স্পোর্টস ডেস্ক :
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে বাংলাদেশ সর্বশেষ খেলেছিল ২০০৯ সালে। এরপর কেটে গিয়েছে ১৪টি বছর। অবশেষে (২৮ জুন) ঈদুল আজহার আগের দিন বাংলাদেশের ফুটবলে সেই আক্ষেপ মোচন করেছে টাইগাররা। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের এবারের আসরে নিজেদের গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ভুটানকে ৩-১ গোলে উড়িয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে জামাল ভূঁইয়ারা। বাংলাদেশের এমন জয়ে বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন ১ কোটি টাকা বোনাস ঘোষণা করেছেন।
শনিবার (১ জুলাই) বাংলাদেশ সেমিফাইনাল খেলবে কুয়েতের বিপক্ষে। তবে এ দলটি মালদ্বীপ-ভুটানের মতো নয়। কুয়েতের বিপক্ষে পিছিয়ে পড়লে ম্যাচে ফেরা কঠিন হয়ে যাবে। যেমন শুরুর ম্যাচে লেবাননের বিপক্ষে পিছিয়ে পড়ে ফিরতে পারেননি জামাল ভূঁইয়ারা।
গুরুত্বপূর্ণ সেমিফাইনালের আগে শুক্রবার (৩০ জুন) সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন হেড কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা।
ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন বাংলাদেশ হেড কোচ। তিনি বলেন, আমরা ফাইনালের জন্যই শনিবার (১ জুলাই) মাঠে নামব। বাংলাদেশের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল সাফের সেমিফাইনাল খেলা। সেই লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। শনিবার (১ জুলাই) ম্যাচে বাংলাদেশের অ্যাপ্রোচ নিয়ে প্রশ্নে কোচ হ্যাভিয়েরের উত্তর, অবশ্যই সেমিফাইনাল আমাদের প্রথম লক্ষ্য ছিল। সেটা পূরণ হওয়ায় আগামীকাল আমরা শুধুই ম্যাচ উপভোগ করতে নামব না। আমাদের লক্ষ্য এখন ফাইনাল নিশ্চিত করা।
বাংলাদেশ কোচ যোগ করেন, সেমিফাইনালের আগে ৭২ ঘণ্টা সময় পেয়েছি রিকভারির জন্য। আমরা সেটা করার চেষ্টা করেছি। বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) আমরা সেদিকেই বেশি নজর দিয়েছিলাম। শুক্রবার (৩০ জুন) আমাদের একটা ট্রেনিং সেশন আছে। আমরা আগামীকাল ম্যাচের জন্য প্রস্তুত এবং রোমাঞ্চিত। আমরা অনেকদিন পর সেমিফাইনাল খেলছি। আশা করি, বড় ফাইট হবে ম্যাচে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো কুয়েতকে হারিয়ে ফাইনালে যেতে।
তিনি বলেন, পরপর দুই ম্যাচে পিছিয়ে পড়ে জিতেছি। বিষয়টি আমাদের জন্য দারুণ ছিল। মানসিকভাবে খেলোয়াড়রা শক্ত ছিল। তাই দারুণ প্রত্যাবর্তন করেছে। সেমিফাইনালে শুরু থেকেই আমরা গোল হজম না করার দিকে নজর দেবো। কারণ, আগের দুই ম্যাচে পিছিয়ে জিতলেও সব ম্যাচে সেটা নাও হতে পারে। বিশেষ করে কুয়েতের মতো দলের বিপক্ষে। প্রথম ম্যাচে আমরা লেবাননের বিপক্ষে পিছিয়ে পড়ে কিন্তু কামব্যাক করতে পারিনি। আপনি প্রতিপক্ষকে কখনো থামাতে পারবেন, কখনো পারবেন না। কুয়েতের ম্যাচে রক্ষণ জমাট রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আগের ম্যাচগুলোতে যেভাবে গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়েছিলাম, সেটা এই ম্যাচে যাতে না হয়, সেদিকে নজর দিতে হবে।
কুয়েত সম্পর্কে বাংলাদেশ কোচ বলেছেন, আমরা সবসময়ই প্রতিপক্ষ নিয়ে বিশ্লেষণ করি। কুয়েত অবশ্যই শক্তিশালী দল। আমরা তাদের শক্তি ও দুর্বলতা খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছি। আমরা নিজেদের খেলাটা খেলতে চাই। কুয়েতকে চমকেও দিতে চাই। দলটিতে অনেক পেশাদার ফুটবল আছে। দারুণ কম্বিনেশন তাদের। কয়েকজন খেলোয়াড় আছেন যারা ব্যক্তিগত নৈপুণ্য দিয়ে ম্যাচের চিত্র বদলে দিতে পারেন। সবকিছু বিবেচনা করেই আমরা পরিকল্পনা তৈরি করছি।
ফাইনাল খেলতে চাই-দলের সবার এমন মনমানসিকতা উল্লেখ করে ক্যাবরেরা বলেছেন, সবারই এক কথা, আমরা সেমিফাইনালে উঠেছি। এখন ফাইনালে যেতে চাই। সবারই চিন্তা কিভাবে ফাইনালে খেলা যায়। আমরা ফাইনালে ওঠর জন্য লড়াই করবো। আমরা সেমিফাইনালে উঠেছি এখন সেটাই উপভোগ করবো, বিষয়টি এমন নয়। আমরা ফাইনালে ওঠার জন্য মাঠে সেরাটা দেবো।
কুয়েতের বিপক্ষে ফিফটি-ফিফটি ম্যাচ হবে মনে করেন ক্যাবরেরা, বাংলাদেশের আক্রমণভাগ ও কুয়েতের রক্ষণভাগ এবং কুয়েতের আক্রমণভাগ ও বাংলাদেশের রক্ষণভাগের লড়াই হবে ম্যাচে। আমি মনে করি, ফিফটি-ফিফটি গেম হবে। তবে আমাদের লক্ষ্য ম্যাচটি জেতা।