Dhaka রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইংল্যান্ডকে গুঁড়িয়ে অ্যাশেজ অস্ট্রেলিয়ার

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০১:২৭:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ২০৫ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

অ্যাডিলেডে পঞ্চম দিনের সকালে একবার মনে হচ্ছিল হয়তো আরেকটা অসম্ভব গল্পের জন্ম দিতে চলেছে ইংল্যান্ড। ৪৩৫ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শেষ পর্যন্ত লড়াইটা তারা করেছিল সাহস নিয়েই। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া পুরো সময়টাই ছিল ঠান্ডা মাথায়। শেষ পর্যন্ত ৮২ রানের জয় নিশ্চিত করে অ্যাশেজ ধরে রাখল স্বাগতিকরা, সিরিজে এগিয়ে গেল অপ্রতিরোধ্য ৩-০ ব্যবধানে।

এই নিয়ে টানা পাঁচ সিরিজ ধরে অ্যাশেজ ধরে রাখল অস্ট্রেলিয়া। এর মধ্যে তিনটি তারা জিতেছে, দুটি হয়েছে ড্র। ইংল্যান্ড সবশেষ অ্যাশেজ জিতেছে ঘরের মাঠে ২০১৫ সালে।

৩৫২ রানে থেমে যায় ইংল্যান্ডের ইনিংস। জেমি স্মিথ, উইল জ্যাকস ও ব্রাইডন কার্সের প্রতিরোধে অস্ট্রেলিয়া কিছুটা হলেও চাপে পড়েছিল। তবে প্যাট কামিন্স ও নাথান লায়নের সঙ্গে মিচেল স্টার্কও তিন উইকেট নিয়ে নিশ্চিত করেন এই ম্যাচ আর হাতছাড়া হচ্ছে না। ঘরের মাঠে টানা চতুর্থবার অ্যাশেজ জয়ের স্বাদ পেল অস্ট্রেলিয়া।

দিনের শুরুতে ইংল্যান্ড ছিল ২০৭/৬। ক্যামেরন গ্রিনের টানটান স্পেলে শুরুতে অস্বস্তিতে পড়ে সপ্তম উইকেট জুটি। কিন্তু স্মিথ হঠাৎ করেই আক্রমণে যান, লায়নকে স্লগ-সুইপ, গ্রিনকে টেনে মারেন ছক্কা। বৃষ্টির সংক্ষিপ্ত বিরতির পর আবার খেলা শুরু হলে ইংল্যান্ড ২৫০ পার করে। নতুন বল আসার আগ মুহূর্তে লাবুশেন ও ট্রাভিস হেডের ওভার থেকেও বাউন্ডারি আদায় করে নেন স্মিথ, যদিও তখন ডান হ্যামস্ট্রিং চেপে ধরে মাঠ ছাড়েন লায়ন।॥

দ্বিতীয় নতুন বল হাতে নিয়েই কামিন্সকে টানা দুই চার মেরে ফিফটি পূর্ণ করেন স্মিথ। স্টার্ককেও দু’বার সীমানা ছাড়া করেন। কিন্তু বড় শট খেলতে গিয়ে কামিন্সের হাতেই ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৬০ রানে। প্রায় ৩০ ওভার স্থায়ী ৯০ রানের জুটি ভাঙে সেখানেই। এরপরও ইংল্যান্ড সহজে হার মানেনি। জ্যাকস ও কার্স ধীরে ধীরে ব্যবধান নামিয়ে আনেন। লাঞ্চে স্কোর দাঁড়ায় ৩০৯/৭, জয়ের জন্য দরকার তখনও ১২৬ রান।

লাঞ্চের পর কার্স এলবিডব্লিউ রিভিউ জিতে ফিরে পান জীবন। হেড ও বোল্যান্ডের বলে আক্রমণ চালিয়ে জ্যাকসের সঙ্গে পঞ্চাশের জুটি গড়েন তিনি। এক সময় মনে হচ্ছিল, ম্যাচটা সত্যিই অন্যদিকে মোড় নিতে পারে। কিন্তু ঠিক তখনই স্টার্ক ফিরে এসে ছোবল বসান। জ্যাকসের ব্যাট ছুঁয়ে বল উঠে যায়, লাবুশেন এক হাতে অসাধারণ ক্যাচ ধরেন উইকেটকিপারের সামনে।

স্টার্ক এরপর জোফ্রা আর্চারকে ফিরিয়ে তিন উইকেট পূর্ণ করেন। শেষ পর্যন্ত বোল্যান্ড জশ টাংকে আউট করলে ম্যাচের ইতি টানে অস্ট্রেলিয়া। এই জয়ের ভিতটা অবশ্য গড়া হয়েছিল আগেই। প্রথম ইনিংসে ৯৪/৪ থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে অস্ট্রেলিয়াকে ৩৭১ পর্যন্ত টেনে নিয়েছিলেন অ্যালেক্স ক্যারি (১০৬), উসমান খাজা (৮২) ও স্টার্ক (৫৪)। জবাবে ইংল্যান্ড ২৮৬ করলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ট্রাভিস হেডের ১৭০ ও ক্যারির ৭২ রানে অস্ট্রেলিয়া তুলে দেয় ৪৩৫ রানের চ্যালেঞ্জ।

জ্যাক ক্রলির ৮৫ রানের ইনিংস সত্ত্বেও বড় জুটি গড়তে না পারায় শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ডের স্বপ্নটা রয়ে যায় স্বপ্নই। শেষ দিনে লড়াই ছিল, নাটক ছিল, কিন্তু ট্রফিটা যে অস্ট্রেলিয়ার কাছেই থাকবে, সেটা আর বদলায়নি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ইংল্যান্ডকে গুঁড়িয়ে অ্যাশেজ অস্ট্রেলিয়ার

