Dhaka সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আফতাবনগর-বনশ্রীর মাঝে ৩ সেতুর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজধানীর বনশ্রী-আফতাবনগর অঞ্চলের বাসিন্দাদের যাতায়াত সহজ করার লক্ষ্যে নড়াই নদীর (রামপুরা খাল) ওপর পৃথক তিনটি সেতুর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২টায় আফতাবনগরের লেকভিউ রোডে সেতুগুলোর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।

ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, তিনটি সেতুর মধ্যে দুটি যানবাহন চলাচলের জন্য এবং একটি পায়ে হাঁটার জন্য নির্ধারণ করা হবে। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কারিগরি সহায়তায় সেতুগুলো নির্মাণ করা হবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, আফতাবনগর–বনশ্রী এলাকার সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের চাহিদা পূরণের অংশ হিসেবেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে আফতাবনগরে যানবাহনের চাপ বেড়ে যাবে এবং প্রগতি সরণির যানজট নিরসনসহ মেট্রোরেল প্রকল্প চলাকালে মানুষের বিড়ম্বনা কমাতেই এ সেতুগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে।

মোহাম্মদ এজাজ বলেন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন নাগরিকদের প্রতি অনুগ্রহ নয়, এটি তাদের অধিকার। সেই অধিকার বাস্তবায়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

এ সময় তিনি নিয়মিত হোল্ডিং ট্যাক্স প্রদানের আহ্বান জানান এবং বলেন, সঠিকভাবে ট্যাক্স দিলে নাগরিক সমস্যা আরও দ্রুত সমাধান সম্ভব হবে।

প্রশাসক হাউজিং সোসাইটিগুলোর অপরিকল্পিত কার্যক্রমকে নগরায়ণের বড় অন্তরায় হিসেবে উল্লেখ করে জানান, ভবিষ্যতের ঢাকায় খেলার মাঠ, পাবলিক স্পেসসহ নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে স্থানীয় পর্যায়ে অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মামুনুল হাসান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মঈন উদ্দিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. সারওয়ার এবং ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর জাহাঙ্গীর আদিল সামদানি প্রমুখ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আফতাবনগর, বনশ্রী, রামপুরার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

আফতাবনগর ও বনশ্রী পাশাপাশি দুটি এলাকা। পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা হওয়ায় বসবাসের জন্য বাসিন্দাদের কাছে বেশ পছন্দের এলাকা দুটি। কিন্তু আফতাবনগর ও বনশ্রীর মাঝখানে অবস্থিত নড়াই নদী ওই দুইটি এলাকাকে আলাদা করেছে। নদী হলেও এটি দেখতে মৃতপ্রায় খালের মতো।

খুব কাছাকাছি হওয়ার পরও খালের মতো এই নড়াই নদী আফতাবনগর ও বনশ্রী এলাকার দূরত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে অনেক। মূলত নড়াই নদীর ওপর কোনো সেতু না থাকায় বেড়েছে এই দূরত্ব। ফলে আফতাবনগরের লেক ভিউ রোড থেকে বনশ্রী যানবাহনে যাতায়াতে সময় লাগে আধাঘণ্টারও বেশি, বাড়তি ঘুরতে হয় প্রায় ছয় কিলোমিটার। আবার মেরাদিয়া-বনশ্রী থেকে কেউ আফতাবনগর যেতে চাইলে বাড্ডা ইউলুপ ব্যবহার করতে হয়। এক্ষেত্রে দূরত্ব বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় সাত কিলোমিটারে।

যানবাহনে দীর্ঘপথ পাড়ি দেওয়ার ভোগান্তি কমাতে হেঁটে যাওয়ার জন্য আফতাবনগর থেকে মেরাদিয়া, বনশ্রী ও রামপুরা বরাবর পৃথক চারটি বাঁশের সাঁকো তৈরি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। খুব বেশি জরুরি না হলে তারা যানবাহনের পরিবর্তে বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করেন। তবে সাঁকোগুলো এখন নড়বড়ে ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা। বিশেষ করে বয়স্ক ও স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা বেশি দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।

এ দুর্ভোগ লাঘবেই ডিএনসিসি তিনটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। এ নিয়ে গত ৯ আগস্ট ‘আফতাবনগর-বনশ্রীবাসীর কষ্ট কমাতে নড়াই নদীতে হবে ৩ সেতু’ শিরোনামে জাগো নিউজে একটি বিশেষ প্রতিবেদন ছাপানো হয়েছিল।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

