নিজস্ব প্রতিবেদক :
পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন বলেন, তারা আমাদের বলেছে প্রধানমন্ত্রী যে ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন করতে চান, সেটিকে সাহায্য করার জন্য তারা তাদের ভিসানীতি প্রচলন করেছে। আমরা চাইব, এ ভিসানীতির আওতায় জ্বালাও-পোড়াও বন্ধ হোক।
শনিবার (২৭ মে) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
একে আবদুল মোমেন বলেন, জ্বালাও-পোড়াওয়ের কারণে যারা একবার জ্বলেছে, তাদের চেহারা দেখলে বড় দুঃখ পাবেন। আমরা আর জ্বালাও-পোড়াও চাই না। ২০১৪ সালে তারা ৩৮০০ যানবাহন জ্বালিয়েছে, বগি জ্বালিয়েছে, স্টিমার জ্বালিয়েছে। এখন যদি জ্বালাও-পোড়াও বন্ধ হয়, দ্যাট উড বি আ ব্লেসিং।
তিনি আরও বলেন, যারা জ্বালাও-পোড়াও করে, তাদের সতর্ক হওয়া দরকার, তাদের নেতাদের সতর্ক হওয়া দরকার। আমরা ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন করব।
তিনি বলেন, সরকার কোনো রকম চাপে নেই, ভয়ও পাচ্ছে না। কাকে ভিসা দেবে আর কাকে দেবে না, এটা যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব ব্যাপার। এভাবে, নীতি নিয়ে ঢাক ঢোল পেটানো কোনো দরকার নেই। বাংলাদেশ গণতন্ত্রের পূজারি। এসব বিষয় সামনে আনার কোনো দরকার নেই।
তিনি আরও বলেন, নতুন মার্কিন ভিসা নীতিতে বিদেশে টাকা পাচার কমবে।
তিনি আরো বলেন, এই দেশে যারা ভোটারবিহীনভাবে নির্বাচিত হয়েছে, তাদের দু-তিন মাসের মধ্যে জনগণ ফেলে দিয়েছে। জনগণের রায়ে নির্বাচিত সরকার না হলে টিকতে পারবে না। আমরা জনগণের ওপর বিশ্বাস করি, জনগণের জন্য কাজ করি, আমাদের অন্য কোনো স্বার্থ নেই। মানুষের যদি মঙ্গল করে থাকি, তাহলে নিশ্চয়ই তারা আমাদের সাহায্য করবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে রাষ্ট্রদূতদের নিরাপত্তায় কোনো ঘাটতি নেই, কখনো ছিল না। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক ভালো আছে।
কোনো দেশেই বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়া হয় না জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বিদেশি কূটনীতিকরা তাদের খরচে এসকর্ট হায়ার (ভাড়া) করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে টাকা দিয়ে আনসার ব্যাটালিয়নের এসকর্ট নিতে পারবেন।
নতুন ভিসানীতি নিয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, নতুন ভিসা নীতি নিয়ে সাধারণ মানুষের চিহ্নিত হওয়ার কিছু নেই। ভিসা (যুক্তরাষ্ট্রের) বড়লোকরা নেয়, সরকারি কর্মচারী, কিছু বড় ব্যবসায়ী, সুশীল সমাজ, রাজনীতিবিদ যাদের ভিসার দরকার হয়, যাদের ছেলে-মেয়ে বিদেশে পড়ে, বিদেশে বাড়ি বানিয়েছেন, যারা টাকা পাচার করেছেন তারা চিন্তিত হবেন। এতে হয়তো আশা করি, টাকা পাচার কমবে। কারণ উনারা নিয়ে গিয়ে তো স্থাপনা তৈরি করেন। আর যারা গরিব লোক, ইলেকশনে রাজনৈতিক দলের পোলিং এজেন্ট হয়। তারা তো ভিসার জন্য আসেই না।
ভিসানীতি নিয়ে সরকার বিব্রত কি না জানতে চাইলে ড. মোমেন বলেন, মোটেও না। ভিসা দেওয়া না দেওয়া ওদের (আমেরিকা) ব্যাপার, এটি আমাদের বিষয় নয়। ভিসা আমেরিকা নিজের দায়িত্বের জন্য দেয়।
ঢাকায় নিযুক্ত ভারত ও সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূতদের বাড়তি নিরাপত্তা ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটি আমার জানা নেই। তবে বাড়তি নিরাপত্তার জন্য কোনো রাষ্ট্রদূত এখনও পর্যন্ত আবেদন করেননি। এছাড়া বিদেশি কোনো দেশ এমন অন্যায় কাজ করেনি যে তাদের ওপর হামলা হবে। আমাদের দেশে নিরাপত্তার কোনো অভাব নেই। এটি নিয়ে আমরা চিন্তিত নই।
এক প্রশ্নের উত্তরে ড. মোমেন বলেন, সাম্প্রতিককালে রাষ্ট্রদূতদের ওপর কোনো হামলা হয়নি। তবে সাবেক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের গাড়িতে হামলার ঘটনা বদিউল আলম মজুমদারের পারিবারিক সমস্যার কারণে হয়েছিল। সেটি শালা-দুলাভাইয়ের মধ্যে সমস্যা, যেটি পরে রাষ্ট্রীয় সমস্যা হয়ে গেছে।