নিজস্ব প্রতিবেদক :
আমেরিকার আইনের চেয়ে বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সহজ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, মানুষকে ডিজিটাল নিরাপত্তা দিতে আইনটি করা হয়েছে। কাজেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের প্রশ্নই আসে না। সাংবাদিকরা যাতে এ আইনে হয়রানির শিকার না হন, সেজন্য আইন মন্ত্রণালয় কাজ করছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, মানুষকে ডিজিটাল নিরাপত্তা দিতে আইনটি করা হয়েছে। আমেরিকার আইনের চেয়ে আমাদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সহজ। ডিজিটাল নিরাপত্তার জন্য আমেরিকায় যে আইন আছে, ২০১৫ সালে সেটি করা হয়েছে। পরে ২০২২ সালে সেটি আবার সংশোধন করা হয়েছে। সেখানে সর্বোচ্চ শাস্তি রাখা হয়েছে ২০ বছরের কারাদণ্ড। আমাদের আইনে এত কারাদণ্ড নেই।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিকদের হয়রানির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, মানুষকে ডিজিটাল নিরাপত্তা দিতে আইনটি করা হয়েছে। আমেরিকার আইনের চেয়ে আমাদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সহজ। ডিজিটাল নিরাপত্তার জন্য আমেরিকায় যে আইন আছে, ২০১৫ সালে যেটি করা হয়েছে পরে ২০২২ সালে সেটি আবার সংশোধন করা হয়েছে। সেখানে সর্বোচ্চ শাস্তি রাখা হয়েছে ২০ বছরের কারাদণ্ড। আমাদের আইনে এতো কারাদণ্ড নেই। ডিজিটাল অপরাধের জন্য যদি কারও মৃত্যু হয়, তবে আমেরিকার আইনে তাতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড রাখা হয়েছে। যে কারণে আমাদের আইন তাদের চেয়ে অনেক সহজ।
মন্ত্রী বলেন, সাইবার অপরাধের জন্য অস্ট্রেলিয়ার আইনও আমাদের চেয়ে কঠিন। ২০২২ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নতুন করে আরেকটি আইন করেছে। সব দেশেই এ আইন আছে, সুতরাং এ আইন বাতিল করার প্রশ্নই আসে না। সব মানুষকে ডিজিটাল নিরাপত্তা দিতে এ আইন। তবে এ আইনের মাধ্যমে সাংবাদিকরা যাতে হয়রানির শিকার না হন, সেটি নজরে দেওয়া প্রয়োজন। আমরা এ ব্যাপারে সতর্ক আছি। আগের তুলনায় এ আইনে সাংবাদিকরা কম হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এখনো হচ্ছেন।
তবে এ আইনের মাধ্যমে সাংবাদিকরা যাতে হয়রানির শিকার না হন, সেটিতে নজরে দেওয়া প্রয়োজন বলেও জানান তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা এ ব্যাপারে সতর্ক আছি। আগের তুলনায় এ আইনে সাংবাদিকরা কম হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, আইনজীবীরাই বলেন নারী নির্যাতনের ৮০ শতাংশ মামলা ভুয়া। এভাবে অনেক আইনের অপব্যবহার হচ্ছে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহারের বিরুদ্ধে এর আগে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আরও কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সেটি আইন মন্ত্রণালয় দেখছে। সব আইনেরই অপব্যবহার হয়। কেবল ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনই নয়।
অপরাধ নিয়ে রিপোর্ট করলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করার হুমকি দেওয়া হয়। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে হাছান মাহমুদ বলেন, যারা অপরাধী, তারা তো হুমকি দেবেই। কেবল সাংবাদিকদেরই নয়, অনেককেই হুমকি দেয় অপরাধীরা, যা সমীচীন নয়। কিন্তু সাংবাদিকরা সাহস নিয়ে কাজ করলে সমাজ উপকৃত হবে।
বিএনপি জোটের সব শরিকদের নিয়ে একটি ঘোষণাপত্র দিতে চায়। কিন্তু পুরোনো ও নতুন মিত্রদের মাঝে দ্বন্দ্ব থাকার কারণে সেটি সম্ভব হচ্ছে না বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, মাঝে মাঝে বিএনপি জোট বড় হয়, ছোট হয়, আকার বড় হয়, আবার আকার ছোট হয়। অ্যামিবার মতো, আকার বড় হয়, আবার মাঝে মধ্যে ভাগ হয়ে যায়। বিএনপির জোটও হচ্ছে সে রকম। অ্যামিবা যেমন নিজেকে ভাগ করে দুটি হয়ে যায়, আবার চারটি হয়। দেখা গেলো, ওদের ২২ দলীয় জোট ছিল, আবার সেটি ভাগ হয়ে ১২ দলীয় হয়ে গেলো। আবার কয়দিন পর শুনি ৫৪ দলীয় জোট। এ জন্যই তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব। আবার তাদের মধ্যে ডান, বাম, অতি ডান, অতি বাম সবই আছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, সবাইকে একত্রিত করে একটি ঘোষণাপত্র দেওয়া বিএনপির জন্য তো কঠিন কাজ। আবার বিএনপির মধ্যে কয়েকটি ভাগ আছে। তাদের মধ্যে চেয়ারপারসনের ধারা, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসনের ধারা, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ধারা, সংস্কারপন্থিদের ধারা। সব ধারাকে এক করে কিছু করা—সেটি কঠিন কাজ। সেই কঠিন চ্যালেঞ্জের মধ্যে তারা আছে।
এ সময়ে সাংবাদিকদের কল্যাণে সরকারের সচেষ্ট থাকার কথা উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী জানান, সাংবাদিকদের সহায়তায় সরকার সচেষ্ট, সবসময় কাজ করে যাচ্ছে। সাংবাদিকরা যাতে কোনোভাবেই হয়রানির শিকার না হন, মন্ত্রী হিসেবে আমি সেই খেয়াল রাখবো ও রেখে আসছি। এ বিষয়ে কেউ যদি আমার নজরে আনে কিংবা আমার নজরে আসে, তখন তাকে সাধ্যমতো সহায়তার চেষ্টা করি। মন্ত্রী হিসেবে যেমন আপনাদের সঙ্গে আছি, যখন থাকবো না, তখনও থাকবো।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার সাংবাদিকদের কল্যাণের জন্য সবসময় কাজ করে যাচ্ছে এবং আপনারা যাতে কোনোভাবে অহেতুক হয়রানির শিকার না হন, সেটি অবশ্যই এ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে আমি খেয়াল রাখি এবং সাধ্যমত সহায়তা দিতে চেষ্টা করি।
সভায় অন্যদের মধ্যে ক্র্যাবের সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক রুদ্র মিজান, অর্থ সম্পাদক মো. এমদাদুল হক খান, সাংগঠনিক সম্পাদক বকুল আহমেদ, দফতর সম্পাদক কামাল হোসেন তালুকদার, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এস এম ফয়েজ, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মো. আবু জাফর, প্রশিক্ষণ ও তথ্যপ্রযুক্তি সম্পাদক ইসমাঈল হুসাইন ইমু, কল্যাণ সম্পাদক ওয়াসিম সিদ্দিকী, আন্তর্জাতিক সম্পাদক মো. তানভীর হাসান, কার্যনির্বাহী সদস্য আবদুল্লাহ আল মামুন, জসীম উদ্দীন ও এনামুল কবীর রূপম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।