Dhaka মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আ. লীগের রাজনীতি কল্যাণের, বিএনপির রাজনীতি মানুষ পোড়ানোর : প্রধানমন্ত্রী

বরিশাল জেলা প্রতিনিধি : 

বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল আখ্যায়িত করে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশে রাজনীতি করার অধিকার নেই এই দলের। কারণ তারা মানুষ পোড়ায়, মানুষ হত্যা করে। আমাদের রাজনীতি মানুষের কল্যাণে, আর ওদের রাজনীতি মানুষ হত্যায়। তাদের কী মানুষ চায় বলেন? তাদের মানুষ চায় না।

শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে বরিশাল নগরের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগের জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমাদের রাজনীতি মানুষের কল্যাণে। অগ্নিসন্ত্রাসীদের মানুষ আর চায় না। তাদের দোসর যারা একাত্তরে লুটপাট, গণধর্ষণ করেছে তারা। যাদের বিচার করেছি, সাজা দিয়েছি, সেই যুদ্ধাপরাধীরা তাদের দোসর। খুনি-সন্ত্রাসী মানিলন্ডারিংকারী সেই দল, তার সঙ্গে জুটছে যুদ্ধাপরাধী দল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যখন জনগণের জন্য উন্নয়ন করি, তখন ওই বিএনপি-জামায়াত করে অগ্নিসন্ত্রাস। রেললাইনের ফিস প্লেট ফেলে দিয়ে, বগি ফেলে দিয়ে মানুষ হত্যার ফাঁদ পাতে। রেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়েছে। মা-সন্তানকে বুকে জড়িয়ে রেখেছে- এই অবস্থায় আগুনে পুড়ে কাঠ হয়ে গেছে। এই দৃশ্য পুরো বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিয়েছে। আসে আগুন, গাড়িতে আগুন, ঠিক ২০০১ সালে শুরু করেছিল। এরপর ১৩-১৪ একই ঘটনা ঘটায়। এখন আবার অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করেছে। আমি ধিক্কার জানাই বিএনপি-জামায়াতকে।

Untitled-1

বিএনপি-জামায়াতের নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, তারা অকাতরে নির্যাতন-অত্যাচার করেছে। তাদের অত্যাচারে টিকতে না পেরে এ অঞ্চলের ২৫ হাজার মানুষ কোটালীপাড়ায় আশ্রয় নিয়েছিল। তারা মানুষের হাত-পা কেটে ফেলতো, চোখ উপড়ে ফেলতো। মেয়েদের উপর পাশবিক নির্যাতন চলাতো। তখন কেউ ঘরে থাকতে পারতো না।

সরকারপ্রধান বলেন, বিএনপির অপশাসনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালে মানুষ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে বাংলাদেশ এগিয়ে যায়। আজ বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। কথা দিয়েছিলাম, কোনো ঘর অন্ধকার থাকবে না। সেই কথা রেখেছি। আজকে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছি। দারিদ্র্য বিমোচন করেছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। বিএনপির দুঃশাসনে জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করে আমাদের ক্ষমতায় রেখেছে। আজ ২০২৩ সাল, আমরা বদলে যাওয়া বাংলাদেশে। আজকে দুর্ভিক্ষ নেই, মঙ্গা নেই। যে মানুষ একবেলা খেতে পারতো না। তারা তিন বেলা খেতে পারছে। বই বিনামূলে বিতরণ করছি। অসহায়দের ভাতা দিচ্ছি। আজকে ১০ কোটি মানুষ উপকারভোগী। আমরা বিশেষ প্রণোদনা দিয়ে শিল্প কলকারখানা চালিয়ে আসছি। ১০ টাকায় কৃষকরা অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে। ১ কোটি ২ লাখ কৃষক অ্যাকাউন্ট খুলে ভর্তুকির টাকা পাচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ডিসেম্বর আমাদের বিজয়ের মাস। জাতির পিতার নেতৃত্বে এ মাসে আমরা বিজয় অর্জন করেছি। জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচন। সেই লক্ষ্যে এখানে উপস্থিত হয়েছি।

জাতির পিতা এ দেশের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তারা শুধু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হত্যা করেছিল। বাংলাদেশের মানুষ এক সময় খুদা-দরিদ্রতায় ভুগছে। সেখান থেকে দেশকে মুক্ত দেশ করেছি। আওয়ামী লীগ সরকারই দেশকে দরিদ্রতা মুক্ত করেছে। দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছি।

