Dhaka বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আমরা ধর্মান্ধ নই, ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতি করি না : এ্যানি

লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি :

আমরা ধর্মান্ধ নই, ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতি করি না বলে—মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ও লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের ধানের শীষের প্রার্থী শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি।

বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের চরভূতা গ্রামে নারী ভোটারদের নিয়ে আয়োজিত নির্বাচনী উঠান বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, ‘আমরা ধর্মান্ধ নই। আমরা ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতি করি না। যারা ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতি করে, তারা আজকে জান্নাতের কথা বলে, জান্নাতের টিকিট দেয়; এটা বেদআত, এটা শিরক। আবার উনারা দাঁড়িপাল্লায় ভোট চায়। এই এলাকার মানুষ দাঁড়িপাল্লায় কখনো ভোট দেয়নি শুধু ধর্মান্ধের কারণে।’

তিনি বলেন, ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম সর্বপ্রথম জিয়াউর রহমান সংবিধানে লিপিবদ্ধ করেছেন। জিয়াউর রহমান বিএনপির নাম ইসলামিক দল দেননি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল নাম দিয়েছেন। কারণ এই ভূখন্ডে সব ধর্মের মানুষ বসবাস করে। সব মানুষের ধর্মের মানুষের প্রতি আমাদের সম্মান আছে, শ্রদ্ধা আছে।’

সম্প্রতি লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী জামায়াত নেতা ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিমের দেওয়া এক বক্তব্যের প্রতিবাদে হুঁশিয়ারি দিয়ে এ্যানি বলেন, বক্তব্যটি প্রত্যাহার করতে হবে।

তিনি বলেন, আপনি আমার নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে কটাক্ষ করে বক্তব্য দিয়েছেন, নেত্রীর সম্পর্কে অপপ্রচার করছেন, অবজ্ঞা করে কথা বলছেন। যেটা হাসিনা বলতো, সেটা আপনি বলেছেন। এটা আপনার কাছে আশা করিনি। আপনার মুখে খালেদা জিয়া সম্পর্কে এসব কথা মানায় না। আপনি লক্ষ্মীপুরের রাজপথে ছিলেন না। আপনি এখানে বন্যাকবলিতদের পাশে ছিলেন না।

এ্যানি আরও বলেন, সেদিন আপনি বলেছেন— এ্যানি চৌধুরী আপনার অভিভাবক। ভালো কথা, হতেই পারি। কারণ আমরা স্বচ্ছ রাজনীতি করি। কিন্তু আমার নেত্রীকে নিয়ে আপনার কথা মিথ্যা। আপনার কথায় ফ্যাসিস্টের দোসরের ছাপ। এটা মানুষ পছন্দ করে নাই। আপনার কথার তীব্র প্রতিবাদ করলাম, ঘৃণা প্রকাশ করলাম। আমরা গ্রহণ করতে পারলাম না আপনার কথা। কারণ আপনি আমাদের মা তুল্য নেত্রীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার করেছেন।

তিনি বলেন, সারা বিশ্ব আমার নেত্রীকে ইজ্জত-সম্মান দিচ্ছে। হাসিনা তাকে মাসের পর মাস জেল খাটিয়েছে, কষ্ট দিয়েছে। আর আপনি আমার নেত্রীকে অবজ্ঞা-অপমান করে কথা বলেছেন। আমরা মনে কষ্ট পেয়েছি, দুঃখ পেয়েছি। আপনার বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিতে হবে, করা উচিত। এ দেশের মানুষ আপনাকে ভোট দেবে না। কারণ আপনি খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। আপনারা যেভাবে ইসলামবিদ্বেষী হয়ে মানুষকে ওয়াদা করাচ্ছেন, তালিম দিচ্ছেন। এগুলো মানুষ গ্রহণ করেনি।

এ সময় তিনি বলেন, এ ভূখণ্ডে সব ধর্মের মানুষ বসবাস করে। সব ধর্মের মানুষের প্রতি আমরা শ্রদ্ধা ও সম্মান পোষণ করি। আমরা ধর্মান্ধ নই। আমরা ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতি করি না। যারা ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতি করে। তারাই আজ বেহেশতের টিকিট বিক্রি করে। কোনো রাজনৈতিক দল জান্নাতের টিকেট দিতে পারে না।

এ সময় এ্যানি নারী ভোটারদের উদ্দেশ করে বলেন, আপনারা বিগত সময় আমাকে ভোট দিয়ে এমপি বানিয়েছেন। আমি আপনাদের এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। আসন্ন নির্বাচনে বিজয়ী হলে আপনাদের এ ইউনিয়নের আরও ব্যাপক উন্নয়ন করবো। বিশেষ করে কৃষিক্ষেত্রের জন্য উন্নয়ন বেশি করা হবে। এই এলাকা একটি কৃষিনির্ভর এলাকা।

মাদক প্রসঙ্গে বিএনপির শীর্ষ এ নেতা বলেন, আমার লক্ষ্য হচ্ছে পুরো লক্ষ্মীপুরকে মাদকমুক্ত করা। মাদকের সঙ্গে অনেক অপরাধ জড়িত। আপনারা সবাই সজাগ থাকুন মাদকের বিষয়ে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সদর (পূর্ব) উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাইন উদ্দিন চৌধুরী রিয়াজ, সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মোফাজ্জল হোসেন, জেলা মহিলা দলের সভাপতি সাবেরা আনোয়ার, সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা আক্তার সুমি ভূঁইয়া ও ভবানীগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ আজাদ প্রমুখ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

