Dhaka মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আমরা যুক্তরাষ্ট্রে ছিলাম, একজনও বলে নাই মার্কিন ঝড় আসবে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ছিলাম। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ, একজনও বলে নাই যে (মার্কিন) ঝড় আসবে।

রোববার (০৮ অক্টোবর) বিকেলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

সম্প্রতি দেশের একটি গণমাধ্যমে ‘আসছে মার্কিন ঝড়’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্ন করা হলে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

মোমেন বলেন, পত্রপত্রিকায় একটু বেশি বাড়াইয়া বলে। আমরা যুক্তরাষ্ট্রে ছিলাম। ঊদ্ধর্তন কর্মকর্তার সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ। একজনও বলেন নাই যে ঝড় আসবে। আপনারা (গণমাধ্যম) এগুলা বানান। আপনাদের মাথা-মগজের মধ্যে কিছু গন্ডগোল আছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, তারা চায় একটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। এর চেয়ে বেশি কিছু তারা চায় না। তারা কেউ বলে নাই, মার্কিন ঝড় আসবে।

বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার কথাও আসছে গণমাধ্যমে। এ বিষয়ে মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, এগুলো তো আপনারা ডেকে আনছেন। আপনারা কি নিষেধাজ্ঞা চান? আপনারা বোধ হয় চান। সেজন্য ডেকে আনতেছেন। তারা শুধুমাত্র একটা ভিসানীতি করেছে। তারা একটা স্বাধীন এবং সার্বভৌম সরকার চায়। এসব বিষয়ে তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আমরাও স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ। আমরাও নিজের ইচ্ছে মতো।

সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ান ১৫ জন সংসদ সদস্য দেশটির সরকার প্রধানের কাছে বাংলাদেশ নিয়ে একটি চিঠি দিয়েছেন। এ ব্যাপারে সরকারের অবস্থান জানতে চাইলে মোমেন বলেন, আপনারা ওসব নিয়ে অত চিন্তিত কেন? দুনিয়ার অনেক জায়গায় আমরা টাকা দিয়ে কথা বলাতে পারি। টাকা দিলে গান গাইবে। ছয় জন কংগ্রেসম্যান একটা চিঠি দিয়েছে। পরে জানা গেল, তারা না জেনে করেছে। যেটা ছিল লজ্জাজনক। আমরা অস্ট্রেলিয়াকে বিষয়টা জানাব, তাদের তথ্য ঠিক না। তখন তারা হয়ত বুঝতে পারবে, এটা ঠিক না।

মার্কিন সিনেটর বব ম্যাননদেজের দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমেরিকার তিন বারের সিনেটর, পাওয়ারফুল। সে নাকি টাকা খেয়ে উল্টা-পাল্টা কাজ করেছে। এগুলো দুনিয়াতে হয়। সে সিনেটর হলে, কংগ্রেসম্যান হলে, এমপি হলে টাকা খায় না, এটার তো গ্যারান্টি আমরা কেউ দিতে পারি না।

ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তবে নির্বাচনকে সংঘাতহীন করতে সব দলকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মার্কিন পর্যবেক্ষক দল জানতে চায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন কীভাবে হবে। আমরা তাদের জানিয়েছি, সুষ্ঠু নির্বাচন হবে, তবে সংঘাতহীন হবে কি না তার নিশ্চয়তা দিতে পারছি না। এ জন্য সব দলকে সহযোগিতার পাশাপাশি দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। তবেই, সংঘাতহীন নির্বাচন হবে।

ড. মোমেন বলেন, বিএনপি মানুষের সঙ্গে সম্পৃক্ত না। ২০১৪ সালে তারা নির্বাচন বয়কট করেছে, ২০১৮ সালে তারা এক আসনে একাধিক প্রার্থী দেওয়ায় ভরাডুবি হয়েছে। এবার আমরা একটি স্বচ্ছ, সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজন করব। এজন্য, নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করা হয়েছে, জাল ভোট যেন না হয় সে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, গণমাধ্যমের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। বিদেশি পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানানো হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, মার্কিন পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে বৈঠকে এই সরকারের আমলে বাংলাদেশের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরা হয়। তবে, আমাদের শাসনতন্ত্রে নির্বাচনকালীন সরকার বলে কিছু নেই। এ বিষয়ে মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সচিবের সঙ্গে দুই ঘণ্টাব্যাপী আলোচনা শেষে ইউরোপীয় ইউনিয়ন দূতাবাসে যান ছয় সদস্যের মার্কিন পর্যবেক্ষক দল। সন্ধ্যায় সুশীল সমাজের কয়েকজন প্রতিনিধির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তারা।

সোমবার (০৮ অক্টোবর) আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিদের সঙ্গে পৃথকভাবে সাক্ষাৎ করবে দলটি। ঢাকায় ৭ দিন অবস্থানকালে পর্যায়ক্রমে সরকারি সংস্থা, বিদেশি কূটনীতিক, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন সংস্থার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তারা।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ব্রিজ ভাঙার ৮ বছরেও ঘুম ভাঙেনি কর্তৃপক্ষের, দুর্ভোগে ১২ গ্রামের মানুষ