বরিশালের জনসভায় ভাষণ দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : ফোকাস বাংলা

তিনি আরও বলেন, বিএনপি আমাকে ২০০৭-২০০৮ পর্যন্ত গ্রেফতার করে রেখেছে। আমাকে আটকে রেখে দেশের উন্নয়নে বাধার সৃষ্টি করতে চেয়েছে, কিন্তু পারেনি। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। আগে যে মানুষ এক বেলা খেতে পারতো তারা এখন তিন বেলা খেতে পারছে। সারাদেশ বিনা পয়সায় বই দিচ্ছি। সামাজিক নিরাপত্তা, বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা দিয়েছি। কোভিডকালীন সময়ে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। কৃষক এখন ১০ টাকায় ব্যাংক একাউন্ট খুলতে পারে। তাদের সব উপকরণ বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছি। তাদের পিছনে ২৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছি।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনে চক্রান্ত করে আওয়ামী লীগকে হারানো হয়েছিল। এরপর বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষদের অনেক অত্যাচার-নির্যাতন সইতে হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল ছিল বাংলাদেশের জন্য অন্ধকার যুগ।

তিনি বলেন, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল, ১৫ বছর আমরা ক্ষমতায়, বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। বাংলাদেশ সার্বিকভাবে রাস্তাঘাট, পুল যতদূর নির্মাণ করে দিয়েছি। খাদ্য নিরাপত্তা আমরা নিশ্চিত করেছি। যেখানে ১ কোটি ৮০ লক্ষ মেট্রিক টন খাদ্য ছিল আজ সেখানে ৪ কোটি ৯২ লক্ষ ১৬ হাজার মেট্রিক টন খাদ্য উৎপাদন হয়। যে মানুষ এক বেলা খেতে পারত না সে মানুষটা আজ ২ বেলা, ৩ বেলা খেতে পারে।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ দেশ গড়বেন। যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশের ক্ষমতা হাতে নিয়েছিলেন। রিজার্ভ মানি ছিল না, গোলায় এক ফোটা খাবার ছিল না। যুদ্ধকালী সময় কোনো ফসল মাঠে ফলেনি। রাস্তাঘাট, পুল ব্রিজ সব বিধ্বস্ত। শূন্য হাতে তিনি শুরু করেছিলেন, মাথাপিছু আয় ছিল ৯১ ডলার। জাতির পিতাকে পীড়া দিত, তাই নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে মাথাপিছু ২৭৭ ডলারে বৃদ্ধি করেন। দুইটি পোর্ট মাইন মুক্ত করা, রাস্তাঘাট উন্নত করা, হতদরিদ্রদের খাস জমি বিতরণ, বিনা পয়সায় বই কাপড় চোপড় পর্যন্ত দিয়েছিলেন। হত্যা, কু, ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে জিয়া-মুশতাক ক্ষমতায় আসে। এরপর জেনারেল এরশাদ ক্ষমতায় আসে কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি।

তিনি বলেন, বরিশাল অঞ্চলে, বিভাগে এখানে আমি আমাদের নৌ বাহিনীর ঘাটি করেছি। সেনানিবাস তৈরি করেছি। এই এলাকা উন্নয়নের জন্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র করা হয়েছে। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিচ্ছি। সেখানে সোলার প্যানেলসহ কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করেছি। ভোলার গ্যাস সিএনজি করে ঢাকায় নিচ্ছি। ভবিষ্যতে আমরা বরিশালেও নিয়ে আসব। শিল্প কারখানা যাতে গড়ে উঠে সে ব্যবস্থা আমরা করবো।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুজিববর্ষে আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম, বাংলাদেশের একটি মানুষ ও গৃহহীন, ভূমিহীন থাকবে না। আজকে আমরা প্রায় ৮ লক্ষ ৪১ হাজার ৬শ ২৩টি পরিবারকে বিনামূল্যে ঘর দিয়েছি। বরিশালের প্রতিটা উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত যদি কেউ ভূমিহীন থাকে তাকে বিনা পয়সায় ঘর দিয়ে জীবন জীবিকার ব্যবস্থা করে দিব। বেদে, হিজড়াসহ নানা ধরনের যারা অনগ্রসর এমনকি কুষ্ঠ রোগী তাদের কে ও আমরা ঘর ও জীবন জীবিকার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।

