নিজস্ব প্রতিবেদক :
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে ভুল-ত্রুটি হয়েছে বলেই চিকিৎসাধীন আহতদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের দাবিগুলো যৌক্তিক বলেই তারা হাসপাতাল ছেড়ে সড়কে নেমে এসেছেন। যেকোনো মূল্যে সরকার তাদের দাবি পূরণে বদ্ধপরিকর।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সকালে সাভারে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআইএ) এক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, দেশে অন্তর্বর্তী সরকার একটি বিপ্লবের মাধ্যমে এসেছে এবং আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। এতে শহীদদের অবদান আছে। যারা আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে তাদের সুস্থ হতে আরো ছয় থেকে আট মাস লাগতে পারে। যদিও সরকারের একান্ত চেষ্টা ছিল সঠিক চিকিৎসা দেয়া। আমরা কয়েকজন উপদেষ্টা রাতেই সেখানে গিয়েছিলাম তাদের সাথে কথা বলতে।
ফরিদা আক্তার বলেন, ভোররাত পর্যন্ত আমি ক্ষুব্ধ চিকিৎসাধীন আহতদের সঙ্গে কথা বলেছি। নানা আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে আহতদের অনেকেই এখনও ক্ষতিপূরণ পাননি। সেটির দ্রুত ব্যবস্থা করা হচ্ছে। গণঅভ্যুত্থানে আহতদের মনে যে একটা ক্ষোভ হয়েছে, আমরা মনে করি আমাদের এটা দেখার দরকার আছে। নিশ্চয়ই কোনো ভুল-ত্রুটি আমাদের দিক থেকে হয়েছে, একেবারেই ভুল হয়নি এমনটা নয়। চারদিকে দেখতে গিয়ে কোনোভাবে ভুল হয়ে যেতে পারে।
উপদেষ্টা বলেন, হাত-পায়ে ব্যান্ডেজ অবস্থায় যে তারা রাস্তায় ছিলেন, এটা দেখে আমরা থাকতে পারিনি। এজন্য আমরা কয়েকজন উপদেষ্টা রাতে সেখানে গিয়েছিলাম। তারা যে শুধু চিকিৎসা চাচ্ছেন তা নয়, তাদের মধ্যে এমনও আছেন যিনি পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা ঋণ নিয়েছিলেন, তাদের বাড়িতে কিস্তির জন্য এসে ধরনা দেয়। তারা সে টাকা কোথায় পাবেন? তাদের পুনর্বাসনের ব্যাপারটা তারা চান। আমরা মনে করি সেটা খুবই যৌক্তিক একটা দাবি। এটা আমরা মনে করি, আজ দুপুরে বসলে একটা সমাধানে আসতে পারবো।
দেশবাসীর কাছে আহতদের সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়ে তিনি বলেন, তাদের প্রতি আমাদের ঋণ অনেক বেশি। কাজেই তাদের প্রতি কোনো গাফেলতি হতে দেওয়া যাবে না।
‘এই মুহূর্তে যারা চিকিৎসাধীন রয়েছেন, তাদের এক লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ যথেষ্ট নয়’ উল্লেখ করে উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের আহতদের পুনর্বাসনের বিষয়ে সরকার আন্তরিকভাবে সচেষ্ট। কারণ, আহতদের অনেকেই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তাদের ত্যাগের কারণেই জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আজ দুপুরে আমরা আবারও তাদের সঙ্গে বসব। আশা করছি, সেখানে একটি ভালো সমাধান আসবে।
এর আগে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের সম্মেলন কক্ষে মতবিনিময় সভায় প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক ড. শাকিলা ফারুকের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়যুগ্ম সচিব শাহীনা ফেরদৌসী।
এর আগে মতবিনিময় সভায় উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, গরুর মাংসের দাম এখনও নাগালের বাইরে। অনেকেই বলছেন, মাংস আমদানি করে করে সুলভ মূল্যে বিক্রির কথা। আমার প্রশ্ন, আমদানি করতে হবে কেন? মাংস, ডিম ও দুধ উৎপাদনে কেন স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করা যাবে না?
এ সময় কার্বন নিঃসরণ কীভাবে কমিয়ে আনা যায় সে বিষয়ে গবেষকদের আন্তরিকভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা।