Dhaka বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আ.লীগ সবসময় হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশে ছিল, আছে: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সবসময়ই হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশে ছিলো এবং থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার (২২ অক্টোবর) দুপুরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে পূজামণ্ডপে ভক্তদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধে সবাই এক হয়ে যুদ্ধ করেছে। এই মাটিতে সকলের সমান অধিকার। সকল ধর্মের মানুষ সমান অধিকার ভোগ করবে। কেউ কারো ওপর হস্তক্ষেপ করবে না। ৭৫ পর বাংলাদেশকে অসাম্প্রদায়িক চেতনা থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর অনেক অত্যাচার নির্যাতন হয়েছে। ৯২, ২০০১ ও তার আগে বার বার আঘাত এসেছে। কিন্তু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সবসময় আপনাদের পাশে ছিল, পাশে আছি।

তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হারিয়েছি। পাশাপাশি আমার মা ও ভাইদেরকে হারিয়েছি। আমার আর হারাবার কিছু নেই। আমি এসেছি বাংলার মানুষের ভাগ্য গড়তে। ৭৫’এর পর বাংলাদেশকে অসাম্প্রদায়িক চেতনা থেকে দূরে সরিয়ে নেয়া হয়েছিলো। হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর অকথ্য নির্যাতন করা হয়েছিলো ১৯৯২ ও ২০০১ কিংবা তার আগেও অসংখ্যবার এই সম্প্রদায়ের ওপর আঘাত আসতে দেখেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বে এমন একটি দেশ, যেখানে সবাই মিলেমিশে উৎসব উদযাপন করে থাকি। এটাই বাংলাদেশের সব থেকে সৌন্দর্য। এখন সারা বাংলাদেশে হাজার হাজার পূজামণ্ডপ হয়েছে এবং আপনারা শান্তিপূর্ণভাবে পূজা করতে পারছেন। অথচ এই দেশে একসময় এমনও ঘটনা ঘটেছিল যে, মণ্ডপে পূজা না করে শুধু ঘরে বসেই পূজা করতে হয়েছে। সেই এরশাদের (সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ) আমলে, খালেদা জিয়ার (সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া) আমলে এমন বহু ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু আমরা আওয়ামী লীগ নেতারা সব সময় একসঙ্গে কাজ করি। আপনাদের পাশে সবসময় আছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পূজামণ্ডপের নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে আমাদের সংগঠনের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছি যার যার অবস্থান থেকে সবরকমের শান্তি বজায় রাখতে কাজ করতে।

দেশে খাদ্যের কোনও অভাব নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, যদিও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ স্যাংশন কাউন্টার স্যাংশনের ফলে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিয়েছে। বিশ্বব্যাপী প্রচন্ত খাদ্যমন্দা। বাংলাদেশও একই ধাক্কা সামাল দিতে হচ্ছে। আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি।

বাংলাদেশের মানুষ উদার মনের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা সবসময় অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাস করে। সে কারণে আজেকে আমরা স্লোগান দেই- ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। আমরা বিশ্বাস করি সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষ সমান অধিকার ভোগ করবে। আমাদের ইসলাম ধর্মে, সুরা কাফিরুনে স্পষ্ট বলা আছে, লাকুম দ্বীনুকুম ওয়ালিয়াদ্বীন অর্থাৎ যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে। কাজেই কেউ কারো ওপর হস্তক্ষেপ করবে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মানুষ সবসময় উদার মনের, তারাও সব সময় অসম্প্রদায় চেতনাকে বিশ্বাস করে। যে কারণে আজকে আমাদের স্লোগান, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। সবাই আমরা ঠিকই এভাবে উৎসব পালন করে যাচ্ছি।

পূজা শান্তিপূর্ণভাবে হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সবার আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। আমি বলব, আমাদের যতটুকু করার আমি করেছি।

