স্পোর্টস ডেস্ক :
ঘরের মাঠে ওয়ানডে সিরিজে আয়ারল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ মেয়েরা। তবে সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ব্যর্থ টাইগ্রেসরা। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে আইরিশদের বড় লক্ষ্য তাড়ায় আশা জাগিয়েও ১২ রানে হেরেছিল নিগার সুলতানা জ্যোতি ব্রিগেড। এবার সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতেও ব্যাটিং ব্যর্থতায় ৪৭ রানে হেরেছে স্বাগতিকরা।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৩৪ রান করেছিল আয়ারল্যান্ডের মেয়েরা। জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ১৭.১ ওভারে মাত্র ৮৭ রানে গুঁটিয়ে যায় লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। এতে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে সফরকারীরা।
রান তাড়ায় নামা বাংলাদেশকে শুরুতে নাড়িয়ে দেন প্রেন্ডারগাস্টই। আগের ম্যাচে শতরানের রেকর্ড জুটি গড়া দুই ওপেনারকে এবার দ্রুতই ফেরান তিনি। তীক্ষ্নভাবে ভেতরে ঢোকা ডেলিভারি বোল্ড হয়ে যান সোবহানা মোস্তারি। স্লগ করে উইকেট বিলিয়ে দেন দিলারা আক্তার।
দলের বিপদে দাঁড়াতে পারেননি নিগার সুলতানাও। ৬ রান করে বাংলাদেশ অধিনায়ক স্টাম্পে টেনে আনেন আর্লিন কেলির বাইরের বল। পরে ওভারে যখন তাজ নেহার বিদায় নিলেন, ২২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে এরকম ছিটকে পড়ে বাংলাদেশ। তবে ফর্মে থাকা শারমিন আক্তার কিছুটা জাগিয়ে তোলেন আশা। তাকে সঙ্গ দেন স্বর্ণা আক্তার। এক-দুই করে রান নিয়ে দলকে লড়াইয়ে ফেরানোর চেষ্টা করেন দুজন।
তবে রান রেটের টানাপোড়েন বাড়ছিলই। সেই দাবি মেটাতে গিয়ে জায়গা বানিয়ে খেলার চেষ্টায় স্বর্ণা আউট হন ২০ রানে। জুটি থামে ৪২ বলে ৪৮ রানে। এই জুটি ভাঙার পর বাংলাদেশের ইনিংস ভেঙে পড়ে দ্রুতই। দ্রুত রান তোলার চেষ্টায় আউট হন ফাহিমা খাতুন। রান আউট হন জাহানারা আলম ও জান্নাতুল ফেরদৌস। শারমিনের প্রচেষ্টা শেষ হয় ক্যারিয়ার সেরা ৩৮ রানে। নাহিদা আক্তারকে বোল্ড করে ম্যাচ শেষ করেন প্রেন্ডারগাস্ট। বাংলাদেশের শেষ পাঁচ ব্যাটারের কেউ পাঁচ রানের বেশি করতে পারেনি।
বল হাতে আইরিশদের সেরা ছিলেন ওরলা প্রেন্ডারগাস্ট। ৩.১ ওভারে ১৩ রানে তার শিকার ৩ উইকেট। ২টি করে উইকেট পেয়েছেন অ্যারলিন কেলি ও লউরা ডেনালি।
সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় শুরু হবে একই মাঠে। বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করার হাতছানি আয়ারল্যান্ডের। ওয়ানডের প্রতিশোধ টি-টোয়েন্টি দিয়ে নিতে পারবে অতিথিরা?
এর আগে শুরুটা একেবারেই খারাপ ছিল না আয়ারল্যান্ডের জন্য। ওভারপ্রতি ৬ রান করেই স্কোরবোর্ডে জমা করছিলেন দুই ওপেনার গ্যাবি লুইস এবং অ্যামি হান্টার। গ্যাবি অবশ্য খানিক ধীরগতিরই ছিলেন। ১৪ রান করতে গিয়ে খেলেছিলেন বেশ অনেকটা ডটবল। কিছুটা গতি বাড়াতে গিয়েই নাহিদা আক্তারের বলে দিয়েছেন ক্যাচ। দিলারার দুর্দান্ত রিফ্লেক্সের কারণেই সাজঘরে ফিরতে হয় আইরিশ অধিনায়ককে।
অ্যামি হান্টারও খানিক পরেই ফেরেন। ২৩ বলে ২৩ রান করে দলের বড় স্কোরের ভিত গড়ে দেন তিনি। তবে ওরলা প্রেডেনগ্রাস্টই ছিলেন আজকের বড় স্কোরার। ২৫ বলে ৩২ রানের কার্যকরী একটা ইনিংস আসে ওয়ানডাউনে নামা এই ব্যাটারের কাছ থেকে। প্রেডেনগ্রাস্ট ফিরিয়ে আইরিশদের লাগাম টেনে ধরেন নাহিদা। আর অ্যামির উইকেট পেয়েছিলেন জান্নাতুল ফেরদৌস।
১৩তম ওভার থেকেই খানিক ধীর হয়ে পড়ে আইরিশদের রানের গতি। একের পর এক ডট বল খেলেছেন ক্রিজে থাকা ব্যাটাররা। শেষ পর্যন্ত বড় স্কোর আর করা হয়নি তাদের। ৫ উইকেট হারিয়ে ১৩৪ রানেই থেমে যায় সফরকারীরা।
বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী নাহিদা। ২০ রান খরচায় ২ উইকেট তার। ১টি করে উইকেট পেয়েছেন জান্নাতুল ফেরদৌস, ফাহিমা এবং জাহানারা আলম।