নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমি বারবারই বলি আওয়ামী লীগের একটি সমস্যা আছে, এটি হচ্ছে চরিত্রগত বৈশিষ্ট্য। বরাবরই তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না।
মঙ্গলবার (১১ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ‘নারী নেতৃত্ব অগ্রগতি বিষয়ক’ প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধনের সময় তিনি এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ বরাবরই গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। ওরা একনায়কতন্ত্র বিশ্বাসী। ওরাভাবে আর কেউ নেই। ১৯৭৪ সালের তারা সকল দলকে নিষিদ্ধ করে একটি মাত্র দল রেখেছিল। তারা প্রচার মাধ্যম বন্ধ করে রেখেছিল। মানুষের মানবিক অধিকার কেড়ে নিয়েছিল।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগের একটা চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য আছে। সে বৈশিষ্ট্য হলো তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। একনায়কতন্ত্রে বিশ্বাস করে। তারা একাই থাকবে। এজন্যই তারা সমস্ত দলগুলোকে নিষিদ্ধ করেছিল। যার উদ্দেশ্য ছিল একটিমাত্র দল থাকবে তা হলো বাকশাল।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা অসমযুদ্ধের মধ্যে আছি। এই যুদ্ধ আমাদের গণতন্ত্রকে রক্ষা করার যুদ্ধ, এই লড়াই দেশ রক্ষার, এ লড়াই আমাদের অস্তিত্বের লড়াই। সময় খুব কম। এই সময়ের মধ্যে সব মানুষকে জাগিয়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, মগবাজারে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা হয়েছে। এটা অত্যন্ত উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তমূলক। দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতেই এটা করা হচ্ছে। যারা বিরোধী দলকে দোষারোপ করতে চায় তারা এগুলো করছে। তারা তাদের বিভিন্ন সংস্থাগুলো দিয়ে এগুলো করাচ্ছে।
বিএনপি গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে লড়াই করছে এমন মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, সরকার ইচ্ছা করে দেশকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। সরকার বলছে আমরা বিরোধী দলকে কোনো বাধা দেই না। যেদিন থেকে আওয়ামী লীগ জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে তখন থেকে যত নির্বাচন করেছে সব ভাওতাবাজি। কোনো নির্বাচন হয়নি। ২০১৪ সালে তো কোনো ভোটই হয়নি। ১৫৪ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত করেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ১৯৪৭ সালের পর থেকে পাকিস্তান তারপর বাংলাদেশ। এদেশে বারবার গণতন্ত্রের চর্চা ব্যর্থ হয়েছিল। অত্যন্ত দুঃখজনক ব্যাপার, যে জন্য ১৯৭১ সালে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য। সেই গণতন্ত্র চর্চা ধ্বংস করেছে তখন ক্ষমতায় ছিল আওয়ামী লীগ। এটা পরিষ্কার কথা এবং তারা একের পর এক আইন তৈরি করেছিল ক্ষমতায় থাকার জন্য যখন জনগণ তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছিল। দেশের মানুষের সমস্যা সমাধান করতে পারছিল না, তখন তারা তারা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য বিভিন্ন কালাকানুন তৈরি করে গণতন্ত্র ধ্বংস করে।
তিনি বলেন, আমাদের মন মানসিকতায় যদি ডেমোক্রেসি না থাকে তাহলে আমরা কেউ ডেমোক্রেসি প্রতিষ্ঠা করতে পারবো না। এটি হচ্ছে মন মানসিকতার বিষয়। এক্ষেত্রে আমাদেরকে সহনশীল হতে হবে। সকলের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা দিতে হবে। দুর্ভাগ্য আমাদের সেই জাতি হিসেবে, যখন আমি আপনাদের সাথে কথা বলছি সেই মুহূর্তে এদেশে গণতন্ত্র নেই। একইভাবে এই দেশে যতগুলো রাজনৈতিক দল আছে তাদের যে গণতান্ত্রিকি স্পেস সেগুলো ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে।
ফখরুল বলেন, আজ বিদেশিদের নিয়ে কথা হচ্ছে। বিদেশিরা কেন আসছে? আজ আমেরিকা থেকে একটা টিম আসছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে একটা টিম আসছে। তারা এখানে মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও নির্বাচন সম্পর্কে জানতে এসেছেন এবং বুঝতে চায়। আর এখানে গণতন্ত্র নাই, নির্বাচন হয়নি।
তিনি বলেন, সামনে নির্বাচনে নির্ধারিত হবে যে, দেশে গণতান্ত্রিক থাকবে কি থাকবে না। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব থাকবে কি থাকবে না। তাই আজ আমাদের সকলের দায়িত্ব রুখে দাঁড়ানো।
অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, চীফ অব পার্টি (ডিআই) ডেনা এল ওলস্, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, বিএনপি নেতা রাশেদা বেগম হিরা, এ বি এম মোশাররফ হোসেন, রেহানা আক্তার রানু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।