স্পোর্টস ডেস্ক :
চলমান বিশ্বকাপে নাজুক অবস্থা বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের। ইতোমধ্যেই বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের দৌড় থেকে ছিটকে গেছে ইংল্যান্ড। বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের লড়াই কেবল পয়েন্ট টেবিলের তলানি থেকে উপরে ওঠার। সেখানেও ব্যর্থ তারা। অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৩৩ রানে হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিলো জস বাটলারের দল। অন্যদিকে, ইংলিশদের হারিয়ে সেমিফাইনালের আরও কাছে অজিরা।
চলতি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড ব্যাটিংয়ে ভুগছে। ব্যাট হাতে তাদের এতটাই খারাপ অবস্থা যে, অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হওয়ার আগের পাঁচ ম্যাচে সর্বোচ্চ রান ছিল ২২৭, তিনটিতে দুইশও হয়নি। তবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে কিছুটা লড়াই করলো তাদের ব্যাটাররা। কিন্তু হারের বৃত্ত থেকে বের হতে পারলো না বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। অস্ট্রেলিয়া তাদের হারিয়ে নিউজিল্যান্ডকে দুই পযেন্টে পেছনে ফেললো। তাতে সেমিফাইনালে তাদের খেলার স্বপ্ন আরও উজ্জ্বল হলো।
শনিবার (৪ নভেম্বর) আহমেদাবাদ নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে টস জিতে অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় ইংল্যান্ড। প্রথমে ব্যাট করে মার্নাস লেবুশানের ফিফটিতে ২৮৬ রানে অলআউট হয় অজিরা।
২৮৭ রানের লক্ষ্যে ইংল্যান্ডের হয়ে ইনিংস শুরু করতে আসেন জনি বেয়ারস্টো ও ডেভিড মালান। রান তাড়া করতে নেমে ইনিংসের প্রথম বলেই আউট হন বেয়ারস্টো। দ্বিতীয় উইকেটে ব্যাট করতে নামা রুট ও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ব্যাক্তিগত ১৩ রানে সাজঘরে ফেরেন এই ব্যাটার। দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পরা ইংলিশদের শুরুর ধাক্কা সামাল দেন তৃতীয় উইকেট জুটিতে মালান ও বেন স্টোকস। দুজনে গড়েন ৮৪ রানের জুটি।
এর মাঝে অর্ধশত রান পূরন করেন মালান। তবে ফিফটির পর ইনিংস বড় করতে পারেননি এই ব্যাটার। দলীয় ১০৩ রানে ৫০ করেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি। এদিকে চতুর্থ উইকেটে ব্যাট করতে নামা বাটলার ব্যর্থতার বৃত্তে আজও বন্ধী। ব্যাক্তিগত ১ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। তবে পঞ্চম উইকেটে স্টোকস-মঈন আলীর ৬৩ রানের জুটিতে ম্যাচে ফেরে ইংল্যান্ড। এর মাঝে চলতি বিশ্বকাপে প্রথম ফিফটির দেখা পান বেন স্টোকস।
তবে ফিফটির পর ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনি। ম্যাচ যখন ইংল্যান্ড হাতের মুঠোয় নেয়ার অপেক্ষায়, এমন সময় ৬৪ রানে বিদায় নেন স্টোকস। মাঝে মঈন আলীর ৪২ এবং ক্রিস ওকস শেষ দিকে ৩২ করে আশা জাগালেও লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত ১১ বল হাতে রেখেই ২৫৩ রানে গুটিয়ে যায় ইংলিশরা।
টসে জিতে ইংল্যান্ডকে ২৮৭ রানের লক্ষ্য দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। শনিবার (৪ নভেম্বর) আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে হেরে ব্যাটিংয়ে নামে অজিরা। ৩ বল বাকি থাকতেই ২৮৬ রানে অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া। দলের পক্ষে লাবুশানে করেন সর্বোচ্চ ৭১ রান। ইংলিশদের পক্ষে ৫৪ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন ক্রিস ওকস।
ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় অজিরা। দলীয় ১১ রানেই ক্রিস ওকসের বলে ফিরে যান ওপেনার ট্রাভিস হেড। ফেরার আগে তিনি করেন ১০ বলে ১১ রান। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা আরেক ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারও ফিরে যান দ্রুতই। ৩৮ রানেই অস্ট্রেলিয়া হারায় দ্বিতীয় উইকেট। ওকসের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফেরার আগে তিনি করেন মাত্র ১৫ রান। এরপর স্মিথ-লাবুশানে জুটি অজিদের হাল ধরেন। তবে ৭৫ রানের এই জুটি ভাঙ্গেন ইংলিশ লেগস্পিনার আদিল রশিদ। তার বলে মঈন আলীর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে স্মিথ করেন ৪৪ রান। স্মিথের পর দ্রুতই জশ ইংলিশকে তুলে নেন রশিদ। এবার মঈন আলী নেন ক্যাচ। ১১৭ রানেই অজিরা ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে।
এবার ক্যামেরন গ্রিনকে নিয়ে সেই চাপ সামাল দেয়ার চেষ্ঠা করেন লাবুশানে। তুলে নেন ব্যক্তিগত অর্ধশতকও। তবে ৭১ রানে মার্ক উডের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন লাবুশানে। এই ইনিংস খেলার জন্য তিনি ৮৩ টি বল মোকাবিলা করেন। ইনিংসে তিনি সাতটি চার মারেন। তার বিদায়ে ১৭৮ রানেই অস্ট্রেলিয়া হারায় ৫ উইকেট।
এবার গ্রিন ও স্টয়নিস ধরেন হাল। এই জুটিতে ওঠে ৪৫ রান। তবে ব্যক্তিগত অর্ধশতক থেকে ৩ রান দূরে থাকতে উইলির বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন গ্রিন। তার বিদায়ে ভাঙ্গে এই জুটিও। ৫২ বলে ৪৭ রানের ইনিংসটি খেলার পথে তিনি চার মারেন পাঁচটি। দলীয় ২৪১ রানে ফিরে যান আরেক সেট ব্যাটার স্টয়নিস। তিনি ৩২ বলে তিন চার ও দুই ছয়ে করেন ৩৫ রান। অধিনায়ক কামিন্সের দ্রুত বিদায়ে আড়াইশোর আগেই (২৪৭ রান) ৭ উইকেট হারায় অজিরা।