Dhaka শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫, ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আমতলী-তালতলী আঞ্চলিক সড়ক বেহাল, দুর্ভোগে স্থানীয়রা

বরগুনা জেলা প্রতিনিধি : 

গর্ত ও খানাখন্দ সৃষ্টি হওয়ায় বরগুনার আমতলী ও তালতলী উপজেলার আমতলী-তালতলী আঞ্চলিক সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা।

স্থানীয় সূত্র জানায়, আমতলী থেকে তালতলীর উপজেলার ফকিরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ও সোনাকাটা ইকোপার্ক পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের উপকূলীয় আঞ্চলিক সড়কটি দুই উপজেলার যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। এই সড়কটি দিয়ে হাজার হাজার মানুষের যাতায়াত করে।

সড়কটির প্রায় ২৪-২৫ কিলোমিটারজুড়ে রয়েছে হাজার হাজার গর্ত ও খানাখন্দ। এতে দুর্ভোগে পড়েছে পথচারীরা।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কের উপরিভাগের ইট-পাথরের আস্তরণ উঠে গিয়ে মাটি বেরিয়ে পড়েছে। বৃষ্টির পানি জমে থাকায় গর্তগুলো কাদাপূর্ণ ডোবায় পরিণত হয়েছে এবং সেখানে যানবাহনের চাকা প্রতিনিয়ত আটকে যাচ্ছে।

ভুক্তভোগীরা জানান, বৃষ্টি হলে সড়কটিতে পানি আটকে ছোট ছোট ডোবায় পরিণত হয়েছে। এতে যাত্রীবাহী যানবাহনগুলো এসব গর্তে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকায় যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। খানাখন্দের কারণে সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত করতে বাধ্য হন।

তালতলী উপজেলার ব্যবসায়ী আমির হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এটাকে সড়ক না বলে হাজারো খানাখন্দের ডোবা বলাই ভালো।

এই বেহাল সড়কে যান চলাচল এখন সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের কর্মকর্তারা দেখেও কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় অহরহ দুর্ঘটনা ঘটছে। তিনি দ্রুত সড়কটি সংস্কারের দাবি জানান।

আমতলীর আড়পাঙ্গাশিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সরোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, নির্মাণের এক বছর না পেরোতেই সড়কের সুরকি উঠে গিয়ে এটি খানাখন্দে ভরে গেছে। গত এক বছর ধরে এই সড়কে চলাচল করতে গিয়ে মানুষ ও যানবাহনকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আমরা সড়কটি দ্রুত মেরামতের দাবি জানাই।

ঢাকা-তালতলী রুটের দূরপাল্লার বাসচালকরা জানান, খানাখন্দে ভরা সড়কটিতে বৃষ্টি হলে গর্তগুলো পানিতে ডুবে যায়, ফলে গাড়ি চালানো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। তারা বলেন, ‘প্রায়ই বাসের চাকা পানিপূর্ণ গর্তে ফেঁসে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। এতে যাত্রীদের নিয়ে আমাদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়।’

তালতলী উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী (এলজিইডি) মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, কড়াইবাড়িয়া বাজার থেকে হরিণবাড়িয়া পর্যন্ত সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ। বরাদ্দ পাওয়া গেলে চলতি অর্থবছরের প্রথম ধাপে বৃষ্টি কমলেই সড়কটির ওই অংশ সংস্কার করা হবে। পরবর্তীতে দ্বিতীয় ধাপে তালতলী থেকে ফকিরহাট ও সোনাকাটা পর্যন্ত বাকি অংশ সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

আমতলী উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী (এলজিইডি) মো. ইদ্রিস আলী বলেন, মানিকঝুড়ি বাজার থেকে তালতলীর কচুপাত্রা পর্যন্ত সড়কটি খানাখন্দ ও ছোট বড় গর্তে ভরে গেছে। জনগুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় চলতি অর্থ-বছরের বাজেটে সংস্কার প্রকল্পের আওতায় আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।

বরগুনা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মেহেদী হাসান বলেন, ‘আমতলী-তালতলী আঞ্চলিক সড়কের বিষয়টি আমি অবগত। গুরুত্বপূর্ণ ওই সড়কটি যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কার করা যায় সে জন্য সংস্কার প্রকল্পের আওতায় আনতে কাজ চলমান রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এ ছাড়া ২৪-২৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ওই সড়কটি একসঙ্গে সংস্কার করা সম্ভব না হলেও পর্যায়ক্রমে চলতি অর্থবছরে সংস্কার করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