তিনি আরও বলেন, এ মাটির সন্তান সবাই। এই মাটিতে নিজ নিজ অধিকার নিয়ে সবাই বাস করবেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে সবাই একই যুদ্ধ করেছেন, এখানে সবার অধিকার রয়েছে। সে অধিকার যাতে সুপ্রতিষ্ঠিত থাকে আমরা সেই চেষ্টাই করি। আমরা চাইবো, আপনারও বাংলাদেশের জন্য আশীর্বাদ করুন। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, এখন ঘরে ঘরে খাবার আছে, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ আছে, চিকিৎসা সেবা মানুষের কাছে আমরা দিয়ে দিচ্ছি, সারা বাংলাদেশে যে উন্নয়নের ছোঁয়া, এটা মানুষের কল্যাণেই আমাদের কাজ। মানুষের কল্যাণ করাটাই আমাদের একমাত্র দায়িত্ব।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সবসময় বিশ্বাস করি, সবি ধর্ম বর্ণের মানুষ সমান অধিকার ভোগ করবে। আপনারা শান্তিপূর্ণভাবে পূজা শেষ করেন, সেটাই আমরা চাই। আইন-শৃঙ্খলা কর্মী থেকে শুরু করে আমাদের প্রত্যেক নেতারা থাকবে, যাতে কোনো ধরনের ঘটনা না ঘটতে পারে। সেদিকে আমরা সতর্ক থাকবো। আমরা চাই, আপনারা ভালোভাবে পূজা উদযাপন করেন।

তিনি বলেন, সারা বাংলাদেশে ৩২ হাজারের বেশি পূজামণ্ডপ তৈরি হয়েছে। আমার এলাকা টুঙ্গীপাড়া-কোটালিপাড়ায় তো ৪৪০টির মতো পূজামণ্ডপ হয়। ঢাকায় এবার ২৪৬টি পূজামণ্ডপ হয়েছে। সবজায়গায় খুবই সুন্দর ও শান্তিপূর্ণভাবে পূজা হচ্ছে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা থেকে শুরু করে সবাই আন্তরিকতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে উৎসবের দিন। তাই কী করলাম, কী দিলাম এসব কথায় যাবো না। আমরা এই মাটির সন্তান সবাই। এই মাটিতে সবাই নিজ নিজ অধিকা নিয়ে বাস করবেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে সবাই এক হয়ে যুদ্ধ করেছেন। কাজেই এখানে সবার সমান অধিকার রয়েছে। সেই অধিকার যাতে বলবৎ থাকে এবং প্রতিষ্ঠিত থাকে সে কাজ করে যাচ্ছি।

হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা আশীর্বাদ করুন বাংলাদেশের জন্য। আজকে বাংলাদেশের যে অগ্রযাত্রা, ঘরে ঘরে খাবার আছে, বিদ্যুৎ আছে, চিকিৎসাসেবা মানুষের কাছে দিয়ে দিচ্ছি, সারা বাংলাদেশে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সব সময় বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ, যখন আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডাক দিয়েছিলেন যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করো, তখন ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই যার যা কিছু ছিল তাই নিয়ে, অস্ত্র তুলে নিয়েই আমাদের এই দেশ স্বাধীন করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি শুধু এটুকু বলবো, আমাদের যতটুকু করার আমরা করেছি। আপনাদের অনেকগুলো দাবি ছিল। আমি কিছু দিন আগেই আপনাদের সঙ্গে বসেছি। অনেক কিছু বিস্তারিত বক্তব্য দিয়েছি। আজকে যেহেতু একটা উৎসবের দিন কাজেই কী দিলাম বা কী করলাম, কী পেলাম, কী পেলাম না সে কথায় আমি যাব না। আমরা এই মাটির সন্তান সবাই। এই মাটিতে নিজ নিজ অধিকার নিয়ে আপনারা বাস করবেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে সবাই এক হয়ে যুদ্ধ করেছেন। কাজেই এখানে সকলেরই সমান অধিকার রয়েছে। সেই অধিকার যাতে বলবৎ থাকে, সেই অধিকার যাতে সুপ্রতিষ্ঠিত থাকে আমরা সব সময় সেই চেষ্টাই করি।’

