আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
তীব্র আলোচনা-সমালোচনার পরেও শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দ্বিতীয় বারের মতো প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে লড়াই করবেন তিনি। বাইডেন এক ঘোষণায় বলেছেন, আমি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি না। তার শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা নিয়ে ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান শঙ্কা দূর করতেই এমন ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
বুধবার (৩ জুলাই) ডেমোক্র্যাটিক পার্টির আইনপ্রণেতা ও অঙ্গরাজ্যগুলোর ডেমোক্র্যাট গভর্নরদের সঙ্গে বৈঠকের সময় এবং তার নির্বাচনী প্রচারণা শিবিরের কর্মীদের কাছে করা কলে বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন তিনি।
নির্বাচনের প্রচারাভিযান কর্মীদের সঙ্গে এক ভিডিওকলে বাইডেন বলেন, আমাকে যতটা সম্ভব স্পষ্টভাবে বলতে দিন, আমি যতটা সহজ এবং সোজাভাবে বলতে পারি তা হচ্ছে আমি লড়াই চালিয়ে যাব। কেউ আমাকে বাইরে ঠেলে দিচ্ছে না।
তিনি বলেন, আমি সরে দাঁড়াচ্ছি না। আমি শেষ পর্যন্ত এই লড়াই চালিয়ে যাব এবং আমরাই জয়ী হতে যাচ্ছি। ট্রাম্পের সঙ্গে বাইডেনের প্রথম বিতর্কের পর যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন গণমাধ্যম ইঙ্গিত দিয়েছে যে, প্রেসিডেন্ট এবং তার দল স্বীকার করেছে যে, তিনি যদি তার বর্তমান সক্ষমতা জনগণকে বোঝাতে না পারেন তবে তার প্রার্থীতা কয়েকদিনের মধ্যে ভেঙে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। এমন আশঙ্কা তৈরি হওয়ার পরেই বাইডেন নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে ঘোষণা দিলেন।
এদিকে হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র কেরিন জিন পিয়েরে এ ধরনের প্রতিবেদনের তথ্য প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, বাইডেনের দৃষ্টিশক্তি এখনো ভালো আছে এবং তিনি লড়াই চালিয়ে যাবেন।
গত সপ্তাহের প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে অনেক প্রশ্নের ক্ষেত্রে বাইডেনের জবাবে বেশ অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। এরপর থেকেই তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্র নয় যুক্তরাষ্ট্রের বাইরেও তাকে নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।
বিরোধীদের দাবি, বয়সের ভারে ন্যুব্জ বাইডেন আর দেশ চালানোর মতো অবস্থায় নেই। কিন্তু সেই দাবিকে বরাবরের মতোই উড়িয়ে দিয়েছেন এই ডেমোক্র্যাট নেতা। বিতর্কে খেঁই হারানোর জন্য এরই মধ্যে বেশ কিছু কারণ দেখিয়েছেন তিনি ও তার সমর্থকরা; এর মধ্যে সবশেষটি হলো- বিদেশ ভ্রমণের ক্লান্তি।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) ভার্জিনিয়ায় একটি দলীয় প্রচারণা অনুষ্ঠানে বাইডেন বলেছেন, গত সপ্তাহে বিতর্কের মঞ্চে তিনি ‘প্রায় ঘুমিয়েই পড়েছিলেন’। বিতর্কের কিছুদিন আগে পরপর কয়েকটি দেশ ভ্রমণ করার ক্লান্তি জেঁকে বসেছিল তার শরীরে। এ জন্যই ভালো পারফরম্যান্স দেখাতে পারেননি তিনি।
সমর্থকদের সামনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, আটলান্টায় বিতর্কের আগে বিশ্বজুড়ে আমি প্রায় ১০০টি টাইম জোনের মধ্য দিয়ে কয়েকবার ভ্রমণ করেছিলাম। এটি খুব বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্ত ছিল না।
গত মাসে মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ফ্রান্স ও ইতালি সফরে গিয়েছিলেন তিনি। ইতালিতে জি৭ সম্মেলনে যোগদান শেষে গত ১৫ জুন সরাসরি যান লস অ্যাঞ্জেলসে। সেখানে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে একটি তহবিল সংগ্রহ অনুষ্ঠানে যোগ দেন বাইডেন। ওইদিনই ওয়াশিংটনে ফেরেন তিনি।