প্রকাশের সময় : ০১:২৭:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫

স্পোর্টস ডেস্ক : 

অ্যাডিলেডে পঞ্চম দিনের সকালে একবার মনে হচ্ছিল হয়তো আরেকটা অসম্ভব গল্পের জন্ম দিতে চলেছে ইংল্যান্ড। ৪৩৫ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শেষ পর্যন্ত লড়াইটা তারা করেছিল সাহস নিয়েই। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া পুরো সময়টাই ছিল ঠান্ডা মাথায়। শেষ পর্যন্ত ৮২ রানের জয় নিশ্চিত করে অ্যাশেজ ধরে রাখল স্বাগতিকরা, সিরিজে এগিয়ে গেল অপ্রতিরোধ্য ৩-০ ব্যবধানে।

এই নিয়ে টানা পাঁচ সিরিজ ধরে অ্যাশেজ ধরে রাখল অস্ট্রেলিয়া। এর মধ্যে তিনটি তারা জিতেছে, দুটি হয়েছে ড্র। ইংল্যান্ড সবশেষ অ্যাশেজ জিতেছে ঘরের মাঠে ২০১৫ সালে।

৩৫২ রানে থেমে যায় ইংল্যান্ডের ইনিংস। জেমি স্মিথ, উইল জ্যাকস ও ব্রাইডন কার্সের প্রতিরোধে অস্ট্রেলিয়া কিছুটা হলেও চাপে পড়েছিল। তবে প্যাট কামিন্স ও নাথান লায়নের সঙ্গে মিচেল স্টার্কও তিন উইকেট নিয়ে নিশ্চিত করেন এই ম্যাচ আর হাতছাড়া হচ্ছে না। ঘরের মাঠে টানা চতুর্থবার অ্যাশেজ জয়ের স্বাদ পেল অস্ট্রেলিয়া।

দিনের শুরুতে ইংল্যান্ড ছিল ২০৭/৬। ক্যামেরন গ্রিনের টানটান স্পেলে শুরুতে অস্বস্তিতে পড়ে সপ্তম উইকেট জুটি। কিন্তু স্মিথ হঠাৎ করেই আক্রমণে যান, লায়নকে স্লগ-সুইপ, গ্রিনকে টেনে মারেন ছক্কা। বৃষ্টির সংক্ষিপ্ত বিরতির পর আবার খেলা শুরু হলে ইংল্যান্ড ২৫০ পার করে। নতুন বল আসার আগ মুহূর্তে লাবুশেন ও ট্রাভিস হেডের ওভার থেকেও বাউন্ডারি আদায় করে নেন স্মিথ, যদিও তখন ডান হ্যামস্ট্রিং চেপে ধরে মাঠ ছাড়েন লায়ন।॥

দ্বিতীয় নতুন বল হাতে নিয়েই কামিন্সকে টানা দুই চার মেরে ফিফটি পূর্ণ করেন স্মিথ। স্টার্ককেও দু’বার সীমানা ছাড়া করেন। কিন্তু বড় শট খেলতে গিয়ে কামিন্সের হাতেই ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৬০ রানে। প্রায় ৩০ ওভার স্থায়ী ৯০ রানের জুটি ভাঙে সেখানেই। এরপরও ইংল্যান্ড সহজে হার মানেনি। জ্যাকস ও কার্স ধীরে ধীরে ব্যবধান নামিয়ে আনেন। লাঞ্চে স্কোর দাঁড়ায় ৩০৯/৭, জয়ের জন্য দরকার তখনও ১২৬ রান।

লাঞ্চের পর কার্স এলবিডব্লিউ রিভিউ জিতে ফিরে পান জীবন। হেড ও বোল্যান্ডের বলে আক্রমণ চালিয়ে জ্যাকসের সঙ্গে পঞ্চাশের জুটি গড়েন তিনি। এক সময় মনে হচ্ছিল, ম্যাচটা সত্যিই অন্যদিকে মোড় নিতে পারে। কিন্তু ঠিক তখনই স্টার্ক ফিরে এসে ছোবল বসান। জ্যাকসের ব্যাট ছুঁয়ে বল উঠে যায়, লাবুশেন এক হাতে অসাধারণ ক্যাচ ধরেন উইকেটকিপারের সামনে।

স্টার্ক এরপর জোফ্রা আর্চারকে ফিরিয়ে তিন উইকেট পূর্ণ করেন। শেষ পর্যন্ত বোল্যান্ড জশ টাংকে আউট করলে ম্যাচের ইতি টানে অস্ট্রেলিয়া। এই জয়ের ভিতটা অবশ্য গড়া হয়েছিল আগেই। প্রথম ইনিংসে ৯৪/৪ থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে অস্ট্রেলিয়াকে ৩৭১ পর্যন্ত টেনে নিয়েছিলেন অ্যালেক্স ক্যারি (১০৬), উসমান খাজা (৮২) ও স্টার্ক (৫৪)। জবাবে ইংল্যান্ড ২৮৬ করলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ট্রাভিস হেডের ১৭০ ও ক্যারির ৭২ রানে অস্ট্রেলিয়া তুলে দেয় ৪৩৫ রানের চ্যালেঞ্জ।

জ্যাক ক্রলির ৮৫ রানের ইনিংস সত্ত্বেও বড় জুটি গড়তে না পারায় শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ডের স্বপ্নটা রয়ে যায় স্বপ্নই। শেষ দিনে লড়াই ছিল, নাটক ছিল, কিন্তু ট্রফিটা যে অস্ট্রেলিয়ার কাছেই থাকবে, সেটা আর বদলায়নি।