PM_Barishal-14

তিনি বলেন, আমরা রাস্তা করে দিয়েছি। কেমন রাস্তা আপনারা দেখেন। সেখানে চড়লে মনে হবে বাংলাদেশ না কোনো উন্নত দেশে যাচ্ছে। আপনাদের জন্য সুখবর আছে, ভাঙ্গা থেকে বরিশাল, কুয়াকাটা, পায়রা পোর্ট পর্যন্ত ৬ লেনের রাস্তা তৈরি করে দিব। ইতোমধ্যে ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়ে গেছে। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এর সাথে আলোচনা হয়ে, সেখান থেকে আমরা অর্থ নিবো। এই বরিশালে আর কোন দুর্ভোগ থাকবে না। আধুনিক রাস্তা তৈরি করে দিয়ে চলার পথ সহজ করে দিবো।

তিনি আরও বলেন, বরিশালে খুব বেশি মামলা হয়। ভার্চুয়াল কোর্ট আমরা করে দিয়েছি। এখানে বসেও যাতে হাইকোর্টে মামলা চলে সে ব্যবস্থা করে দিয়েছি। প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে ডিজিজটাল সিস্তেম সারা দেশে। এখন আমাদের লক্ষ ২০৪১ এর মধ্যে বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। আমাদের ছেলে মেয়ে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হবে। দক্ষ জনশক্তি হবে।

বরিশালবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা ৭ তারিখে সকাল সকাল ভোটকেন্দ্রে যাবেন। নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন। কারণ এই নৌকা নূহ নবীর নৌকা। এই নৌকা স্বাধীনতা এনেছে, দেশ থেকে দারিদ্র বিমোচন করে। এই নৌকা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছে। এবার এই নৌকায় ভোট দিলে স্মার্ট বাংলাদেশ হবে।

তরুণদের নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বিশ্বাস করি তারুণ্যের শক্তিই বাংলাদেশের অগ্রগতি। নতুন ভোটার যারা নতুন ভোটারদের কাছে আমরা আহ্বান, যারা নতুন করে ভোট দিতে আসবেন তারা নিশ্চয়ই চাইবেন না আপনার ভোট ব্যর্থ হোক। কাজে আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে নৌকাকে জয়যুক্ত করবেন।

তিনি বলেন, এই নৌকায় ভোট দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে। এই নৌকায় ভর্তি আজকে দারিদ্র্য বিমোচন হয়েছে, ভোট দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে। এই নৌকায় ভোট দিলে স্মার্ট বাংলাদেশ হবে।

বরিশালে নির্বাচনি জনসভায় বক্তব্য দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ছবি: ফোকাস বাংলা)

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা করেছি এখন আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যেই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়া। আমাদের ছেলে মেয়েরা সুশিক্ষায় শিক্ষিত হবে। আধুনিক বিজ্ঞান প্রযুক্তি শিখবে।

তিনি বলেন, দক্ষ জনশক্তি হবে তাদের স্মার্ট জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলবো। আমাদের সরকার ডিজিটাল পদ্ধতিতে স্মার্ট সরকার হবে। আমাদের অর্থনীতি স্মার্ট হবে, কৃষি যান্ত্রিকরণ হবে। আমাদের সমাজ ব্যবস্থা হবে স্মার্ট সমাজ। তার জন্য আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদের মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করতে হবে।

তিনি বরিশাল-৫ (সদর) আসনের প্রার্থীর কথা উল্লেখ করে বলেন, আপনাদের এই বরিশালে জাহিদ ফারুককে মনোনয়ন দিয়েছি। আপনারা জানেন-তাকে আমি পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছি। অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সততার সঙ্গে সে তার দায়িত্ব পালন করছে। কোথাও বন্যা-খরা হলে তখন সে ছুটে যায়। কাজেই সততার সঙ্গে যে লোকটা কাজ করছে তাকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন।

বরিশাল-৬ (বাকেরগঞ্জ) আসনের প্রার্থীর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আবদুল হাফিজ মল্লিককে মনোনয়ন দিয়েছি। তিনি বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সঙ্গে জড়িত আছেন। বঙ্গমাতা হসপিটাল দেখাশোনা করেন, সেখানে মেডিক্যাল কলেজ করবো, সেটাও তিনি দেখাশোনা করবেন।

ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর-কাঠালিয়া) আসনের প্রার্থী ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমরের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, শাহজাহান ওমর ওই সন্ত্রাসী দল (বিএনপি) ছেড়ে এখন নৌকায় উঠেছে। ঘরের ছেলে ঘরে উঠে এসেছে।

বরিশাল-৪ (হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ) আসনে নৌকার মনোনয়ন পাওয়া শাম্মী আহমেদের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বরিশাল-৪ আসনে শাম্মী আহমেদের নমিনেশনটা হাইকোর্টে আটকা পড়ে আছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ তাকেই নমিনেশন দিয়েছে।

পরিচয় শেষে প্রধানমন্ত্রী জনসাধারণের উদ্দেশে বলেন, বরিশাল বিভাগে আমরা যাদের নমিনেশন দিয়েছি তাদের আপনাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলাম।  আমি একটা কথা বলতে চাই, বারবার আওয়ামী লীগ সরকার এসেছে বলে দীর্ঘ ১৫ বছর গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলে আজ বাংলাদেশে উন্নয়ন হয়েছে।

বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বরিশাল ১ আসনের সংসদ সদস্য আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহর সভাপতিত্বে জনসভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, উপদেষ্টা মণ্ডলির সদস্য আমির হোসেন আমু, ওয়ার্কার্স পার্টির চেয়ারম্যান রাশেদ খান মেনন, আবদুল হাফিজ মল্লিক, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী স ম রেজাউল করিম, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ-ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, আওয়ামী-যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, জাতীয় পাটির (মঞ্জু) সভাপতি আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, সিটি মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত, শাজাহান ওমর বীর উত্তম, আলীগের দপ্তর সস্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, আন্তজাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, বরিশাল মহনগর আলীগের সভাপতি এ কে এম জাহাঙ্গির, সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, বরিশালে জনসভা শেষে বিকেলে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় যাবেন। সেখানে তিনি শনিবার সকালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। পরে শনিবার দিনব্যাপী গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া, কোটালীপাড়া ও মাদারীপুরে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী জনসভায় যোগদান শেষে ঢাকায় ফিরবেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে চলাচলে অনুপযোগী, দুর্ভোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের

আ. লীগের রাজনীতি কল্যাণের, বিএনপির রাজনীতি মানুষ পোড়ানোর : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৬:৫৯:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩

বরিশাল জেলা প্রতিনিধি : 

বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল আখ্যায়িত করে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশে রাজনীতি করার অধিকার নেই এই দলের। কারণ তারা মানুষ পোড়ায়, মানুষ হত্যা করে। আমাদের রাজনীতি মানুষের কল্যাণে, আর ওদের রাজনীতি মানুষ হত্যায়। তাদের কী মানুষ চায় বলেন? তাদের মানুষ চায় না।

শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে বরিশাল নগরের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগের জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমাদের রাজনীতি মানুষের কল্যাণে। অগ্নিসন্ত্রাসীদের মানুষ আর চায় না। তাদের দোসর যারা একাত্তরে লুটপাট, গণধর্ষণ করেছে তারা। যাদের বিচার করেছি, সাজা দিয়েছি, সেই যুদ্ধাপরাধীরা তাদের দোসর। খুনি-সন্ত্রাসী মানিলন্ডারিংকারী সেই দল, তার সঙ্গে জুটছে যুদ্ধাপরাধী দল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যখন জনগণের জন্য উন্নয়ন করি, তখন ওই বিএনপি-জামায়াত করে অগ্নিসন্ত্রাস। রেললাইনের ফিস প্লেট ফেলে দিয়ে, বগি ফেলে দিয়ে মানুষ হত্যার ফাঁদ পাতে। রেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়েছে। মা-সন্তানকে বুকে জড়িয়ে রেখেছে- এই অবস্থায় আগুনে পুড়ে কাঠ হয়ে গেছে। এই দৃশ্য পুরো বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিয়েছে। আসে আগুন, গাড়িতে আগুন, ঠিক ২০০১ সালে শুরু করেছিল। এরপর ১৩-১৪ একই ঘটনা ঘটায়। এখন আবার অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করেছে। আমি ধিক্কার জানাই বিএনপি-জামায়াতকে।

