নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, আমরা আওয়ামী লীগকে শত্রু মনে করি না। আমরা আওয়ামী লীগকে প্রতিদ্বন্দী মনে করি। আমরা আওয়ামী লীগকে পরাজিত করতে চাই ভোটের মধ্য দিয়ে। আমরা নতুন আদর্শিক মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে চাই খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ধানের শীষের বিজয়ের মধ্য দিয়ে। আমরা কাউকে নিশ্চিহ্ন করতে চাই না, ধ্বংস করতে চাই না।
শুক্রবার (১২ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সংগ্রাম পরিষদ আয়োজিত ‘অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা ও খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে’ অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গত কয়েক মাসে শেখ হাসিনার মন্তব্য শুনলে বোঝা যায়, তিনি তার প্রতিদ্বন্দ্বীকে শত্রু মনে করেন, যা অস্বাভাবিক ও গ্রহনযোগ্য নয়। সিইসি আকার-ইঙ্গিতে বলার চেষ্টা করেছেন আগামী নির্বাচনে সেনাবাহিনী থাকবে। তবে সেনাবাহিনী বা প্রশাসন প্রতিবন্ধকতা নয়, প্রধান প্রতিবন্ধকতা হলো বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় থাকাকালীন অবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া সম্ভব নয়। এজন্য আমরা কেয়ারটেকার সরকার চাই। এটা শুধু আমরাই বলছি না, আওয়ামী লীগও একসময় কেয়ারটেকার সরকারের জন্য সব রকম আন্দোলন করেছে। কিন্তু তারা এখন বলে, কোর্ট বাতিল করে দিয়েছে বলে কেয়ারটেকার সরকার দেওয়া সম্ভব নয়। এখন কোর্ট কিছু বাতিল করে দিলেই তা গ্রহণ করতে হবে ব্যাপারটা তো সেরকম নয়। পার্লামেন্ট সার্বভৌম,তারা যেটা ভুল মনে করবে, সেটা পরিবর্তন করা সম্ভব।
দুদু বলেন, বাংলাদেশে কোনো সরকারের সময় যদি সহনশীল অবস্থা থেকে থাকে, সেটি খালেদা জিয়ার সরকারের সময় ছিল। তিনি (খালেদা জিয়া) জীবনে কখনো কোনো নির্বাচনে পরাজিত হননি। তাকে আজ পাঁচটি বছর জেলখানায় আটকে রাখা হয়েছে তথাকথিত একটি মিথ্যা মামলায় বিচারের নামে দণ্ডিত বলে।
বিচার বিভাগ নিয়ে কথা বলা খুব কঠিন মন্তব্য করে ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, বিচার বিভাগ নিয়ে সত্য-মিথ্যা বলা যায় না। তারা খুব মাইন্ড করেন। কিন্তু গত পরশুদিন একটি রায় দেখলাম। সকালে দণ্ডিত, দুপুরে মামলার জামিন এবং সন্ধ্যা বা বিকেলে সেটি খারিজ। কোনো এক সময় জজ ছিলেন, যিনি এই সুবিধা পেয়েছেন। আরেকটি মামলায় দেখলাম শুধু সমালোচনা করার কারণে একজন মেয়রকে জেল দেওয়া হয়েছে এক মাস, সঙ্গে এক লাখ টাকা জরিমানা। কোনটা কী কারণে হচ্ছে, সেটি ভেবে নেওয়াই কঠিন। সেজন্য আদালত, বিচার-বিভাগ, বিচারালয়কে আমেরিকা ভিসানীতির আওতায় এনেছে কি না আমি জানি না।
দুদু বলেন,পশ্চিমা বিশ্ব যে কারণে নাখোশ হয়েছে, সেটা ঠিক করতে হলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনো বিকল্প নেই।
জাতীয়তাবাদী সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি গোলাম সরোয়ার সরকারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল আলম মাহমুদের সঞ্চালনায় অবস্থান কর্মসূচিতে বিএনপির গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক সেলিম ভূইয়া, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক কাজী রওনকুল ইসলাম টিপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য ইকবাল হোসেন শ্যামল, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রদলের সহ-সভাপতি জসিম শিকদার রানা, কৃষকদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ বক্তব্য দেন।