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, আজকে আমরা এটুকু চাইবো, আপনারাও আশীর্বাদ করেন বাংলাদেশের জন্য; আজকে বাংলাদেশের যে অগ্রযাত্রা এখন ঘরে ঘরে খাবার আছে, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ আছে, চিকিৎসা সেবা মানুষের কাছে আমরা দিয়ে দিচ্ছি, সারাদেশে যে উন্নয়নের ছোঁয়া, এটা মানুষের কল্যাণেই আমাদের কাজ। আর মানুষের কল্যাণ করাটাই আমরা মনে করি একমাত্র দায়িত্ব।

তিনি বলেন, ২০০৮ এর নির্বাচনে বলেছিলাম ডিজিটাল বাংলাদেশ করব, সেটা আমরা করে দিয়েছি। এখন আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ। ইনশাল্লাহ আমরা সেটাও করতে পারব। আমরা সব সময় বিশ্বাস করি, সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষ সমান অধিকার ভোগ করবে।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, এমনকি আমাদের ইসলাম ধর্ম; সুরা কাফেরুনে বলা আছে স্পষ্ট, লাকুম দ্বীনুকুম ওয়ালিয়া দ্বীন। অর্থাৎ যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে। কাজেই কেউ কারও ওপর হস্তক্ষেপ করবে না। শান্তিপূর্ণভাবে পূজা সম্পন্ন হোক, সেটাই আমরা চাই।

তিনি আরও বলেন, আমরা আছি। আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থেকে শুরু করে আমাদের সংগঠনের সকল নেতাকর্মী প্রত্যেকেই পাশে থাকবে। কোনো রকম ঘটনা যাতে না ঘটতে পারে সেদিকে আমরা সতর্ক থাকব।’

এসময় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি জে এল ভৌমিক ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার উপস্থিত ছিলেন।

আবহাওয়া

বদলির চিঠি প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলায় ৮ কর কর্মকর্তা বরখাস্ত

আ.লীগ সবসময় হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশে ছিল, আছে: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৫:২৭:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ অক্টোবর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সবসময়ই হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশে ছিলো এবং থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার (২২ অক্টোবর) দুপুরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে পূজামণ্ডপে ভক্তদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধে সবাই এক হয়ে যুদ্ধ করেছে। এই মাটিতে সকলের সমান অধিকার। সকল ধর্মের মানুষ সমান অধিকার ভোগ করবে। কেউ কারো ওপর হস্তক্ষেপ করবে না। ৭৫ পর বাংলাদেশকে অসাম্প্রদায়িক চেতনা থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর অনেক অত্যাচার নির্যাতন হয়েছে। ৯২, ২০০১ ও তার আগে বার বার আঘাত এসেছে। কিন্তু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সবসময় আপনাদের পাশে ছিল, পাশে আছি।

তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হারিয়েছি। পাশাপাশি আমার মা ও ভাইদেরকে হারিয়েছি। আমার আর হারাবার কিছু নেই। আমি এসেছি বাংলার মানুষের ভাগ্য গড়তে। ৭৫’এর পর বাংলাদেশকে অসাম্প্রদায়িক চেতনা থেকে দূরে সরিয়ে নেয়া হয়েছিলো। হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর অকথ্য নির্যাতন করা হয়েছিলো ১৯৯২ ও ২০০১ কিংবা তার আগেও অসংখ্যবার এই সম্প্রদায়ের ওপর আঘাত আসতে দেখেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বে এমন একটি দেশ, যেখানে সবাই মিলেমিশে উৎসব উদযাপন করে থাকি। এটাই বাংলাদেশের সব থেকে সৌন্দর্য। এখন সারা বাংলাদেশে হাজার হাজার পূজামণ্ডপ হয়েছে এবং আপনারা শান্তিপূর্ণভাবে পূজা করতে পারছেন। অথচ এই দেশে একসময় এমনও ঘটনা ঘটেছিল যে, মণ্ডপে পূজা না করে শুধু ঘরে বসেই পূজা করতে হয়েছে। সেই এরশাদের (সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ) আমলে, খালেদা জিয়ার (সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া) আমলে এমন বহু ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু আমরা আওয়ামী লীগ নেতারা সব সময় একসঙ্গে কাজ করি। আপনাদের পাশে সবসময় আছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পূজামণ্ডপের নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে আমাদের সংগঠনের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছি যার যার অবস্থান থেকে সবরকমের শান্তি বজায় রাখতে কাজ করতে।

