নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, বাংলাদেশের মানুষ জেনে গেছে, কীভাবে তাদের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। গণতন্ত্র কীভাবে ফিরিয়ে আনতে হবে, তারা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে। আজকের পর থেকে কীভাবে জনগণ আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করবে, তা রাজপথে প্রমাণিত হবে। আজকের পর থেকে আওয়ামী লীগকে রাজপথে মোকাবিলা করা হবে। মামলা-হামলা দিয়ে আর জনগণকে আটকানো যাবে না। পুলিশ প্রশাসন এই ধরনের কাজ যদি অব্যাহতভাবে করতে থাকে, জনগণ তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে।
বুধবার (১২ জুলাই) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশে বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সমাবেশে আগামীতে লোকই থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন তিনি বলেন, আজকে বিএনপির এ সমাবেশের একটু দূরেই কথিত শান্তি মিটিং করছে আওয়ামী লীগ। আর একটু হলেই এ সমাবেশের লেজ গিয়ে আওয়ামী লীগের ওই শান্তি মিটিংয়ে মিলিত হয়ে যেতো। শুনতে পেলাম আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে নাকি লোকই হয়নি, আগামীতে আর লোক হবেও না।
মির্জা আব্বাস বলেন, আওয়ামী লীগের নেতারা গলা উঁচিয়ে বলে বেড়ান, যারা অশান্তি সৃষ্টি করবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। অথচ সারাদেশে ঘরে ঘরে অশান্তি সৃষ্টি করেছে এ আওয়ামী লীগ সরকার। তারা গুম, খুন, হামলা-মামলা, দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে মানুষকে অশান্তি রেখে শান্তি সমাবেশ করছেন।
তিনি বলেন, শান্তি সমাবেশ ছাড়ুন, কেটে পড়ুন। ক্ষমতা ছেড়ে কেটে পড়ুন। আমাদের মহাসচিবের ঘোষণা দেওয়ার আগেই সরে পড়ুন। ঘোষণা হয়ে গেলে কীভাবে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে নামাতে হবে, তা বাংলার জনগণ জানে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ২০০৬ সালে লগি-বৈঠা নিয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন। অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে মানুষ পিটিয়ে হত্যা করেছিলেন। লগি-বৈঠার যুগ শেষ হয়ে গেছে। লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ মেরে আর ক্ষমতায় আসাও যাবে না, থাকাও যাবে না। জনগণ শিখে গেছে আওয়ামী লীগকে কীভাবে প্রতিরোধ করতে হয়, গদি থেকে নামাতে হবে।
মির্জা আব্বাস আরও বরেন, আজকের এ মহাসমাবেশ প্রমাণ করেছে, এ সরকারের আর সময় নেই। প্রশাসনের ভাইদেরও বলি, অবৈধ এ সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন না করে জনগণের কল্যাণে কাজ করুন। কিছু বিশেষ পুলিশ কর্মকর্তা আছেন, তারা টার্গেট করেছেন- বিএনপির যাদের মামলা নেই, মামলা দিতে হবে। যাদের মামলা আছে, তাদের গ্রেফতার করতে হবে। এমনকি জজ সাহেবদের বলে তড়িঘড়ি রায় দেওয়ানো হবে। এসব কূটকৌশল ছাড়ুন। অন্যথায় জনগণের মুখোমুখি হতে হবে।
আওয়ামী লীগের হাতে এ দেশের মানুষ নিরাপদ নয় জানিয়ে আব্বাস বলেন, শুধু দেশের মানুষ নয়, গণতন্ত্র, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বও নিরাপদ নয়। কারণ এ সরকার রাষ্ট্রের প্রতিটি বিভাগ ধ্বংস করে দিয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম বিচার বিভাগ। শেখ হাসিনা বলেছেন, গণভবন ছেড়ে তিনি কোথায় যাবেন? আমি বলি- যাওয়ার তো বহু জায়গা আছে, বিদেশে অর্থপাচার করেছেন। আপনার নেতারা বেগমপাড়া বানিয়েছেন, লন্ডন-আমেরিকায় সম্পদের পাহাড় গড়েছেন, সেখানে যাবেন।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান এ দেশের মানুষকে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। সুতরাং বিএনপি একমাত্র দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে পারে। আওয়ামী লীগের হাতে গণতন্ত্র কখনোই নিরাপদ নয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বলব, দয়া করে আর যেখানে-সেখানে গুলি চালাবেন না, লাঠিচার্জ করবেন না। যারা ভালো আছেন তারা ভালো থাকবেন, আর যারা নির্যাতন চালিয়ে যাবেন, তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।