সাভার উপজেলা প্রতিনিধি :
সাভারের আশুলিয়ার আলোচিত শারমিন শিলা ওরফে ‘ক্রিম আপা’কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিউ পেতে সন্তানকে ক্যামেরার সামনে এনে নিষ্ঠুর আচরণ করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে গতকাল মামলা হয়।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে ঢাকার সাভার থেকে আশুলিয়া থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
অভিযুক্ত শারমিন শিলা আশুলিয়ায় ভাড়া বাসায় বসবাস করেন। তিনি পেশায় একজন বিউটিশিয়ান। তার বিরুদ্ধে সাভার উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কাজী ইসরাত জামান গতকাল রাতে আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, আশুলিয়ায় বসবাসকারী শারমীন শিলা ওরফে ক্রিম আপা একজন বিউটিশিয়ান। মেকআপের জন্য বিভিন্ন ধরনের ক্রিম তৈরি করে বিক্রি করেন তিনি। পণ্য বিক্রির লক্ষ্যে এবং ভিউ পেতে নিজের ছেলেমেয়েকে নিয়ে ফেসবুকসহ অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের ভিডিও তৈরি করে সেগুলো পোস্ট দেন। গত ৩০ মার্চ নিজের ফেসবুক আইডিতে এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও পোস্ট করলে সেটি ভাইরাল হয়। ওই ভিডিওতে শারমীন শিলা তার মেয়ে শিশুকে জোর করে একহাতে দিয়ে মুখে চাপ দিয়ে হা করিয়ে অপর হাত দিয়ে মেয়েকে কেক জাতীয় কিছু খেতে বাধ্য করেন।
এজহারে আরও বলা হয়, শারমীন শিলা নিজের ছেলেমেয়েদের জোর করে ক্যামেরার সামনে এনে চুলকাটা বা রং করা, কানে ভারী দুল পরানো, শিশুদের মুখে কুলকুচি করা, অপমানজনক গালিগালাজ করা, থাপ্পড় ও শারীরিক কষ্ট দিয়ে প্রতিনিয়ত ভিডিও তৈরি করছেন। তিনি ভাইরাল হওয়ার জন্য মাতৃসুলভ আচরণ না করে শিশুদের আঘাত, উৎপীড়ন, অবহেলাসহ তাদের প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করছেন।
মামলার বাদী সাভার উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কাজী ইসরাত জামান বলেন, শারমিন শিলা তার বাচ্চাদের নিয়ে যোগাযোগমাধ্যমে ভিউ বাড়াতে নিষ্ঠুর আচরণ করেন। এগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে শিশু আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছি।
আশুলিয়া থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) কামাল হোসেন বলেন, গতকাল রাতে শারমিন শিলার বিরুদ্ধে শিশু আইনের ৭০ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। এরপর থেকে শারমিন শিলা আত্মগোপনে ছিলেন। পরে পুলিশ আজ রাত ৮টার দিকে সাভার থেকে শারমিন শিলাকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে এখনো আশুলিয়া থানায় নিয়ে আসা হয়নি।
প্রসঙ্গত, গত ৩০ মার্চ নিজের ফেসবুক আইডিতে একটি ভিডিও পোস্ট করেন শারমিন শিলা, যা পরবর্তীতে ভাইরাল হয়। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, শারমিন শিলা তার মেয়ে শিশুকে জোর করে এক হাত দিয়ে মুখে চাপ দিয়ে ধরে হা করিয়ে জোর করে কেক জাতীয় কিছু খেতে বাধ্য করছেন। এ ছাড়াও তিনি তার ছেলে-মেয়েদের ক্যামেরার সামনে এনে জোর করে চুলকাটা, রং করা, কানে ভারী দুল পরানো, শিশুদের মুখে কুলকুচি করা, অপমানজনক গালিগালাজ করা, থাপ্পড় ও শারীরিক কষ্ট দিয়ে প্রতিনিয়ত ভিডিও তৈরি করেছেন।