আমরা ধর্মান্ধ নই, ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতি করি না : এ্যানি

প্রকাশের সময় : ০৫:২৯:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫

লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি :

আমরা ধর্মান্ধ নই, ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতি করি না বলে—মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ও লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের ধানের শীষের প্রার্থী শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি।

বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের চরভূতা গ্রামে নারী ভোটারদের নিয়ে আয়োজিত নির্বাচনী উঠান বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, ‘আমরা ধর্মান্ধ নই। আমরা ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতি করি না। যারা ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতি করে, তারা আজকে জান্নাতের কথা বলে, জান্নাতের টিকিট দেয়; এটা বেদআত, এটা শিরক। আবার উনারা দাঁড়িপাল্লায় ভোট চায়। এই এলাকার মানুষ দাঁড়িপাল্লায় কখনো ভোট দেয়নি শুধু ধর্মান্ধের কারণে।’

তিনি বলেন, ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম সর্বপ্রথম জিয়াউর রহমান সংবিধানে লিপিবদ্ধ করেছেন। জিয়াউর রহমান বিএনপির নাম ইসলামিক দল দেননি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল নাম দিয়েছেন। কারণ এই ভূখন্ডে সব ধর্মের মানুষ বসবাস করে। সব মানুষের ধর্মের মানুষের প্রতি আমাদের সম্মান আছে, শ্রদ্ধা আছে।’

সম্প্রতি লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী জামায়াত নেতা ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিমের দেওয়া এক বক্তব্যের প্রতিবাদে হুঁশিয়ারি দিয়ে এ্যানি বলেন, বক্তব্যটি প্রত্যাহার করতে হবে।

তিনি বলেন, আপনি আমার নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে কটাক্ষ করে বক্তব্য দিয়েছেন, নেত্রীর সম্পর্কে অপপ্রচার করছেন, অবজ্ঞা করে কথা বলছেন। যেটা হাসিনা বলতো, সেটা আপনি বলেছেন। এটা আপনার কাছে আশা করিনি। আপনার মুখে খালেদা জিয়া সম্পর্কে এসব কথা মানায় না। আপনি লক্ষ্মীপুরের রাজপথে ছিলেন না। আপনি এখানে বন্যাকবলিতদের পাশে ছিলেন না।

এ্যানি আরও বলেন, সেদিন আপনি বলেছেন— এ্যানি চৌধুরী আপনার অভিভাবক। ভালো কথা, হতেই পারি। কারণ আমরা স্বচ্ছ রাজনীতি করি। কিন্তু আমার নেত্রীকে নিয়ে আপনার কথা মিথ্যা। আপনার কথায় ফ্যাসিস্টের দোসরের ছাপ। এটা মানুষ পছন্দ করে নাই। আপনার কথার তীব্র প্রতিবাদ করলাম, ঘৃণা প্রকাশ করলাম। আমরা গ্রহণ করতে পারলাম না আপনার কথা। কারণ আপনি আমাদের মা তুল্য নেত্রীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার করেছেন।

তিনি বলেন, সারা বিশ্ব আমার নেত্রীকে ইজ্জত-সম্মান দিচ্ছে। হাসিনা তাকে মাসের পর মাস জেল খাটিয়েছে, কষ্ট দিয়েছে। আর আপনি আমার নেত্রীকে অবজ্ঞা-অপমান করে কথা বলেছেন। আমরা মনে কষ্ট পেয়েছি, দুঃখ পেয়েছি। আপনার বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিতে হবে, করা উচিত। এ দেশের মানুষ আপনাকে ভোট দেবে না। কারণ আপনি খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। আপনারা যেভাবে ইসলামবিদ্বেষী হয়ে মানুষকে ওয়াদা করাচ্ছেন, তালিম দিচ্ছেন। এগুলো মানুষ গ্রহণ করেনি।

এ সময় তিনি বলেন, এ ভূখণ্ডে সব ধর্মের মানুষ বসবাস করে। সব ধর্মের মানুষের প্রতি আমরা শ্রদ্ধা ও সম্মান পোষণ করি। আমরা ধর্মান্ধ নই। আমরা ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতি করি না। যারা ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতি করে। তারাই আজ বেহেশতের টিকিট বিক্রি করে। কোনো রাজনৈতিক দল জান্নাতের টিকেট দিতে পারে না।

এ সময় এ্যানি নারী ভোটারদের উদ্দেশ করে বলেন, আপনারা বিগত সময় আমাকে ভোট দিয়ে এমপি বানিয়েছেন। আমি আপনাদের এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। আসন্ন নির্বাচনে বিজয়ী হলে আপনাদের এ ইউনিয়নের আরও ব্যাপক উন্নয়ন করবো। বিশেষ করে কৃষিক্ষেত্রের জন্য উন্নয়ন বেশি করা হবে। এই এলাকা একটি কৃষিনির্ভর এলাকা।

মাদক প্রসঙ্গে বিএনপির শীর্ষ এ নেতা বলেন, আমার লক্ষ্য হচ্ছে পুরো লক্ষ্মীপুরকে মাদকমুক্ত করা। মাদকের সঙ্গে অনেক অপরাধ জড়িত। আপনারা সবাই সজাগ থাকুন মাদকের বিষয়ে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সদর (পূর্ব) উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাইন উদ্দিন চৌধুরী রিয়াজ, সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মোফাজ্জল হোসেন, জেলা মহিলা দলের সভাপতি সাবেরা আনোয়ার, সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা আক্তার সুমি ভূঁইয়া ও ভবানীগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ আজাদ প্রমুখ।