Dhaka বৃহস্পতিবার, ০৭ অগাস্ট ২০২৫, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করলেন জামায়াতের আমির

রংপুর জেলা প্রতিনিধি : 

কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

বুধবার (৭ আগস্ট) রংপুরের পীরগঞ্জের জাফরপাড়ার বাবনপুরে আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেন জামায়াত নেতারা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, রংপুর জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক গোলাম রব্বানী, মহানগর জামায়াতের আমির এটিএম আজম খান, সেক্রেটারি আবু ওবায়দুল্লাহ সালাফি, মহানগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি গোলাম জাকারিয়া, সেক্রেটারি নুরুল হুদা সহ জামায়াত ও ছাত্রশিবির নেতৃবৃন্দ।

আবু সাঈদের কবর জিয়ারত শেষে তার পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা করা হয় দলটির পক্ষ থেকে। এ সময় আবু সাঈদের মা-বাবা ও স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং সমবেদনা জানান দলটির নেতাকর্মীরা। জামায়াতের পক্ষ থেকে সারা জীবন আবু সাঈদের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেওয়া হয়।

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আগামী দিনে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে যাতে দুর্বৃত্তপনা, স্বৈরাচারী ও জুলুমবাজ কোনো সরকার না আসতে পারে সেজন্য এ প্রজন্মের যুবকদের এবং দেশবাসীকে সোচ্চার থাকতে হবে। যাতে এই বিপ্লবের ফল কেউ ‘হাইজ্যাক’ করতে না পারে। কোনো মতলববাজ, সে রাজনৈতিক বা অন্য কোনো অপশক্তি হোক আমরা কাউকে এলাউ করব না। আমরা প্রত্যেকেই পাহারাদার হিসেবে জাতির অধিকারকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করব।

জামায়াতের আমির বলেন, দ্বিতীয় স্বাধীনতা যুদ্ধের মহানায়ক হলেন আবু সাঈদ। নৈতিক ঋণ পরিশোধ করতে আমরা এখানে এসেছি। এই এলাকায় আল্লাহ এমন একটি গোলাপ ফুল আমাদেরকে দিয়েছিলেন যে গোটা জাতির ঘুম ভেঙে দিয়েছে। শুধু বাংলাদেশের নয়, সে এখন দুনিয়াবাসীর সম্পদ।। আবু সাঈদ নিজেই একটা ইতিহাস। তার ইতিহাসের সঙ্গে আর অন্য কারো ইতিহাস জুড়ে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে যারা শহীদ হয়েছেন, জীবন দিয়েছেন, তারা প্রত্যেকটা এক একটা ইতিহাস। যারা লড়াই করে গাজী হিসেবে বেঁচে আছে তারাও ইতিহাস।

অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মোহাম্মদ ইউনূসের ব্যাপারে তিনি বলেন, এই বিপ্লব আমরা করিনি, এ বিপ্লব করেছে আমাদের যুব সমাজ। এরা আমাদের সন্তান, এরা আমাদের বিপ্লবের এই আন্দোলনে ভুল করে নাই। আমরা বিশ্বাস করি এরা এখনো ভুল করবে না। বঙ্গভবনে বলেছিলাম যে এই বিপ্লবের ফার্স্ট অ্যান্ড লাস্ট স্টেক হোল্ডার হচ্ছে আমাদের যুব সমাজ। সুতরাং তাদের সাথে কথা বলে আগামীর দিকনির্দেশনা নিতে হবে। আমরা ধন্যবাদ জানাই রাষ্ট্রপতি সেটা করেছেন।

প্রসঙ্গত, রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার মদনখালী ইউনিয়নের বাবনপুরে গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে আবু সাঈদ। নয় ভাই বোনের মধ্যে আবু সাঈদ ছিল সবচেয়ে ছোট। ভাই-বোনদের মধ্যে আবু সাঈদ ছাড়া কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রাখেনি। লেখাপড়া বেশি না করায় অন্যরা কৃষি কাজসহ দিনমজুরি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। মেধাবী আবু সাঈদ অষ্টম শ্রেণি, এসএসসি, এইচএসসিতে ভালো ফল অর্জন করে এবং বৃত্তি পায়।

আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২তম ব্যাচের ইংরেজি বিভাগের চতুর্থবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার পরিবারের আশা ছিল, বিসিএস ক্যাডার হয়ে আবু সাঈদ পরিবারের হাল ধরবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে সংসদ নির্বাচনের তফসিল : ইসি সানাউল্লাহ

আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করলেন জামায়াতের আমির

প্রকাশের সময় : ০৮:০৮:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ অগাস্ট ২০২৪

রংপুর জেলা প্রতিনিধি : 

কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

বুধবার (৭ আগস্ট) রংপুরের পীরগঞ্জের জাফরপাড়ার বাবনপুরে আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেন জামায়াত নেতারা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, রংপুর জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক গোলাম রব্বানী, মহানগর জামায়াতের আমির এটিএম আজম খান, সেক্রেটারি আবু ওবায়দুল্লাহ সালাফি, মহানগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি গোলাম জাকারিয়া, সেক্রেটারি নুরুল হুদা সহ জামায়াত ও ছাত্রশিবির নেতৃবৃন্দ।

আবু সাঈদের কবর জিয়ারত শেষে তার পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা করা হয় দলটির পক্ষ থেকে। এ সময় আবু সাঈদের মা-বাবা ও স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং সমবেদনা জানান দলটির নেতাকর্মীরা। জামায়াতের পক্ষ থেকে সারা জীবন আবু সাঈদের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেওয়া হয়।

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আগামী দিনে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে যাতে দুর্বৃত্তপনা, স্বৈরাচারী ও জুলুমবাজ কোনো সরকার না আসতে পারে সেজন্য এ প্রজন্মের যুবকদের এবং দেশবাসীকে সোচ্চার থাকতে হবে। যাতে এই বিপ্লবের ফল কেউ ‘হাইজ্যাক’ করতে না পারে। কোনো মতলববাজ, সে রাজনৈতিক বা অন্য কোনো অপশক্তি হোক আমরা কাউকে এলাউ করব না। আমরা প্রত্যেকেই পাহারাদার হিসেবে জাতির অধিকারকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করব।

জামায়াতের আমির বলেন, দ্বিতীয় স্বাধীনতা যুদ্ধের মহানায়ক হলেন আবু সাঈদ। নৈতিক ঋণ পরিশোধ করতে আমরা এখানে এসেছি। এই এলাকায় আল্লাহ এমন একটি গোলাপ ফুল আমাদেরকে দিয়েছিলেন যে গোটা জাতির ঘুম ভেঙে দিয়েছে। শুধু বাংলাদেশের নয়, সে এখন দুনিয়াবাসীর সম্পদ।। আবু সাঈদ নিজেই একটা ইতিহাস। তার ইতিহাসের সঙ্গে আর অন্য কারো ইতিহাস জুড়ে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে যারা শহীদ হয়েছেন, জীবন দিয়েছেন, তারা প্রত্যেকটা এক একটা ইতিহাস। যারা লড়াই করে গাজী হিসেবে বেঁচে আছে তারাও ইতিহাস।

অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মোহাম্মদ ইউনূসের ব্যাপারে তিনি বলেন, এই বিপ্লব আমরা করিনি, এ বিপ্লব করেছে আমাদের যুব সমাজ। এরা আমাদের সন্তান, এরা আমাদের বিপ্লবের এই আন্দোলনে ভুল করে নাই। আমরা বিশ্বাস করি এরা এখনো ভুল করবে না। বঙ্গভবনে বলেছিলাম যে এই বিপ্লবের ফার্স্ট অ্যান্ড লাস্ট স্টেক হোল্ডার হচ্ছে আমাদের যুব সমাজ। সুতরাং তাদের সাথে কথা বলে আগামীর দিকনির্দেশনা নিতে হবে। আমরা ধন্যবাদ জানাই রাষ্ট্রপতি সেটা করেছেন।

প্রসঙ্গত, রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার মদনখালী ইউনিয়নের বাবনপুরে গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে আবু সাঈদ। নয় ভাই বোনের মধ্যে আবু সাঈদ ছিল সবচেয়ে ছোট। ভাই-বোনদের মধ্যে আবু সাঈদ ছাড়া কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রাখেনি। লেখাপড়া বেশি না করায় অন্যরা কৃষি কাজসহ দিনমজুরি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। মেধাবী আবু সাঈদ অষ্টম শ্রেণি, এসএসসি, এইচএসসিতে ভালো ফল অর্জন করে এবং বৃত্তি পায়।

আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২তম ব্যাচের ইংরেজি বিভাগের চতুর্থবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার পরিবারের আশা ছিল, বিসিএস ক্যাডার হয়ে আবু সাঈদ পরিবারের হাল ধরবে।