Dhaka রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫, ৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আবারো ক্যানসারে আক্রান্ত সাবিনা ইয়াসমিন , চিকিৎসা চলছে সিঙ্গাপুরে

  • বিনোদন ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০৩:৫৩:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • ১৯০ জন দেখেছেন

বিনোদন ডেস্ক : 

২০০৭ সালে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন দেশের কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন। সে সময় চিকিৎসা নিয়ে ক্যানসার জয় করে গানে নিয়মিত হয়েছিলেন তিনি। এবার আবারো ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন এ শিল্পী। চিকিৎসা নিচ্ছেন সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের ন্যাশনাল ক্যানসার সেন্টারে। জানা গেছে, ওরাল ক্যানসারে আক্রান্ত তিনি।

অনেক দিন ধরেই শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন কিংবদন্তি গায়িকা। অনেক সিনেমাতেই গানের প্রস্তাব পাচ্ছিলেন। কিন্তু নিয়মিত গাইতে পারছিলেন না। খোঁজ নিতে গেলে তার পরিবার জানায়, সুস্থই আছেন সাবিনা ইয়াসমীন।

এদিকে বেশ কিছু সূত্র এই প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছে, গুরুতর অসুস্থ শিল্পী। নতুন করে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন তিনি। এবার তিনি ওরাল ক্যানসারের শিকার। উন্নত চিকিৎসা চলছে সিঙ্গাপুরের জেনারেল হাসপাতালের ন্যাশনাল ক্যানসার সেন্টারে। এরই মধ্যে একটি সার্জারি সম্পন্ন হয়েছে। খুব দ্রুতই দেওয়া হবে রেডিওথেরাপিও।

পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে গানের ভুবনে বিচরণ করছেন সাবিনা ইয়াসমিন। উপমহাদেশের বিখ্যাত দুই কণ্ঠশিল্পী কিশোর কুমার ও মান্না দে’র সঙ্গেও গান গেয়েছেন সাবিনা ইয়াসমিন।

কিংবদন্তি এই শিল্পীর জন্ম ১৯৫৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরায়। কণ্ঠশিল্পী ফরিদা ইয়াসমীন, ফওজিয়া খান ও নীলুফার ইয়াসমীন তার আপন বোন। বড় বোন ফরিদা ইয়াসমীনের সঙ্গে ছোট থেকেই দুর্গাপ্রসাদ রায়ের কাছে গান শিখতেন সাবিনা ইয়াসমীন। পরবর্তী সময়ে ওস্তাদ পি সি গোমেজের কাছে একটানা ১৩ বছর তালিম নেন। মাত্র সাত বছর বয়সে স্টেজ প্রোগ্রামে অংশ নেন সাবিনা ইয়াসমীন। ছোটদের সংগঠন খেলাঘরের সদস্য হিসেবে রেডিও-টেলিভিশনে গান করতেন নিয়মিত।

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের গানের পাশাপাশি তিনি দেশাত্মবোধক গান থেকে শুরু করে উচ্চাঙ্গ, ধ্রুপদী, লোকসঙ্গীত ও আধুনিক বাংলা গানসহ বিভিন্ন ধারার নানান আঙ্গিকের সুরে গান গেয়ে নিজেকে দেশের অন্যতম সেরা সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়ে তিনি ১৪টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন। শিল্পকলার সঙ্গীত শাখায় অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ১৯৮৪ সালে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক রাষ্ট্রীয় সম্মাননা একুশে পদক এবং ১৯৯৬ সালে সর্বোচ্চ বেসামরিক রাষ্ট্রীয় সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে।

সাবিনা শৈশব থেকে গানের তালিম নেয়া শুরু করেন। তিনি সাত বছর বয়সে প্রথম মঞ্চানুষ্ঠানে অংশ নেন এবং খেলাঘর নামে একটি বেতার অনুষ্ঠানে ছোটদের গান করতেন। ১৯৬২ সালে নতুন সুর চলচ্চিত্রে রবীন ঘোষের সুরে ছোটদের গানে অংশ নেন। চলচ্চিত্রে পূর্ণ নেপথ্য সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে তার আত্মপ্রকাশ ঘটে ১৯৬৭ সালে আগুন নিয়ে খেলা চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে। ১৯৭২ সালে অবুঝ মন চলচ্চিত্রের ‘শুধু গান গেয়ে পরিচয়’ গানে কণ্ঠ দিয়ে তিনি প্রথম জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।

এ শিল্পীর উল্লেখযোগ্য গানগুলোর মধ্যে রয়েছে: সব সখীরে পার করিতে, এই পৃথীবির পরে, মন যদি ভেঙে যায়, ও আমার রসিয়া বন্ধুরে, জীবন মানেই যন্ত্রণা, জন্ম আমার ধন্য হলো মা গো, সব ক’টা জানালা খুলে দাও না, ও আমার বাংলা মা, মাঝি নাও ছাড়িয়া দে, সুন্দর সুবর্ণ, একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার প্রভৃতি।

সাবিনা ইয়াসমিন শেষ প্লেব্যাক করেছেন প্রয়াত চিত্রনায়িকা ও নির্মাতা কবরী পরিচালিত ‘এই তুমি সেই তুমি’ ছবির ‘দুটি চোখে ছিল কিছু নীরব কথা’ শিরোনামের একটি গানে। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে গানটিতে কণ্ঠ দেন তিনি। এ ছাড়া কবরীর ‘এই তুমি সেই তুমি’ ছবির চারটি গানে সুরও দেন তিনি। এর মাধ্যমে ক্যারিয়ারে প্রথমবার তিনি সুরকার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