Untitled-1

বিএনপি-জামায়াতের নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, তারা অকাতরে নির্যাতন-অত্যাচার করেছে। তাদের অত্যাচারে টিকতে না পেরে এ অঞ্চলের ২৫ হাজার মানুষ কোটালীপাড়ায় আশ্রয় নিয়েছিল। তারা মানুষের হাত-পা কেটে ফেলতো, চোখ উপড়ে ফেলতো। মেয়েদের উপর পাশবিক নির্যাতন চলাতো। তখন কেউ ঘরে থাকতে পারতো না।

সরকারপ্রধান বলেন, বিএনপির অপশাসনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালে মানুষ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে বাংলাদেশ এগিয়ে যায়। আজ বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। কথা দিয়েছিলাম, কোনো ঘর অন্ধকার থাকবে না। সেই কথা রেখেছি। আজকে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছি। দারিদ্র্য বিমোচন করেছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। বিএনপির দুঃশাসনে জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করে আমাদের ক্ষমতায় রেখেছে। আজ ২০২৩ সাল, আমরা বদলে যাওয়া বাংলাদেশে। আজকে দুর্ভিক্ষ নেই, মঙ্গা নেই। যে মানুষ একবেলা খেতে পারতো না। তারা তিন বেলা খেতে পারছে। বই বিনামূলে বিতরণ করছি। অসহায়দের ভাতা দিচ্ছি। আজকে ১০ কোটি মানুষ উপকারভোগী। আমরা বিশেষ প্রণোদনা দিয়ে শিল্প কলকারখানা চালিয়ে আসছি। ১০ টাকায় কৃষকরা অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে। ১ কোটি ২ লাখ কৃষক অ্যাকাউন্ট খুলে ভর্তুকির টাকা পাচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ডিসেম্বর আমাদের বিজয়ের মাস। জাতির পিতার নেতৃত্বে এ মাসে আমরা বিজয় অর্জন করেছি। জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচন। সেই লক্ষ্যে এখানে উপস্থিত হয়েছি।

জাতির পিতা এ দেশের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তারা শুধু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হত্যা করেছিল। বাংলাদেশের মানুষ এক সময় খুদা-দরিদ্রতায় ভুগছে। সেখান থেকে দেশকে মুক্ত দেশ করেছি। আওয়ামী লীগ সরকারই দেশকে দরিদ্রতা মুক্ত করেছে। দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছি।

বরিশালের জনসভায় ভাষণ দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : ফোকাস বাংলা

তিনি আরও বলেন, বিএনপি আমাকে ২০০৭-২০০৮ পর্যন্ত গ্রেফতার করে রেখেছে। আমাকে আটকে রেখে দেশের উন্নয়নে বাধার সৃষ্টি করতে চেয়েছে, কিন্তু পারেনি। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। আগে যে মানুষ এক বেলা খেতে পারতো তারা এখন তিন বেলা খেতে পারছে। সারাদেশ বিনা পয়সায় বই দিচ্ছি। সামাজিক নিরাপত্তা, বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা দিয়েছি। কোভিডকালীন সময়ে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। কৃষক এখন ১০ টাকায় ব্যাংক একাউন্ট খুলতে পারে। তাদের সব উপকরণ বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছি। তাদের পিছনে ২৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছি।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনে চক্রান্ত করে আওয়ামী লীগকে হারানো হয়েছিল। এরপর বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষদের অনেক অত্যাচার-নির্যাতন সইতে হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল ছিল বাংলাদেশের জন্য অন্ধকার যুগ।

তিনি বলেন, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল, ১৫ বছর আমরা ক্ষমতায়, বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। বাংলাদেশ সার্বিকভাবে রাস্তাঘাট, পুল যতদূর নির্মাণ করে দিয়েছি। খাদ্য নিরাপত্তা আমরা নিশ্চিত করেছি। যেখানে ১ কোটি ৮০ লক্ষ মেট্রিক টন খাদ্য ছিল আজ সেখানে ৪ কোটি ৯২ লক্ষ ১৬ হাজার মেট্রিক টন খাদ্য উৎপাদন হয়। যে মানুষ এক বেলা খেতে পারত না সে মানুষটা আজ ২ বেলা, ৩ বেলা খেতে পারে।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ দেশ গড়বেন। যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশের ক্ষমতা হাতে নিয়েছিলেন। রিজার্ভ মানি ছিল না, গোলায় এক ফোটা খাবার ছিল না। যুদ্ধকালী সময় কোনো ফসল মাঠে ফলেনি। রাস্তাঘাট, পুল ব্রিজ সব বিধ্বস্ত। শূন্য হাতে তিনি শুরু করেছিলেন, মাথাপিছু আয় ছিল ৯১ ডলার। জাতির পিতাকে পীড়া দিত, তাই নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে মাথাপিছু ২৭৭ ডলারে বৃদ্ধি করেন। দুইটি পোর্ট মাইন মুক্ত করা, রাস্তাঘাট উন্নত করা, হতদরিদ্রদের খাস জমি বিতরণ, বিনা পয়সায় বই কাপড় চোপড় পর্যন্ত দিয়েছিলেন। হত্যা, কু, ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে জিয়া-মুশতাক ক্ষমতায় আসে। এরপর জেনারেল এরশাদ ক্ষমতায় আসে কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি।

