রংপুর জেলা প্রতিনিধি :
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদেও বলেছেন, সবসময় আমাদের আশঙ্কা ছিল, নির্বাচনে নিয়ে এসে আমাদের কোরবানি করা হবে। কোরবানি করলে নির্ভেজাল একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম কর হবে। এসব আশঙ্কা সত্যি হয় কিনা বিকেল হলেই বোঝা যাবে।
রোববার (৭ জানুয়ারি) বেলা ১১ টায় রংপুর-৩ আসনের শিশু মঙ্গল উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত পুরোপুরি মন্তব্য করা যাবেনা। সরকার আমাদের ভোট করাতে নিয়ে এসে কোরবানি দিয়ে দেয় কি না এ আশঙ্কা আমাদের এখন আছে। এটা হলে পুরোপুরি বাকশালের অবস্থায় ফিরে যাবে সরকার। তবে আমি আশাবাদী থাকতে চাই। তারপরও কুমিল্লা ও ঢাকার দোহার আসনে আমাদের প্রার্থীর সমর্থক পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পেয়েছি।
জি এম কাদের বলেছেন, সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ভোটের পরিস্থিতি বিশেষ করে ভালো মনে হচ্ছে। কোনও অঘটনের খবর পাইনি। দেশের দু-একটি জায়গায় বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া এবারের নির্বাচনি পরিবেশ সুষ্ঠু ও সুন্দর আছে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে লক্ষণ ভালো দেখছি না। অথচ সব জায়গায় ভালো হওয়ার কথা ছিলো।
জাতীয় পার্টির শঙ্কা যদি সত্যি হয় তাহলে দলের অবস্থান কী হবে- এমন প্রশ্নে জি এম কাদের বলেন, সেটা যখন হবে তখন বলবো। আগে থেকে কিছু বলতে চাই না। আমরা সার্বিক পরিস্থিতি দেখে দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবো।
২০১৮ সালের নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে কিনা, জবাবে জিএম কাদের বলেন, এখন পর্যন্ত কিছু কিছু নমুনা দেখা যাচ্ছে। কারণ তাদের লোকবল বেশি। প্রশাসন তাদের সঙ্গে পরোক্ষভাবে আছে। অনেক জায়গায় কোথাও বাধা দিচ্ছে না, চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে। এরকম তারা করে যাচ্ছে। যতদূর খবর পেয়েছি এতে আমরা উদ্বিগ্ন।
জি এম কাদের আরও বলেন, জামালপুর-কুমিল্লাসহ বিভিন্ন জায়গায় আমাদের এজেন্টদের বের করে দেওয়া হচ্ছে বলে খবর পেয়েছি। যে পুরোনো কায়দায় আওয়ামী লীগ ভোটকেন্দ্র দখল করে ভোট ডাকাতির নির্বাচন করে, এবারও সেটাই করা হচ্ছে। যদিও বারবার আশস্ত করা হয়েছিল যে, এমন কোনো ঘটনা ঘটবে না।
তিনি বলেন, তবে ওভারঅল পরিস্থিতি এখনও ভালো আছে। ভোট শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হব। এখন সব বিষয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।
রংপুর-৩ আসনের কেন্দ্রসমূহ পরিদর্শনকালে জিএম কাদেরের সাথে উপস্থিত ছিলেন জাপার কো-চেয়ারম্যান সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, মহানগর সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াছিরসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
রংপুর-৩ (সদর উপজেলা ও সিটি কর্পোরেশনের ৯ থেকে ৩৩ নং ওয়ার্ড) আসনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের দলীয় প্রতীক ‘লাঙ্গল’, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির আব্দুর রহমান রেজু ‘একতারা’, বাংলাদেশ কংগ্রেসের একরামুল হক ‘ডাব’, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সহিদুল ইসলাম ‘মশাল’, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির শফিউল আলম ‘আম’ এবং তৃতীয় লিঙ্গের স্বতন্ত্র প্রার্থী আনোয়ারা ইসলাম রানী ‘ঈগল’ প্রতীকে লড়ছেন।
এই আসন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তুষার কান্তি মন্ডলকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। ভোটযুদ্ধে এ আসনে জিএম কাদেরসহ ৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে সাধারণ ভোটারদের কাছে ‘লাঙ্গল’ ও ‘ঈগল’ রয়েছে প্রতিদ্বন্দ্বিতার আলোচনায়। এখানে মোট ভোটার ৪ লাখ ৯৪ হাজার ৭৬৮ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ২ লাখ ৪৭ হাজার ২৯৪ জন ও পুরুষ ২ লাখ ৪৭ হাজার ৪৭২ এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ২ জন।