নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের বিষয়টি সাংবিধানিক নয়, অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ে নিজের অফিস কক্ষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
নাহিদ বলেন, রাষ্ট্রপতি থাকবেন কি থাকবেন না এটা সাংবিধানিক প্রশ্ন নয়। তাই এ বিষয়ে আন্দোলনের দরকার নেই। অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে দ্রুতই যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, বঙ্গভবন বা অন্য কোথাও কোনো ধরনের বিক্ষোভ বা আন্দোলনের প্রয়োজন নেই। জনগণের মেসেজটি আমরা সবাই পেয়েছি এবং আমরা সে বিষয়ে আলোচনা করছি। আলোচনার মাধ্যমে এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে যেতে হবে। তাই সবাইকে শান্ত থাকার এবং সচেতন থাকার আহ্বান থাকবে।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার একটি গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণের সমর্থনে গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা সেসময় বিদ্যমান সংবিধান এবং রাষ্ট্রপতিকে রেখেই সরকার গঠন করেছিলাম। কিন্তু যদি আমাদের মনে হয়, এই সেট-আপে অন্তর্র্বতী সরকারের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে অথবা জনগণ এই সেট-আপে অসন্তুষ্ট, তাহলে এই বিষয়টি নিয়ে আমরা ভাবব এবং পুনর্মূল্যায়ন করছি।’
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, রাষ্ট্রপতি থাকবেন কি থাকবেন না বিষয়টি এ মুহূর্তে বাংলাদেশে আইনি বা সাংবিধানিক প্রশ্ন নয়; এটি একেবারেই রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। ফলে রাজনৈতিক সমঝোতা ও জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে এ বিষয়ে একটি সিদ্ধান্তে আসা যেতে পারে। অন্তর্র্বতী সরকারের পক্ষ থেকে সে বিষয়ে আলোচনা চলছে। বিভিন্ন অংশীজনদের সঙ্গে আমরা আলোচনা করছি। আলোচনার মাধ্যমে একটি সিদ্ধান্ত হয়তো আসবে। তবে এই সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা এবং শৃঙ্খলাকে। এ বিষয়েই এ মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, তবে এই সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা এবং শৃঙ্খলা। এটি আমাদের এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি প্রায়োরিটি। আমরা জনগণের প্রতি আহ্বান রাখছি যাতে সচেতন থাকি, শান্ত থাকি। কোনো ধরনের সুবিধাভোগী গোষ্ঠী বা নানা ধরনের যে দেশি-বিদেশি চক্রান্ত বা ষড়যন্ত্র চলছে, এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি না হয় যাতে তারা সুবিধা নিতে পারে। সে বিষয়ে আমাদের সবাই সচেতন থাকতে হবে এবং ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
নাহিদ বলেন, ‘আমরা এ বিষয়টা নিয়ে এ কারণেই মনে করছি যে রাজনৈতিক আলোচনা এবং সমঝোতার মধ্য দিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। অন্তর্র্বতীকালীন সরকার এ বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছে। জনগণের যেকোনো যৌক্তিক দাবির প্রতি আমাদের সংহতি এবং সংবিধানশীলতা রয়েছে। তবে সবার প্রতি আহ্বান থাকবে আমরা এ বিষয়ে কোনো ধরনের অরাজক পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয় সে বিষয়ে সবাই সচেতন থাকি।’
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে একটা আল্টিমেটাম দিয়েছে। আমরা আমাদের জায়গা থেকে একটা আলোচনা করছি। এ বিষয়ে কোনো নির্ধারিত সময় নেই। আমরা আলোচনা করছি। যখন আলোচনার মাধ্যমে আমরা একটা যৌক্তিক সিদ্ধান্তে যেতে পারব, যেটা আমাদের রাষ্ট্র এবং জনগণের পক্ষে যাবে, সে সময় আমরা সিদ্ধান্ত নেব এবং সবাইকে জানিয়ে দেব।’
তিনি আরও বলেন, পতিত ফ্যাসিবাদী শক্তি তারা মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে। তারা বিভিন্ন জায়গায় অস্ত্রসহ মিছিল করছে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রপাগান্ডা করছে। পাশাপাশি চাঁদাবাজ এবং সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। আমরা যাতে সে বিষয়ে দৃষ্টি রাখি। ফ্যাসিবাদী শক্তি যাতে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা যাতে ঐক্যবদ্ধভাবে একটা প্রতিরোধ তৈরি করি।