১৫ বছর যে বিএনপির জন্য লড়াই করলাম, তারাই এখন ধাক্কা দেয় : রুমিন ফারহানা

আবারো ক্যানসারে আক্রান্ত সাবিনা ইয়াসমিন , চিকিৎসা চলছে সিঙ্গাপুরে

প্রকাশের সময় : ০৩:৫৩:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

বিনোদন ডেস্ক : 

২০০৭ সালে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন দেশের কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন। সে সময় চিকিৎসা নিয়ে ক্যানসার জয় করে গানে নিয়মিত হয়েছিলেন তিনি। এবার আবারো ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন এ শিল্পী। চিকিৎসা নিচ্ছেন সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের ন্যাশনাল ক্যানসার সেন্টারে। জানা গেছে, ওরাল ক্যানসারে আক্রান্ত তিনি।

অনেক দিন ধরেই শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন কিংবদন্তি গায়িকা। অনেক সিনেমাতেই গানের প্রস্তাব পাচ্ছিলেন। কিন্তু নিয়মিত গাইতে পারছিলেন না। খোঁজ নিতে গেলে তার পরিবার জানায়, সুস্থই আছেন সাবিনা ইয়াসমীন।

এদিকে বেশ কিছু সূত্র এই প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছে, গুরুতর অসুস্থ শিল্পী। নতুন করে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন তিনি। এবার তিনি ওরাল ক্যানসারের শিকার। উন্নত চিকিৎসা চলছে সিঙ্গাপুরের জেনারেল হাসপাতালের ন্যাশনাল ক্যানসার সেন্টারে। এরই মধ্যে একটি সার্জারি সম্পন্ন হয়েছে। খুব দ্রুতই দেওয়া হবে রেডিওথেরাপিও।

পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে গানের ভুবনে বিচরণ করছেন সাবিনা ইয়াসমিন। উপমহাদেশের বিখ্যাত দুই কণ্ঠশিল্পী কিশোর কুমার ও মান্না দে’র সঙ্গেও গান গেয়েছেন সাবিনা ইয়াসমিন।

কিংবদন্তি এই শিল্পীর জন্ম ১৯৫৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরায়। কণ্ঠশিল্পী ফরিদা ইয়াসমীন, ফওজিয়া খান ও নীলুফার ইয়াসমীন তার আপন বোন। বড় বোন ফরিদা ইয়াসমীনের সঙ্গে ছোট থেকেই দুর্গাপ্রসাদ রায়ের কাছে গান শিখতেন সাবিনা ইয়াসমীন। পরবর্তী সময়ে ওস্তাদ পি সি গোমেজের কাছে একটানা ১৩ বছর তালিম নেন। মাত্র সাত বছর বয়সে স্টেজ প্রোগ্রামে অংশ নেন সাবিনা ইয়াসমীন। ছোটদের সংগঠন খেলাঘরের সদস্য হিসেবে রেডিও-টেলিভিশনে গান করতেন নিয়মিত।

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের গানের পাশাপাশি তিনি দেশাত্মবোধক গান থেকে শুরু করে উচ্চাঙ্গ, ধ্রুপদী, লোকসঙ্গীত ও আধুনিক বাংলা গানসহ বিভিন্ন ধারার নানান আঙ্গিকের সুরে গান গেয়ে নিজেকে দেশের অন্যতম সেরা সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়ে তিনি ১৪টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন। শিল্পকলার সঙ্গীত শাখায় অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ১৯৮৪ সালে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক রাষ্ট্রীয় সম্মাননা একুশে পদক এবং ১৯৯৬ সালে সর্বোচ্চ বেসামরিক রাষ্ট্রীয় সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে।

সাবিনা শৈশব থেকে গানের তালিম নেয়া শুরু করেন। তিনি সাত বছর বয়সে প্রথম মঞ্চানুষ্ঠানে অংশ নেন এবং খেলাঘর নামে একটি বেতার অনুষ্ঠানে ছোটদের গান করতেন। ১৯৬২ সালে নতুন সুর চলচ্চিত্রে রবীন ঘোষের সুরে ছোটদের গানে অংশ নেন। চলচ্চিত্রে পূর্ণ নেপথ্য সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে তার আত্মপ্রকাশ ঘটে ১৯৬৭ সালে আগুন নিয়ে খেলা চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে। ১৯৭২ সালে অবুঝ মন চলচ্চিত্রের ‘শুধু গান গেয়ে পরিচয়’ গানে কণ্ঠ দিয়ে তিনি প্রথম জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।

এ শিল্পীর উল্লেখযোগ্য গানগুলোর মধ্যে রয়েছে: সব সখীরে পার করিতে, এই পৃথীবির পরে, মন যদি ভেঙে যায়, ও আমার রসিয়া বন্ধুরে, জীবন মানেই যন্ত্রণা, জন্ম আমার ধন্য হলো মা গো, সব ক’টা জানালা খুলে দাও না, ও আমার বাংলা মা, মাঝি নাও ছাড়িয়া দে, সুন্দর সুবর্ণ, একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার প্রভৃতি।

সাবিনা ইয়াসমিন শেষ প্লেব্যাক করেছেন প্রয়াত চিত্রনায়িকা ও নির্মাতা কবরী পরিচালিত ‘এই তুমি সেই তুমি’ ছবির ‘দুটি চোখে ছিল কিছু নীরব কথা’ শিরোনামের একটি গানে। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে গানটিতে কণ্ঠ দেন তিনি। এ ছাড়া কবরীর ‘এই তুমি সেই তুমি’ ছবির চারটি গানে সুরও দেন তিনি। এর মাধ্যমে ক্যারিয়ারে প্রথমবার তিনি সুরকার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।