নিজস্ব প্রতিবেদক :
দেশে ছাত্র আন্দোলনের সমর্থনে বিদেশে মিছিল করতে গিয়ে যে ৮৭ প্রবাসী কারাভোগ করে দেশে ফিরেছেন তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ইস্কাটনের প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে গণমাধ্যমে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, তাদের যদি অন্য কোনো দেশে পাঠাতে হয় সে ব্যবস্থাও করা হবে। প্রয়োজনে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে কাজের ব্যবস্থা করা হবে। আন্দোলনে অংশ নেওয়ার জন্য দায়বদ্ধতা থেকে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
উপদেষ্টা বলেন, যারা লোক সংগ্রহ করে, সেই সাব-এজেন্টদের, যাদের আপনারা দালাল বলেন, তাদের মধ্যে ভালো লোক আছে, খারাপ লোকও আছেন, আমরা ওনাদের রেজিস্ট্রেশন করে দেব। সেটা করে দিলে ওনারা একটা জবাবদিহিতা প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকবে।
আসিফ নজরুল বলেন, বায়রা যদি আমাদের সহযোগিতা করে, আমরা আশা করি সাব-এজেন্টদের দৌরাত্ম্য অনেকাংশে কমাতে পারব। দৌরাত্ম্য কমানোর জন্য, বিদেশে যেতে অহেতুক যে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়, সেটা কিছুটা হলেও কমবে।
সেই সঙ্গে যারা জনশক্তি রফতানি করেন, তাদের সেবার মান অনুযায়ী রেটিং করবে সরকার। উপদেষ্টা বলেন, আরেকটা জিনিস আমরা চিন্তা করেছি, রিক্রুটিং এজেন্টদের আমরা সার্টিফিকেশন করবো। ওনাদের পারফর্মেন্সের ভিত্তিতে, ওনাদের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে, ওনাদের পাস্ট রেকর্ডের ভিত্তিতে আমরা ক্যাটাগরাইজড করবো যে, ক্যাটাগরি এ হচ্ছে এটা, ক্যাটাগরি বি হচ্ছে এটা।
তিনি বলেন, দেশের বিমানবন্দরে সেবার মানোন্নয়ন ইতোমধ্যে করা হয়েছে। আরেকটি সেবা যেটা আমরা চালু করতে যাচ্ছি সেটি হচ্ছে- বিমানবন্দরে রেমিট্যান্স যোদ্ধারা দেশে আসলে ভিআইপি সেবা পাবে। একজন ভিআইপি এয়ারপোর্টে যে-সব সুবিধা পান, লাউঞ্জ ব্যবহার ছাড়া আমরা সবই করার সুবিধা দেবো।
প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা বলেন, একজন ভিআইপি যখন এয়ারপোর্টে যান তখন তার লাগেজ নিয়ে একজন সঙ্গে থাকেন, চেক-ইন করার সময় সঙ্গে একজন থাকেন, ইমিগ্রেশন করার সময় পাশে একজন থাকেন। প্রাথমিকভাবে আমরা মধ্যপ্রাচ্যের কর্মীদের টার্গেট করেছি। ইউরোপের কর্মীদের পড়ে করবো। প্রথম স্তরে মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়া এবং ফেরত আসা একজন কর্মী ভিআইপি ট্রিটমেন্ট পাবেন।
প্রবাসী কর্মীদের জন্য ভবিষ্যতে বিমানবন্দরের লাউঞ্জ ব্যবহারের সুযোগ তৈরি করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, লাউঞ্জ ব্যবহার করতে দেওয়ার বিষয়ে আমরা পরে চিন্তা করছি, এটা অনেক পরের কাজ। আগামী দুই সপ্তাহ থেকে এক মাসের মধ্যে আমরা যেটা করবো, বিমানবন্দরে যাওয়ার পর একজন কর্মীর যে অসহায় অবস্থা তৈরি হয় সেটি দূর করবো।
তিনি বলেন, কর্মী কোন গেট দিয়ে প্রবেশ করবেন, চেক ইন কীভাবে করবেন, ফর্ম পূরণ করা লাগলে কীভাবে করবেন, ইমিগ্রেশনে কোনো কাগজ চাইলে কীভাবে সেটি করবেন এসব কাজে নিয়োজিত থাকবে বিমানবন্দরের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক। দরকার পড়লে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ট্রেনিং দিয়ে নতুন লোক নিয়োগ করবো।
আগামী দুই সপ্তাহ থেকে এক মাসের মধ্যে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, একজন প্রবাসী যেন কোন অবস্থাতেই এয়ারপোর্টে হয়রানির শিকার না হন, অপমানিত বোধ না করেন এই ব্যাপারে আমাদের জিরো টলারেন্স থাকবে। আমরা অবশ্যই এটা নিশ্চিত করে ছাড়বো।