Dhaka শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আপিলেও ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পেলেন না শামীমা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের সদস্যকে বিয়ে করতে ১৫ বছর বয়সে দেশ ছেড়ে যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব হারানো বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শামীমা বেগমের আপিল খারিজ করেছেন আদালত। নিজের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার বিরুদ্ধে গত বছরের অক্টোবরে লন্ডনের আপিল আদালতে ওই মামলা করেছিলেন তিনি।

শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ব্রিটেনের সর্বোচ্চ আদালতের আপিল বিভাগের রায়ে শামীমা হেরে গেছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

রায়ে যুক্তরাজ্য সরকারের আগের সিদ্ধান্ত বহাল থাকায় শামীমা আর কখনো দেশটিতে ফিরতে পারবেন না। তিনি বর্তমানে সিরিয়ার একটি সশস্ত্রবাহিনী শিবিরে বাস করছেন।

আপিল বিভাগের রায়ে যুক্তরাজ্যের প্রধান বিচারপতি বলেছেন, ‘শামীমা বেগমের মামলার সিদ্ধান্ত বড়ই ‘কঠোর’। এটিকে বলা যেতে পারে শামীমা নিজের দুর্ভাগ্য নিজেই ডেকে এনেছেন। তবে এই দুটি বিষয়ে আদালতের একমত বা দ্বিমত হওয়ার কিছু নেই। আমরা শুধু দেখেছি তাঁর নাগরিকত্ব বাতিল করাটা আইনের লঙ্ঘন কি না। যেহেতু এখানে আইনের লঙ্ঘন হয়নি তাই আদালত আপিল খারিজ করে দিল।’

রায় দেওয়ার সময় বিচারক সু কা বলেন, শামীমা বেগমের বিষয়টি কঠোরভাবে দেখা হচ্ছে এবং নিজের দুর্ভাগ্যের জন্য তিনিই দায়ী– এসব বিষয় নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। কিন্তু এই আদালতের কাজ উভয় দৃষ্টিভঙ্গির সাথে একমত হওয়া বা না হওয়া নয়, আমাদের একমাত্র কাজ হলো বঞ্চনার সিদ্ধান্তটি বেআইনি ছিল কিনা, তা মূল্যায়ন করা। আমরা সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি যে, এটি (বেআইনি) ছিল না এবং আপিল খারিজ করা হয়েছে।

আদালতের এই আদেশের অর্থ শামীমাকে সিরিয়ায় থাকতে হবে এবং তার যুক্তরাজ্যে ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই।

এর আগে, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক শামীমা বেগম ২০১৫ সালে ইসলামিক স্টেটে যোগ দিতে যখন যুক্তরাজ্য ছাড়েন। তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১৫ বছর। সিরিয়ায় যাওয়ার পর তিনি ইসলামিক স্টেটের ডাচ সদস্য ইয়াগো রিয়েডিকে বিয়ে করেন। সেখানে তাঁর তিনটি সন্তান হয়, যাদের সবাই মারা যায়। এরপর তাঁর স্বামী রিয়েডিও এক কুর্দি বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন বলে জানা যায়।

সেই ঘটনাপ্রবাহের পর শামীমা যুক্তরাজ্যে ফিরতে চান কিন্তু ২০১৯ সালে যুক্তরাজ্যর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ শামীমার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিল করেন। ওই সময় যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুক্তি দিয়েছিল, শামীমার মামলার ‘মূল কারণ’ ছিল জাতীয় নিরাপত্তা। এই সিদ্ধান্ত বাতিলের জন্য ২০২৩ সালে ২৪ বছর বয়সী শামীমার আইনজীবীরা আপিল বিভাগে একটি আবেদন করেছিলেন।

এদিকে আপিল খারিজের পর শামীমার আইনজীবি ড্যানিয়েল ফার্নার বলেছেন, যুক্তরাজ্য সরকার বনাম শামীমার লড়াইয়ের শেষ এখানেই না। শামীমার ন্যায়বিচার পাওয়া এবং যুক্তরাজ্যে নিরাপদে ফেরার আগ পর্যন্ত আইনি লড়াই অব্যাহত থাকবে।’

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

আপিলেও ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পেলেন না শামীমা

প্রকাশের সময় : ০৮:১৩:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের সদস্যকে বিয়ে করতে ১৫ বছর বয়সে দেশ ছেড়ে যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব হারানো বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শামীমা বেগমের আপিল খারিজ করেছেন আদালত। নিজের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার বিরুদ্ধে গত বছরের অক্টোবরে লন্ডনের আপিল আদালতে ওই মামলা করেছিলেন তিনি।

শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ব্রিটেনের সর্বোচ্চ আদালতের আপিল বিভাগের রায়ে শামীমা হেরে গেছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

রায়ে যুক্তরাজ্য সরকারের আগের সিদ্ধান্ত বহাল থাকায় শামীমা আর কখনো দেশটিতে ফিরতে পারবেন না। তিনি বর্তমানে সিরিয়ার একটি সশস্ত্রবাহিনী শিবিরে বাস করছেন।

আপিল বিভাগের রায়ে যুক্তরাজ্যের প্রধান বিচারপতি বলেছেন, ‘শামীমা বেগমের মামলার সিদ্ধান্ত বড়ই ‘কঠোর’। এটিকে বলা যেতে পারে শামীমা নিজের দুর্ভাগ্য নিজেই ডেকে এনেছেন। তবে এই দুটি বিষয়ে আদালতের একমত বা দ্বিমত হওয়ার কিছু নেই। আমরা শুধু দেখেছি তাঁর নাগরিকত্ব বাতিল করাটা আইনের লঙ্ঘন কি না। যেহেতু এখানে আইনের লঙ্ঘন হয়নি তাই আদালত আপিল খারিজ করে দিল।’

রায় দেওয়ার সময় বিচারক সু কা বলেন, শামীমা বেগমের বিষয়টি কঠোরভাবে দেখা হচ্ছে এবং নিজের দুর্ভাগ্যের জন্য তিনিই দায়ী– এসব বিষয় নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। কিন্তু এই আদালতের কাজ উভয় দৃষ্টিভঙ্গির সাথে একমত হওয়া বা না হওয়া নয়, আমাদের একমাত্র কাজ হলো বঞ্চনার সিদ্ধান্তটি বেআইনি ছিল কিনা, তা মূল্যায়ন করা। আমরা সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি যে, এটি (বেআইনি) ছিল না এবং আপিল খারিজ করা হয়েছে।

আদালতের এই আদেশের অর্থ শামীমাকে সিরিয়ায় থাকতে হবে এবং তার যুক্তরাজ্যে ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই।

এর আগে, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক শামীমা বেগম ২০১৫ সালে ইসলামিক স্টেটে যোগ দিতে যখন যুক্তরাজ্য ছাড়েন। তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১৫ বছর। সিরিয়ায় যাওয়ার পর তিনি ইসলামিক স্টেটের ডাচ সদস্য ইয়াগো রিয়েডিকে বিয়ে করেন। সেখানে তাঁর তিনটি সন্তান হয়, যাদের সবাই মারা যায়। এরপর তাঁর স্বামী রিয়েডিও এক কুর্দি বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন বলে জানা যায়।

সেই ঘটনাপ্রবাহের পর শামীমা যুক্তরাজ্যে ফিরতে চান কিন্তু ২০১৯ সালে যুক্তরাজ্যর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ শামীমার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিল করেন। ওই সময় যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুক্তি দিয়েছিল, শামীমার মামলার ‘মূল কারণ’ ছিল জাতীয় নিরাপত্তা। এই সিদ্ধান্ত বাতিলের জন্য ২০২৩ সালে ২৪ বছর বয়সী শামীমার আইনজীবীরা আপিল বিভাগে একটি আবেদন করেছিলেন।

এদিকে আপিল খারিজের পর শামীমার আইনজীবি ড্যানিয়েল ফার্নার বলেছেন, যুক্তরাজ্য সরকার বনাম শামীমার লড়াইয়ের শেষ এখানেই না। শামীমার ন্যায়বিচার পাওয়া এবং যুক্তরাজ্যে নিরাপদে ফেরার আগ পর্যন্ত আইনি লড়াই অব্যাহত থাকবে।’