আমতলী-তালতলী আঞ্চলিক সড়ক বেহাল, দুর্ভোগে স্থানীয়রা

আমতলী-তালতলী আঞ্চলিক সড়ক বেহাল, দুর্ভোগে স্থানীয়রা

প্রকাশের সময় : ০৮:৩৫:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫

বরগুনা জেলা প্রতিনিধি : 

গর্ত ও খানাখন্দ সৃষ্টি হওয়ায় বরগুনার আমতলী ও তালতলী উপজেলার আমতলী-তালতলী আঞ্চলিক সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা।

স্থানীয় সূত্র জানায়, আমতলী থেকে তালতলীর উপজেলার ফকিরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ও সোনাকাটা ইকোপার্ক পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের উপকূলীয় আঞ্চলিক সড়কটি দুই উপজেলার যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। এই সড়কটি দিয়ে হাজার হাজার মানুষের যাতায়াত করে।

সড়কটির প্রায় ২৪-২৫ কিলোমিটারজুড়ে রয়েছে হাজার হাজার গর্ত ও খানাখন্দ। এতে দুর্ভোগে পড়েছে পথচারীরা।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কের উপরিভাগের ইট-পাথরের আস্তরণ উঠে গিয়ে মাটি বেরিয়ে পড়েছে। বৃষ্টির পানি জমে থাকায় গর্তগুলো কাদাপূর্ণ ডোবায় পরিণত হয়েছে এবং সেখানে যানবাহনের চাকা প্রতিনিয়ত আটকে যাচ্ছে।

ভুক্তভোগীরা জানান, বৃষ্টি হলে সড়কটিতে পানি আটকে ছোট ছোট ডোবায় পরিণত হয়েছে। এতে যাত্রীবাহী যানবাহনগুলো এসব গর্তে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকায় যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। খানাখন্দের কারণে সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত করতে বাধ্য হন।

তালতলী উপজেলার ব্যবসায়ী আমির হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এটাকে সড়ক না বলে হাজারো খানাখন্দের ডোবা বলাই ভালো।

এই বেহাল সড়কে যান চলাচল এখন সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের কর্মকর্তারা দেখেও কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় অহরহ দুর্ঘটনা ঘটছে। তিনি দ্রুত সড়কটি সংস্কারের দাবি জানান।

আমতলীর আড়পাঙ্গাশিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সরোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, নির্মাণের এক বছর না পেরোতেই সড়কের সুরকি উঠে গিয়ে এটি খানাখন্দে ভরে গেছে। গত এক বছর ধরে এই সড়কে চলাচল করতে গিয়ে মানুষ ও যানবাহনকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আমরা সড়কটি দ্রুত মেরামতের দাবি জানাই।

ঢাকা-তালতলী রুটের দূরপাল্লার বাসচালকরা জানান, খানাখন্দে ভরা সড়কটিতে বৃষ্টি হলে গর্তগুলো পানিতে ডুবে যায়, ফলে গাড়ি চালানো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। তারা বলেন, ‘প্রায়ই বাসের চাকা পানিপূর্ণ গর্তে ফেঁসে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। এতে যাত্রীদের নিয়ে আমাদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়।’

তালতলী উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী (এলজিইডি) মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, কড়াইবাড়িয়া বাজার থেকে হরিণবাড়িয়া পর্যন্ত সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ। বরাদ্দ পাওয়া গেলে চলতি অর্থবছরের প্রথম ধাপে বৃষ্টি কমলেই সড়কটির ওই অংশ সংস্কার করা হবে। পরবর্তীতে দ্বিতীয় ধাপে তালতলী থেকে ফকিরহাট ও সোনাকাটা পর্যন্ত বাকি অংশ সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

আমতলী উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী (এলজিইডি) মো. ইদ্রিস আলী বলেন, মানিকঝুড়ি বাজার থেকে তালতলীর কচুপাত্রা পর্যন্ত সড়কটি খানাখন্দ ও ছোট বড় গর্তে ভরে গেছে। জনগুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় চলতি অর্থ-বছরের বাজেটে সংস্কার প্রকল্পের আওতায় আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।

বরগুনা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মেহেদী হাসান বলেন, ‘আমতলী-তালতলী আঞ্চলিক সড়কের বিষয়টি আমি অবগত। গুরুত্বপূর্ণ ওই সড়কটি যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কার করা যায় সে জন্য সংস্কার প্রকল্পের আওতায় আনতে কাজ চলমান রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এ ছাড়া ২৪-২৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ওই সড়কটি একসঙ্গে সংস্কার করা সম্ভব না হলেও পর্যায়ক্রমে চলতি অর্থবছরে সংস্কার করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।