে পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে রাশিয়ার হামলা বেশ তীব্রতর হয়েছে, কারণ কিয়েভকে সামরিক সহায়তা এবং গোয়েন্দা তথ্য দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গত সপ্তাহে ওভাল অফিসে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের পর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ওয়াশিংটন।
রাশিয়ার সর্বশেষ হামলার পর পোলিশ প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া এক পোস্টে বলেছেন: যখন কেউ বর্বরদের তুষ্ট করে তখন এটিই ঘটে। আরও বোমা, আরও আগ্রাসন, আরও হতাহত।

বিবিসি বলছে, শুক্রবার গভীর রাতে দোনেৎস্ক অঞ্চলের ডোব্রোপিলিয়া শহরে সবচেয়ে মারাত্মক হামলা চালানো হয়। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আটটি আবাসিক ভবন এবং একটি শপিং সেন্টারে আঘাত করলে কমপক্ষে ১১ জন নিহত হয়।

জরুরি পরিষেবা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পর রাশিয়া “উদ্ধারকারীদের লক্ষ্য করে ইচ্ছাকৃতভাবে” আরেকটি হামলা চালায় বলে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি একটি টেলিগ্রাম পোস্টে দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, “এই ধরনের হামলা এটিই দেখায় যে— রাশিয়ার লক্ষ্য অপরিবর্তিত।”

স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শুক্রবার এবং শনিবার এই অঞ্চলে অন্যান্য হামলায় আরও নয়জন নিহত এবং ১৩ জন আহত হয়েছেন।

এছাড়া শনিবার ভোরে খারকিভ অঞ্চলের বোহোদুখিভে একটি কোম্পানিতে ড্রোন হামলায় তিনজন নিহত এবং আরও সাতজন আহত হয়েছেনন বলে আঞ্চলিক প্রধান ওলেহ সিনেহুবভ জানিয়েছেন।

শুক্রবার আরেকটি ড্রোন হামলায় ওডেসার বেসামরিক ও জ্বালানি অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে আঞ্চলিক প্রধান জানিয়েছেন। ডিটেক জ্বালানি কোম্পানি জানিয়েছে, তিন সপ্তাহের মধ্যে এই অঞ্চলের জ্বালানি ব্যবস্থার ওপর এটি সপ্তম আক্রমণ।

এদিকে ইউক্রেন এরমধ্যেই রাশিয়াকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাশিয়ার সামরিক বাহিনী রাতের আঁধারে ৩১টি ইউক্রেনীয় ড্রোন আটক করেছে।

এর আগে গত শুক্রবার ট্রাম্প বলেছিলেন, দুই দেশের মধ্যে শান্তি স্থাপনের প্রচেষ্টায় রাশিয়ার চেয়ে “সত্যি বলতে, ইউক্রেনের সাথে কাজ করা তার কাছে বেশি কঠিন”। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্র “রাশিয়ার সাখে খুব (কাজ) ভালো করছে” এবং কিয়েভের চেয়ে “মস্কোর সাথে কাজ করা সহজ হতে পারে”।

এর কয়েক ঘণ্টা আগে ট্রাম্প বলেছিলেন, ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধবিরতি না হওয়া পর্যন্ত তিনি রাশিয়ার ওপর বৃহৎ আকারের নিষেধাজ্ঞা এবং শুল্ক আরোপের বিষয়টি “জোরালোভাবে বিবেচনা” করছেন।