আমরা যুক্তরাষ্ট্রে ছিলাম, একজনও বলে নাই মার্কিন ঝড় আসবে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৮:৪১:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ অক্টোবর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ছিলাম। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ, একজনও বলে নাই যে (মার্কিন) ঝড় আসবে।

রোববার (০৮ অক্টোবর) বিকেলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

সম্প্রতি দেশের একটি গণমাধ্যমে ‘আসছে মার্কিন ঝড়’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্ন করা হলে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

মোমেন বলেন, পত্রপত্রিকায় একটু বেশি বাড়াইয়া বলে। আমরা যুক্তরাষ্ট্রে ছিলাম। ঊদ্ধর্তন কর্মকর্তার সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ। একজনও বলেন নাই যে ঝড় আসবে। আপনারা (গণমাধ্যম) এগুলা বানান। আপনাদের মাথা-মগজের মধ্যে কিছু গন্ডগোল আছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, তারা চায় একটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। এর চেয়ে বেশি কিছু তারা চায় না। তারা কেউ বলে নাই, মার্কিন ঝড় আসবে।

বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার কথাও আসছে গণমাধ্যমে। এ বিষয়ে মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, এগুলো তো আপনারা ডেকে আনছেন। আপনারা কি নিষেধাজ্ঞা চান? আপনারা বোধ হয় চান। সেজন্য ডেকে আনতেছেন। তারা শুধুমাত্র একটা ভিসানীতি করেছে। তারা একটা স্বাধীন এবং সার্বভৌম সরকার চায়। এসব বিষয়ে তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আমরাও স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ। আমরাও নিজের ইচ্ছে মতো।

সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ান ১৫ জন সংসদ সদস্য দেশটির সরকার প্রধানের কাছে বাংলাদেশ নিয়ে একটি চিঠি দিয়েছেন। এ ব্যাপারে সরকারের অবস্থান জানতে চাইলে মোমেন বলেন, আপনারা ওসব নিয়ে অত চিন্তিত কেন? দুনিয়ার অনেক জায়গায় আমরা টাকা দিয়ে কথা বলাতে পারি। টাকা দিলে গান গাইবে। ছয় জন কংগ্রেসম্যান একটা চিঠি দিয়েছে। পরে জানা গেল, তারা না জেনে করেছে। যেটা ছিল লজ্জাজনক। আমরা অস্ট্রেলিয়াকে বিষয়টা জানাব, তাদের তথ্য ঠিক না। তখন তারা হয়ত বুঝতে পারবে, এটা ঠিক না।

মার্কিন সিনেটর বব ম্যাননদেজের দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমেরিকার তিন বারের সিনেটর, পাওয়ারফুল। সে নাকি টাকা খেয়ে উল্টা-পাল্টা কাজ করেছে। এগুলো দুনিয়াতে হয়। সে সিনেটর হলে, কংগ্রেসম্যান হলে, এমপি হলে টাকা খায় না, এটার তো গ্যারান্টি আমরা কেউ দিতে পারি না।

ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তবে নির্বাচনকে সংঘাতহীন করতে সব দলকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মার্কিন পর্যবেক্ষক দল জানতে চায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন কীভাবে হবে। আমরা তাদের জানিয়েছি, সুষ্ঠু নির্বাচন হবে, তবে সংঘাতহীন হবে কি না তার নিশ্চয়তা দিতে পারছি না। এ জন্য সব দলকে সহযোগিতার পাশাপাশি দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। তবেই, সংঘাতহীন নির্বাচন হবে।

ড. মোমেন বলেন, বিএনপি মানুষের সঙ্গে সম্পৃক্ত না। ২০১৪ সালে তারা নির্বাচন বয়কট করেছে, ২০১৮ সালে তারা এক আসনে একাধিক প্রার্থী দেওয়ায় ভরাডুবি হয়েছে। এবার আমরা একটি স্বচ্ছ, সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজন করব। এজন্য, নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করা হয়েছে, জাল ভোট যেন না হয় সে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, গণমাধ্যমের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। বিদেশি পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানানো হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, মার্কিন পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে বৈঠকে এই সরকারের আমলে বাংলাদেশের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরা হয়। তবে, আমাদের শাসনতন্ত্রে নির্বাচনকালীন সরকার বলে কিছু নেই। এ বিষয়ে মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সচিবের সঙ্গে দুই ঘণ্টাব্যাপী আলোচনা শেষে ইউরোপীয় ইউনিয়ন দূতাবাসে যান ছয় সদস্যের মার্কিন পর্যবেক্ষক দল। সন্ধ্যায় সুশীল সমাজের কয়েকজন প্রতিনিধির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তারা।

সোমবার (০৮ অক্টোবর) আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিদের সঙ্গে পৃথকভাবে সাক্ষাৎ করবে দলটি। ঢাকায় ৭ দিন অবস্থানকালে পর্যায়ক্রমে সরকারি সংস্থা, বিদেশি কূটনীতিক, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন সংস্থার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তারা।