আফতাবনগর-বনশ্রীর মাঝে ৩ সেতুর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন

প্রকাশের সময় : ০২:৫৬:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজধানীর বনশ্রী-আফতাবনগর অঞ্চলের বাসিন্দাদের যাতায়াত সহজ করার লক্ষ্যে নড়াই নদীর (রামপুরা খাল) ওপর পৃথক তিনটি সেতুর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২টায় আফতাবনগরের লেকভিউ রোডে সেতুগুলোর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।

ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, তিনটি সেতুর মধ্যে দুটি যানবাহন চলাচলের জন্য এবং একটি পায়ে হাঁটার জন্য নির্ধারণ করা হবে। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কারিগরি সহায়তায় সেতুগুলো নির্মাণ করা হবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, আফতাবনগর–বনশ্রী এলাকার সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের চাহিদা পূরণের অংশ হিসেবেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে আফতাবনগরে যানবাহনের চাপ বেড়ে যাবে এবং প্রগতি সরণির যানজট নিরসনসহ মেট্রোরেল প্রকল্প চলাকালে মানুষের বিড়ম্বনা কমাতেই এ সেতুগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে।

মোহাম্মদ এজাজ বলেন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন নাগরিকদের প্রতি অনুগ্রহ নয়, এটি তাদের অধিকার। সেই অধিকার বাস্তবায়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

এ সময় তিনি নিয়মিত হোল্ডিং ট্যাক্স প্রদানের আহ্বান জানান এবং বলেন, সঠিকভাবে ট্যাক্স দিলে নাগরিক সমস্যা আরও দ্রুত সমাধান সম্ভব হবে।

প্রশাসক হাউজিং সোসাইটিগুলোর অপরিকল্পিত কার্যক্রমকে নগরায়ণের বড় অন্তরায় হিসেবে উল্লেখ করে জানান, ভবিষ্যতের ঢাকায় খেলার মাঠ, পাবলিক স্পেসসহ নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে স্থানীয় পর্যায়ে অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মামুনুল হাসান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মঈন উদ্দিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. সারওয়ার এবং ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর জাহাঙ্গীর আদিল সামদানি প্রমুখ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আফতাবনগর, বনশ্রী, রামপুরার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

আফতাবনগর ও বনশ্রী পাশাপাশি দুটি এলাকা। পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা হওয়ায় বসবাসের জন্য বাসিন্দাদের কাছে বেশ পছন্দের এলাকা দুটি। কিন্তু আফতাবনগর ও বনশ্রীর মাঝখানে অবস্থিত নড়াই নদী ওই দুইটি এলাকাকে আলাদা করেছে। নদী হলেও এটি দেখতে মৃতপ্রায় খালের মতো।

খুব কাছাকাছি হওয়ার পরও খালের মতো এই নড়াই নদী আফতাবনগর ও বনশ্রী এলাকার দূরত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে অনেক। মূলত নড়াই নদীর ওপর কোনো সেতু না থাকায় বেড়েছে এই দূরত্ব। ফলে আফতাবনগরের লেক ভিউ রোড থেকে বনশ্রী যানবাহনে যাতায়াতে সময় লাগে আধাঘণ্টারও বেশি, বাড়তি ঘুরতে হয় প্রায় ছয় কিলোমিটার। আবার মেরাদিয়া-বনশ্রী থেকে কেউ আফতাবনগর যেতে চাইলে বাড্ডা ইউলুপ ব্যবহার করতে হয়। এক্ষেত্রে দূরত্ব বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় সাত কিলোমিটারে।

যানবাহনে দীর্ঘপথ পাড়ি দেওয়ার ভোগান্তি কমাতে হেঁটে যাওয়ার জন্য আফতাবনগর থেকে মেরাদিয়া, বনশ্রী ও রামপুরা বরাবর পৃথক চারটি বাঁশের সাঁকো তৈরি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। খুব বেশি জরুরি না হলে তারা যানবাহনের পরিবর্তে বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করেন। তবে সাঁকোগুলো এখন নড়বড়ে ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা। বিশেষ করে বয়স্ক ও স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা বেশি দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।

এ দুর্ভোগ লাঘবেই ডিএনসিসি তিনটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। এ নিয়ে গত ৯ আগস্ট ‘আফতাবনগর-বনশ্রীবাসীর কষ্ট কমাতে নড়াই নদীতে হবে ৩ সেতু’ শিরোনামে জাগো নিউজে একটি বিশেষ প্রতিবেদন ছাপানো হয়েছিল।