দেশে খাদ্যের কোনও অভাব নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, যদিও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ স্যাংশন কাউন্টার স্যাংশনের ফলে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিয়েছে। বিশ্বব্যাপী প্রচন্ত খাদ্যমন্দা। বাংলাদেশও একই ধাক্কা সামাল দিতে হচ্ছে। আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি।

বাংলাদেশের মানুষ উদার মনের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা সবসময় অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাস করে। সে কারণে আজেকে আমরা স্লোগান দেই- ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। আমরা বিশ্বাস করি সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষ সমান অধিকার ভোগ করবে। আমাদের ইসলাম ধর্মে, সুরা কাফিরুনে স্পষ্ট বলা আছে, লাকুম দ্বীনুকুম ওয়ালিয়াদ্বীন অর্থাৎ যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে। কাজেই কেউ কারো ওপর হস্তক্ষেপ করবে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মানুষ সবসময় উদার মনের, তারাও সব সময় অসম্প্রদায় চেতনাকে বিশ্বাস করে। যে কারণে আজকে আমাদের স্লোগান, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। সবাই আমরা ঠিকই এভাবে উৎসব পালন করে যাচ্ছি।

পূজা শান্তিপূর্ণভাবে হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সবার আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। আমি বলব, আমাদের যতটুকু করার আমি করেছি।

তিনি আরও বলেন, এ মাটির সন্তান সবাই। এই মাটিতে নিজ নিজ অধিকার নিয়ে সবাই বাস করবেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে সবাই একই যুদ্ধ করেছেন, এখানে সবার অধিকার রয়েছে। সে অধিকার যাতে সুপ্রতিষ্ঠিত থাকে আমরা সেই চেষ্টাই করি। আমরা চাইবো, আপনারও বাংলাদেশের জন্য আশীর্বাদ করুন। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, এখন ঘরে ঘরে খাবার আছে, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ আছে, চিকিৎসা সেবা মানুষের কাছে আমরা দিয়ে দিচ্ছি, সারা বাংলাদেশে যে উন্নয়নের ছোঁয়া, এটা মানুষের কল্যাণেই আমাদের কাজ। মানুষের কল্যাণ করাটাই আমাদের একমাত্র দায়িত্ব।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সবসময় বিশ্বাস করি, সবি ধর্ম বর্ণের মানুষ সমান অধিকার ভোগ করবে। আপনারা শান্তিপূর্ণভাবে পূজা শেষ করেন, সেটাই আমরা চাই। আইন-শৃঙ্খলা কর্মী থেকে শুরু করে আমাদের প্রত্যেক নেতারা থাকবে, যাতে কোনো ধরনের ঘটনা না ঘটতে পারে। সেদিকে আমরা সতর্ক থাকবো। আমরা চাই, আপনারা ভালোভাবে পূজা উদযাপন করেন।

