স্পোর্টস ডেস্ক :
তিন ম্যাচ ওয়ানডেতে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে আফগানিস্তানকে ৬৮ রানে হারিয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে সমতা ফেরাল বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২৫২ রান সংগ্রহ গড়ে টাইগাররা। ২৫৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে ১৮৪ রানে গুটিয়ে যায় আফগানরা।
শনিবার (৯ নভেম্বর) শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে এই জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।
২৫৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই রহমানুল্লাহ গুরবাজের উইকেট তুলে নেন তাসকিন আহমেদ। এরপরই ৫২ রানের জুটি গড়ে তোলেন সেদিকুল্লাহ আতাল এবং রহমত শাহ। এই জুটি ভাঙেন নাসুম আহমেদ। ৫১ বলে ৩৯ রান করে আউট হন আতাল। এরপর নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট পড়তে থাকে আফগানদের।
মোস্তাফিজুর রহমানের বলে হাশমতউল্লাহ শহিদি আউট হন ১৭ রান করে। আজমতউল্লাহ ওমরজাই গোল্ডেন ডাক মেরে বসেন, নাসুম আহমেদের বলে বোল্ড হয়ে। গুলবাদিন নাইব ২৬ রান করে আউট হন। মোহাম্মদ নবি করেন ১৭ রান। রশিদ খান ১৪ রান করে আউট হন মোস্তাফিজের বলে। পরের ব্যাটাররা দাঁড়াতেই পারেনি বাংলাদেশের বোলারদের সামনে। শেষ পর্যন্ত ৪৩.৩ ওভারে ১৮৪ রান করে অলআউট আফগানিস্তান।
নাসুম আহমেদ নেন ৩ উইকেট। ২টি করে উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও মোস্তাফিজুর রহমান। একটি উইকেট নেন শরিফুল ইসলাম ও তাসকিন আহমেদ। ব্যাট হাতে ৭৬ রানের সময়োপযোগী ইনিংস খেলা অধিনায়ক শান্ত ম্যাচসেরা হয়েছেন।
এর আগে টস জিতে আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেওয়া বাংলাদেশের হয়ে ইতিবাচক শুরু করেন তানজিদ হাসান তামিম। আফগান পেসার ফজলহক ফারুকীকে শুরুতে প্রভাব বিস্তার করতে দেননি তামিম। ফারুকীর বিপক্ষে বেছে নিয়েছিলেন প্রতিআক্রমণে ছক, সফলও হয়েছেন।
ইনিংস অবশ্য বড় করতে পারেননি। তবে তার ১৭ বলে ২২ রানের ইনিংসটি শুরুতে আস্থা দিয়েছে বাংলাদেশকে। তারপর অপর ওপেনার সৌম্য সরকারকে নিয়ে দারুণভাবে এগিয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। গত ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ ধসিয়ে দেওয়া আফগান তরুণ স্পিনার আল্লাহ গজনফার সুবিধা করতে পারেননি শান্ত-সৌম্যদের বিপক্ষে। রশিদ খান, মোহাম্মদ নবিকেও ভালোভাবে সামলেছেন দুজন।
দ্বিতীয় উইকেটে দুজনের জুটি ছিল ৯৩ বলে ৭১ রানে। রশিদ খানের বলে এলবিডব্লিউ হওয়ার আগে ৪৯ বলে ২টি করে চার-ছয়ে ৩৫ রান করেন সৌম্য। বাংলাদেশি ওপেনার আজ ভাগ্যকেও দুষতে পারেন! রশিদ খানের বলে আম্পায়ার এলবিডব্লিউ আউট দিলে পরে আর রিভিউ নেননি। কিন্তু টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, রিভিউ নিলে নট আউট ছিলেন সৌম্য।
চারে নামা মেহেদি হাসান মিরাজ আজও হিসেবি ব্যাটিং করেছেন। শান্তর সঙ্গে মিরাজেরও দারুণ একটা জুটি গড়ে উঠেছিল। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৫৩ রান তোলেন দুজন। কিন্তু মিরাজ ফিরতেই টপাটপ কয়েক উইকেট হারিয়ে ফের বিপদে পরে যায় বাংলাদেশ।
৩৩ বলে ২২ রান করে ফেরা মিরাজ রশিদ খানের দুর্দান্ত এক গুগলিতে বোল্ড হয়েছেন। চারে নামা তাওহিদ হৃদয় (১৬ বলে ১১) আজ আবারও কাটা পরেছেন সেই লেগ সাইটে হিট করতে গিয়েই। এরপর নাজমুল হোসেন শান্ত ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ একই ওভারে ফিরলে বিপদ বাড়ে বাংলাদেশের।
শান্ত ১১৯ বল খেলে ৬টি চার ১টি ছয়ে ৭৬ রান করে ফিরেছেন। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে সীমানায় ধরা পরেছেন ৩ রান করে। ওয়ানডেতে রানের জন্য মাহমুদউল্লাহর সংগ্রাম করার সময়টা বেড়েই চলেছে। ওয়ানডেতে অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের সর্বশেষ চার ইনিংস যথাক্রমে- ০, ১, ২ ও ৩!
১৮৪ রানের মাথায় বাংলাদেশ যখন ষষ্ঠ উইকেট হারাল তখন ৪১তম ওভারের খেলা চলছিল। সেখান থেকে বাংলাদেশকে আড়াইশর ওপারে নিয়েছেন অভিষিক্ত জাকের আলি অনিক ও স্পিনার নাসুম আহমেদ। ফজলহক ফারুকীকে পরপর দুই বলে দুটি ছক্কা হাঁকানো জাকের শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিল ৩৭ রানে। ২৭ বলে ১টি চার ৩টি ছয়ে এই রান করেন মুশফিকুর রহিমের ইনজুটিতে সুযোগ পাওয়া তরুণ উইকেটকিপার। নাসুম আউট হয়েছেন ২৪ বলে ১ চার ২ ছয়ে ২৫ রান করে।
আফগানিস্তানের হয়ে ২৮ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন খারোটে। আল্লাগ গাজানফর ১০ ওভারে ৩৫ ও রশিদ খান ১০ ওভারে ৩২ রান খরচায় দুটি করে উইকেট নিয়েছেন।
সিরিজের শেষ ম্যাচ একই মাঠে অনুষ্ঠিত হবে ১১ নভেম্বর, বিকেল ৪টায়।