নিজস্ব প্রতিবেদক :
শেষ বিচারিক কর্মদিবসে বাবা-মায়ের স্মৃতিচারণ ও বিচার বিভাগ ছেড়ে যাওয়ার কথা ভেবে কেঁদেছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। সেইসঙ্গে কাঁদিয়েছেন এজলাস কক্ষে উপস্থিত অনেককেই। তার কান্নার সময় এজলাস কক্ষের অনেককেই চোখের পানি মুছতে দেখা যায়। এ সময় এজলাস কক্ষে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) আপিল বিভাগের এজলাস কক্ষে প্রধান বিচারপতির বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ দৃশ্যের অবতারণা হয়।
বক্তব্যের এক পর্যায়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, এই বিদায়মুহূর্তে আমি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি আমার মরহুম বাবা-মাকে। আমার জন্য এবং আমাদের পরিবারের প্রতিটি সদস্যের জন্য অপরিসীম কষ্ট আর ত্যাগ স্বীকার করে তারা জান্নাতবাসী হয়েছেন। তারা আমার সংগ্রামের পথে সহায়তা করেছেন।
এ কথা বলেই প্রধান বিচারপতি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি এবং কেঁদে ফেলেন। তিনি এসময় এক মিনিটের মতোও কথা বলতে পারেননি। এ সময় এজলাস কক্ষে উপস্থিত থাকা প্রধান বিচারপতির বড় মেয়ে, নাতি ও ছোট মেয়ের জামাইকেও কাঁদতে দেখা যায়। এছাড়াও এজলাস কক্ষে উপস্থিত অনেককেই আবেগাপ্লুত হতে দেখা যায়। কিছু সময়ের জন্য এজলাস কক্ষ নিস্তব্ধ হয়ে পড়ে।
এরপর প্রধান বিচারপতি আবেগঘন কণ্ঠে বলেন, আমি বিচার বিভাগকে বেশি ভালোবেসে ফেলেছিলাম এবং আমি চেষ্টা করেছি স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে।
তিনি বলেন, মানুষ শাসন বিভাগ, আইন বিভাগের প্রতি আস্থা হারাতে পারে। কিন্তু বিচার বিভাগের প্রতি আস্থা হারালে ওই জাতিকে খারাপ সময়ের জন্য, খারাপ দিনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। বিচার বিভাগ জনগণের মৌলিক অধিকারের রক্ষক, সংবিধানের রক্ষক। তাই বিচারকদের সাহসী ও সুবিচারক হতে হবে।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতি, বিপুল সংখ্যক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, দেশের ২৩তম প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী অবসরে যাচ্ছেন আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর। কিন্তু সে সময় সুপ্রিম কোর্টে অবকাশকালীন ছুটি চলবে। সে জন্য বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) প্রধান বিচারপতির বিচারিক জীবনের শেষ কর্মদিবস।