Dhaka রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আশানুরূপ প্রত্যাশা অর্জনে ব্যর্থ একাদশ সংসদ : টিআইবি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আইন প্রণয়ন থেকে শুরু করে বিরোধী দলের ভূমিকা, সংসদে রাজনৈতিক নেতাদের অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়াসহ সার্বিক বিবেচনায় জাতীয় সংসদের কাছে যে প্রত্যাশা ছিল, একাদশ সংসদ সেটি অর্জন করতে পারেনি বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

রোববার ( ১ অক্টোবর) ধানমণ্ডিতে সংস্থাটির নিজস্ব কার্যালয়ে গবেষণাপত্র উপস্থাপন কালে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।

একাদশ সংসদে অধিবেশন চলাকালে অধিকাংশ সাংসদ অতিরিক্ত মাত্রায় মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। অধিবেশনে মনোযোগ না দিয়ে ফোন ব্যবহার, খোশগল্পে মাতেন অথবা ঘুমান। টিআইবির গবেষণায় উঠে এসেছে এসব তথ্য।

গবেষণা পত্র উপস্থাপন করেন রাবেয়া আক্তার কনিকা ও আব্দুল হান্নান সাখিদার। বক্তব্য রাখেন নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সংসদের স্থায়ী কমিটিগুলো কাজ করছে না। ৫০ কমিটি রয়েছে। প্রতি মাসে কমপক্ষে একটি করে বৈঠক করার কথা থাকলেও প্রতি মাসে কোন কমিটিই বৈঠক করেনি। বর্তমান সংসদের মেয়াদ কালে একটিও সভা করেনি অর্থমন্ত্রণালয় সম্পর্কিত কমিটি। করোনা কালের ১৮ মাসে ১৩ মাসই বৈঠক করেনি স্বাস্থ্য সম্পর্কিত কমিটি।

সংসদীয় স্থায়ী কমিটির নিয়মিত বৈঠক এবং প্রতিবেদন প্ৰণনয়ন ও প্রকাশ নিশ্চিত করতে পরামর্শ দেন তিনি।

গবেষণা উঠে আসে, বর্তমান একাদশ সংসদে ৬২ দশমিক ৩ শতাংশ ব্যবসায়ী। আগের তিন মেয়াদ অষ্টম সংসদে ৫৮ শতাংশ, নবম ৫৭ শতাংশ এবং দশম সংসদে ৫৯ শতাংশ ব্যবসায়ী ছিলেন। চার মেয়াদে সংসদে ব্যবসায়ীদের হার বেড়েছে ৪ শতাংশ।

বর্তমান একাদশ সংসদে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পেশার সংসদ সদস্য হলেন আইনজীবি। আইনজীবি রয়েছেন ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ, কৃষিজীবি ১১ দশমিক ৪ শতাংশ, রাজনীতিবিদ ১১ শতাংশ।

সংসদে স্নাতকোত্তর ৪১ দশমিক ১ শতাংশ, স্নাতক ৩৯ দশমিক ৭ শতাংশ, মাধ্যমিক ১১ দশমিক ১ শতাংশ, নিম্ন মাধ্যমিক ২ দশমিক ৯ শতাংশ, নিম্নমাধ্যমিক ১ দশমিক ৪ শতাংশ, স্বশিক্ষিত ৩ দশমিক ৪ শতাংশ এবং স্বাক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন দশমিক ৩ শতাংশ। এ সব সাংসদ সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রথম বারের মত নির্বাচিত, ১০ শতাংশ ৫ বা তার অধিক বার নির্বাচিত। এ সব সংসদ সদস্যদের ২১ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে বলে টিআইবির গবেষণা পত্র থেকে জানা যায়।

সংসদে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের প্রতি আক্রমানত্মক শব্দের ব্যবহার করা হয়। নারী সদস্যের বিরুদ্ধে আপত্তিকর শব্দ ব্যবহার করা হয়। বিরোধী দলের চেয়ে সরকারি দলের ক্ষেত্রে এই সব ব্যতয় বেশি হয় বলে উল্লেখ করা হয় টিআইবির গবেষণায়। আক্রমনাত্মক শব্দের মধ্যে রয়েছে খুনি, ঘাতক, পাকিস্তানের প্রেতাত্মা, পাকিস্তানি এজেন্ট, পাকিস্তানি দোসর, কুখ্যাত, ছদ্মবেশী, রাষ্ট্রদ্রোহী, খলনায়ক, কুলাঙ্গার, মূর্খ, অগ্নিসন্ত্রাসের রানি, দুর্নীতির বরপুত্রের জননী, মিথ্যাচারিনী, চোর, জঙ্গিনেতা, বিশ্ববেয়াদব, জগত কুখ্যাত লুটেরা, দুর্নীতিবাজ, লস্কর, মানি লণ্ডারিংয়ে মাস্টার্স ইত্যাদি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ভেঙে অসংখ্য খানাখন্দে ৫৫০ কিলোমিটার বেহাল সড়কে, জনদুর্ভোগ চরমে