তিনি বলেন, বরিশাল অঞ্চলে, বিভাগে এখানে আমি আমাদের নৌ বাহিনীর ঘাটি করেছি। সেনানিবাস তৈরি করেছি। এই এলাকা উন্নয়নের জন্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র করা হয়েছে। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিচ্ছি। সেখানে সোলার প্যানেলসহ কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করেছি। ভোলার গ্যাস সিএনজি করে ঢাকায় নিচ্ছি। ভবিষ্যতে আমরা বরিশালেও নিয়ে আসব। শিল্প কারখানা যাতে গড়ে উঠে সে ব্যবস্থা আমরা করবো।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুজিববর্ষে আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম, বাংলাদেশের একটি মানুষ ও গৃহহীন, ভূমিহীন থাকবে না। আজকে আমরা প্রায় ৮ লক্ষ ৪১ হাজার ৬শ ২৩টি পরিবারকে বিনামূল্যে ঘর দিয়েছি। বরিশালের প্রতিটা উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত যদি কেউ ভূমিহীন থাকে তাকে বিনা পয়সায় ঘর দিয়ে জীবন জীবিকার ব্যবস্থা করে দিব। বেদে, হিজড়াসহ নানা ধরনের যারা অনগ্রসর এমনকি কুষ্ঠ রোগী তাদের কে ও আমরা ঘর ও জীবন জীবিকার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।

PM_Barishal-14

তিনি বলেন, আমরা রাস্তা করে দিয়েছি। কেমন রাস্তা আপনারা দেখেন। সেখানে চড়লে মনে হবে বাংলাদেশ না কোনো উন্নত দেশে যাচ্ছে। আপনাদের জন্য সুখবর আছে, ভাঙ্গা থেকে বরিশাল, কুয়াকাটা, পায়রা পোর্ট পর্যন্ত ৬ লেনের রাস্তা তৈরি করে দিব। ইতোমধ্যে ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়ে গেছে। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এর সাথে আলোচনা হয়ে, সেখান থেকে আমরা অর্থ নিবো। এই বরিশালে আর কোন দুর্ভোগ থাকবে না। আধুনিক রাস্তা তৈরি করে দিয়ে চলার পথ সহজ করে দিবো।

তিনি আরও বলেন, বরিশালে খুব বেশি মামলা হয়। ভার্চুয়াল কোর্ট আমরা করে দিয়েছি। এখানে বসেও যাতে হাইকোর্টে মামলা চলে সে ব্যবস্থা করে দিয়েছি। প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে ডিজিজটাল সিস্তেম সারা দেশে। এখন আমাদের লক্ষ ২০৪১ এর মধ্যে বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। আমাদের ছেলে মেয়ে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হবে। দক্ষ জনশক্তি হবে।

বরিশালবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা ৭ তারিখে সকাল সকাল ভোটকেন্দ্রে যাবেন। নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন। কারণ এই নৌকা নূহ নবীর নৌকা। এই নৌকা স্বাধীনতা এনেছে, দেশ থেকে দারিদ্র বিমোচন করে। এই নৌকা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছে। এবার এই নৌকায় ভোট দিলে স্মার্ট বাংলাদেশ হবে।

তরুণদের নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বিশ্বাস করি তারুণ্যের শক্তিই বাংলাদেশের অগ্রগতি। নতুন ভোটার যারা নতুন ভোটারদের কাছে আমরা আহ্বান, যারা নতুন করে ভোট দিতে আসবেন তারা নিশ্চয়ই চাইবেন না আপনার ভোট ব্যর্থ হোক। কাজে আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে নৌকাকে জয়যুক্ত করবেন।