তিনি বলেন, সারা বাংলাদেশে ৩২ হাজারের বেশি পূজামণ্ডপ তৈরি হয়েছে। আমার এলাকা টুঙ্গীপাড়া-কোটালিপাড়ায় তো ৪৪০টির মতো পূজামণ্ডপ হয়। ঢাকায় এবার ২৪৬টি পূজামণ্ডপ হয়েছে। সবজায়গায় খুবই সুন্দর ও শান্তিপূর্ণভাবে পূজা হচ্ছে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা থেকে শুরু করে সবাই আন্তরিকতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে উৎসবের দিন। তাই কী করলাম, কী দিলাম এসব কথায় যাবো না। আমরা এই মাটির সন্তান সবাই। এই মাটিতে সবাই নিজ নিজ অধিকা নিয়ে বাস করবেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে সবাই এক হয়ে যুদ্ধ করেছেন। কাজেই এখানে সবার সমান অধিকার রয়েছে। সেই অধিকার যাতে বলবৎ থাকে এবং প্রতিষ্ঠিত থাকে সে কাজ করে যাচ্ছি।

হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা আশীর্বাদ করুন বাংলাদেশের জন্য। আজকে বাংলাদেশের যে অগ্রযাত্রা, ঘরে ঘরে খাবার আছে, বিদ্যুৎ আছে, চিকিৎসাসেবা মানুষের কাছে দিয়ে দিচ্ছি, সারা বাংলাদেশে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সব সময় বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ, যখন আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডাক দিয়েছিলেন যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করো, তখন ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই যার যা কিছু ছিল তাই নিয়ে, অস্ত্র তুলে নিয়েই আমাদের এই দেশ স্বাধীন করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি শুধু এটুকু বলবো, আমাদের যতটুকু করার আমরা করেছি। আপনাদের অনেকগুলো দাবি ছিল। আমি কিছু দিন আগেই আপনাদের সঙ্গে বসেছি। অনেক কিছু বিস্তারিত বক্তব্য দিয়েছি। আজকে যেহেতু একটা উৎসবের দিন কাজেই কী দিলাম বা কী করলাম, কী পেলাম, কী পেলাম না সে কথায় আমি যাব না। আমরা এই মাটির সন্তান সবাই। এই মাটিতে নিজ নিজ অধিকার নিয়ে আপনারা বাস করবেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে সবাই এক হয়ে যুদ্ধ করেছেন। কাজেই এখানে সকলেরই সমান অধিকার রয়েছে। সেই অধিকার যাতে বলবৎ থাকে, সেই অধিকার যাতে সুপ্রতিষ্ঠিত থাকে আমরা সব সময় সেই চেষ্টাই করি।’

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, আজকে আমরা এটুকু চাইবো, আপনারাও আশীর্বাদ করেন বাংলাদেশের জন্য; আজকে বাংলাদেশের যে অগ্রযাত্রা এখন ঘরে ঘরে খাবার আছে, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ আছে, চিকিৎসা সেবা মানুষের কাছে আমরা দিয়ে দিচ্ছি, সারাদেশে যে উন্নয়নের ছোঁয়া, এটা মানুষের কল্যাণেই আমাদের কাজ। আর মানুষের কল্যাণ করাটাই আমরা মনে করি একমাত্র দায়িত্ব।

তিনি বলেন, ২০০৮ এর নির্বাচনে বলেছিলাম ডিজিটাল বাংলাদেশ করব, সেটা আমরা করে দিয়েছি। এখন আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ। ইনশাল্লাহ আমরা সেটাও করতে পারব। আমরা সব সময় বিশ্বাস করি, সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষ সমান অধিকার ভোগ করবে।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, এমনকি আমাদের ইসলাম ধর্ম; সুরা কাফেরুনে বলা আছে স্পষ্ট, লাকুম দ্বীনুকুম ওয়ালিয়া দ্বীন। অর্থাৎ যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে। কাজেই কেউ কারও ওপর হস্তক্ষেপ করবে না। শান্তিপূর্ণভাবে পূজা সম্পন্ন হোক, সেটাই আমরা চাই।

তিনি আরও বলেন, আমরা আছি। আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থেকে শুরু করে আমাদের সংগঠনের সকল নেতাকর্মী প্রত্যেকেই পাশে থাকবে। কোনো রকম ঘটনা যাতে না ঘটতে পারে সেদিকে আমরা সতর্ক থাকব।’

এসময় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি জে এল ভৌমিক ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার উপস্থিত ছিলেন।