আশানুরূপ প্রত্যাশা অর্জনে ব্যর্থ একাদশ সংসদ : টিআইবি

প্রকাশের সময় : ১০:৫২:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ অক্টোবর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আইন প্রণয়ন থেকে শুরু করে বিরোধী দলের ভূমিকা, সংসদে রাজনৈতিক নেতাদের অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়াসহ সার্বিক বিবেচনায় জাতীয় সংসদের কাছে যে প্রত্যাশা ছিল, একাদশ সংসদ সেটি অর্জন করতে পারেনি বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

রোববার ( ১ অক্টোবর) ধানমণ্ডিতে সংস্থাটির নিজস্ব কার্যালয়ে গবেষণাপত্র উপস্থাপন কালে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।

একাদশ সংসদে অধিবেশন চলাকালে অধিকাংশ সাংসদ অতিরিক্ত মাত্রায় মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। অধিবেশনে মনোযোগ না দিয়ে ফোন ব্যবহার, খোশগল্পে মাতেন অথবা ঘুমান। টিআইবির গবেষণায় উঠে এসেছে এসব তথ্য।

গবেষণা পত্র উপস্থাপন করেন রাবেয়া আক্তার কনিকা ও আব্দুল হান্নান সাখিদার। বক্তব্য রাখেন নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সংসদের স্থায়ী কমিটিগুলো কাজ করছে না। ৫০ কমিটি রয়েছে। প্রতি মাসে কমপক্ষে একটি করে বৈঠক করার কথা থাকলেও প্রতি মাসে কোন কমিটিই বৈঠক করেনি। বর্তমান সংসদের মেয়াদ কালে একটিও সভা করেনি অর্থমন্ত্রণালয় সম্পর্কিত কমিটি। করোনা কালের ১৮ মাসে ১৩ মাসই বৈঠক করেনি স্বাস্থ্য সম্পর্কিত কমিটি।

সংসদীয় স্থায়ী কমিটির নিয়মিত বৈঠক এবং প্রতিবেদন প্ৰণনয়ন ও প্রকাশ নিশ্চিত করতে পরামর্শ দেন তিনি।

গবেষণা উঠে আসে, বর্তমান একাদশ সংসদে ৬২ দশমিক ৩ শতাংশ ব্যবসায়ী। আগের তিন মেয়াদ অষ্টম সংসদে ৫৮ শতাংশ, নবম ৫৭ শতাংশ এবং দশম সংসদে ৫৯ শতাংশ ব্যবসায়ী ছিলেন। চার মেয়াদে সংসদে ব্যবসায়ীদের হার বেড়েছে ৪ শতাংশ।

বর্তমান একাদশ সংসদে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পেশার সংসদ সদস্য হলেন আইনজীবি। আইনজীবি রয়েছেন ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ, কৃষিজীবি ১১ দশমিক ৪ শতাংশ, রাজনীতিবিদ ১১ শতাংশ।

সংসদে স্নাতকোত্তর ৪১ দশমিক ১ শতাংশ, স্নাতক ৩৯ দশমিক ৭ শতাংশ, মাধ্যমিক ১১ দশমিক ১ শতাংশ, নিম্ন মাধ্যমিক ২ দশমিক ৯ শতাংশ, নিম্নমাধ্যমিক ১ দশমিক ৪ শতাংশ, স্বশিক্ষিত ৩ দশমিক ৪ শতাংশ এবং স্বাক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন দশমিক ৩ শতাংশ। এ সব সাংসদ সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রথম বারের মত নির্বাচিত, ১০ শতাংশ ৫ বা তার অধিক বার নির্বাচিত। এ সব সংসদ সদস্যদের ২১ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে বলে টিআইবির গবেষণা পত্র থেকে জানা যায়।

সংসদে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের প্রতি আক্রমানত্মক শব্দের ব্যবহার করা হয়। নারী সদস্যের বিরুদ্ধে আপত্তিকর শব্দ ব্যবহার করা হয়। বিরোধী দলের চেয়ে সরকারি দলের ক্ষেত্রে এই সব ব্যতয় বেশি হয় বলে উল্লেখ করা হয় টিআইবির গবেষণায়। আক্রমনাত্মক শব্দের মধ্যে রয়েছে খুনি, ঘাতক, পাকিস্তানের প্রেতাত্মা, পাকিস্তানি এজেন্ট, পাকিস্তানি দোসর, কুখ্যাত, ছদ্মবেশী, রাষ্ট্রদ্রোহী, খলনায়ক, কুলাঙ্গার, মূর্খ, অগ্নিসন্ত্রাসের রানি, দুর্নীতির বরপুত্রের জননী, মিথ্যাচারিনী, চোর, জঙ্গিনেতা, বিশ্ববেয়াদব, জগত কুখ্যাত লুটেরা, দুর্নীতিবাজ, লস্কর, মানি লণ্ডারিংয়ে মাস্টার্স ইত্যাদি।