তিনি বলেন, এই নৌকায় ভোট দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে। এই নৌকায় ভর্তি আজকে দারিদ্র্য বিমোচন হয়েছে, ভোট দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে। এই নৌকায় ভোট দিলে স্মার্ট বাংলাদেশ হবে।

বরিশালে নির্বাচনি জনসভায় বক্তব্য দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ছবি: ফোকাস বাংলা)

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা করেছি এখন আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যেই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়া। আমাদের ছেলে মেয়েরা সুশিক্ষায় শিক্ষিত হবে। আধুনিক বিজ্ঞান প্রযুক্তি শিখবে।

তিনি বলেন, দক্ষ জনশক্তি হবে তাদের স্মার্ট জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলবো। আমাদের সরকার ডিজিটাল পদ্ধতিতে স্মার্ট সরকার হবে। আমাদের অর্থনীতি স্মার্ট হবে, কৃষি যান্ত্রিকরণ হবে। আমাদের সমাজ ব্যবস্থা হবে স্মার্ট সমাজ। তার জন্য আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদের মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করতে হবে।

তিনি বরিশাল-৫ (সদর) আসনের প্রার্থীর কথা উল্লেখ করে বলেন, আপনাদের এই বরিশালে জাহিদ ফারুককে মনোনয়ন দিয়েছি। আপনারা জানেন-তাকে আমি পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছি। অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সততার সঙ্গে সে তার দায়িত্ব পালন করছে। কোথাও বন্যা-খরা হলে তখন সে ছুটে যায়। কাজেই সততার সঙ্গে যে লোকটা কাজ করছে তাকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন।

বরিশাল-৬ (বাকেরগঞ্জ) আসনের প্রার্থীর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আবদুল হাফিজ মল্লিককে মনোনয়ন দিয়েছি। তিনি বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সঙ্গে জড়িত আছেন। বঙ্গমাতা হসপিটাল দেখাশোনা করেন, সেখানে মেডিক্যাল কলেজ করবো, সেটাও তিনি দেখাশোনা করবেন।

ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর-কাঠালিয়া) আসনের প্রার্থী ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমরের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, শাহজাহান ওমর ওই সন্ত্রাসী দল (বিএনপি) ছেড়ে এখন নৌকায় উঠেছে। ঘরের ছেলে ঘরে উঠে এসেছে।

বরিশাল-৪ (হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ) আসনে নৌকার মনোনয়ন পাওয়া শাম্মী আহমেদের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বরিশাল-৪ আসনে শাম্মী আহমেদের নমিনেশনটা হাইকোর্টে আটকা পড়ে আছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ তাকেই নমিনেশন দিয়েছে।

পরিচয় শেষে প্রধানমন্ত্রী জনসাধারণের উদ্দেশে বলেন, বরিশাল বিভাগে আমরা যাদের নমিনেশন দিয়েছি তাদের আপনাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলাম।  আমি একটা কথা বলতে চাই, বারবার আওয়ামী লীগ সরকার এসেছে বলে দীর্ঘ ১৫ বছর গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলে আজ বাংলাদেশে উন্নয়ন হয়েছে।

বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বরিশাল ১ আসনের সংসদ সদস্য আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহর সভাপতিত্বে জনসভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, উপদেষ্টা মণ্ডলির সদস্য আমির হোসেন আমু, ওয়ার্কার্স পার্টির চেয়ারম্যান রাশেদ খান মেনন, আবদুল হাফিজ মল্লিক, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী স ম রেজাউল করিম, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ-ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, আওয়ামী-যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, জাতীয় পাটির (মঞ্জু) সভাপতি আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, সিটি মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত, শাজাহান ওমর বীর উত্তম, আলীগের দপ্তর সস্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, আন্তজাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, বরিশাল মহনগর আলীগের সভাপতি এ কে এম জাহাঙ্গির, সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, বরিশালে জনসভা শেষে বিকেলে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় যাবেন। সেখানে তিনি শনিবার সকালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। পরে শনিবার দিনব্যাপী গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া, কোটালীপাড়া ও মাদারীপুরে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী জনসভায় যোগদান শেষে ঢাকায় ফিরবেন।