নিজস্ব প্রতিবেদক :
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আন্দোলনের কথা না ভেবে বিএনপির এখন থেকেই পরবর্তী নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।
শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দলের যৌথ সভায় এ কথা বলেন তিনি।
বিজয় না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি আন্দোলন করবে এ বক্তব্য প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেব জেল থেকে বের হয়ে আবার দিবা স্বপ্নে বিভোর হয়ে পড়েছেন। পরবর্তী আন্দোলনের কথা না ভেবে বিএনপিকে এখন থেকেই পরবর্তী নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। জনগণের সরকার ক্ষমতায় থাকলে আন্দোলনের বস্তুগত পরিস্থিতি খুঁজে পাওয়া যায় না। জনগণের সরকার ক্ষমতায় থাকলে দেশে ইস্যুভিত্তিক আন্দোলনের যে ইস্যু খুঁজে পাওয়া যায় না বিএনপির সেটা হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া উচিত। জার্মানিতে নিরাপত্তা সম্মেলনে বাংলাদেশের উপস্থিতি, এই সম্মেলনে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের জন্য বিরাট সম্মান বয়ে এনেছেন। আজকে গণতান্ত্রিক বিশ্ব বাংলাদেশের গুরুত্ব মেনে নিয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ভূরাজনৈতিক অবস্থানটা আমাদের শত্রুতার জন্য অনেকের উর্বর ক্ষেত্র। বঙ্গোপসাগর, সেন্টমার্টিনের প্রতি লোভাতুর দৃষ্টি অনেক বাজপাখির রয়েছে। তবে শেখ হাসিনার সরকার ভারসাম্যপূর্ণ কূটনীতি সাফল্যের দিকে নিয়ে গেছে।
এ সময় তিনি আওয়ামী লীগের মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি নতুন করে গঠনসহ দলের অভ্যন্তরীণ বিরোধ মেটাতে বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্তদের দলীয় সভাপতির নির্দেশনা জানান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মেয়াদোত্তীর্ণ বিভিন্ন শাখার সম্মেলন, সহযোগী সংগঠনের প্রত্যেকের অসমাপ্ত সম্মেলন, কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় বিলম্বসহ সাংগঠনিক সমস্যার সমাধান করা জরুরি। বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্তরা সব শাখাগুলোকে ঢাকায় ডেকে বসতে পারেন। সমস্যা ও বিরোধ থাকলে তা সমাধানে অনতিবিলম্বে কাজ শুরু করতে নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
সেতুমন্ত্রী বলেন, মনোনয়নপ্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর আমাদের অনেক কর্মী কষ্ট ও দুঃখ পেয়েছেন। আমাদের সামনে বিকল্প ছিল না, আমি তাদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানাচ্ছি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ভবিষ্যতে আমরা তাদের মূল্যায়নের সুযোগ দেব। সরকারের ও দলের বিভিন্ন পর্যায়ে চেষ্টা করব মূল্যায়নের। হতাশা-নিরাশা অনেকের মধ্যেই আছে। তবে রাজনীতিতে হতাশা ও নিরাশার কোনো স্থান নেই। রাজনীতি কমিটমেন্টের ব্যাপার, কমিটমেন্ট নিয়েই রাজনীতি করতে হয়। ঘাত-প্রতিঘাত, জেল-জুলুম রাজনীতির একটা অংশ। সবাইকে এ পর্যন্ত লড়াই করেই আসতে হয়েছে। আমি আমাদের নারী মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানাই।’
তিনি বলেন, ‘নারীসমাজের যে জাগরণ আমরা বিভিন্ন সভাসমাবেশে লক্ষ করি, নারীদের লাইনটা অতীতের তুলনায় অনেক বেশি। এমনকি সভাসমাবেশে উপস্থিতিও বেশি দেখা যায়। এটা তাদের কারও অবদান নয়, এটা আমাদের অর্থনীতিতে উইমেন এম্পাওয়ারমেন্ট। এটা আমাদের অর্থনীতির একটা পিলার।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যারা সংরক্ষিত আসনে এবার মনোনয়ন চেয়েছেন তারা অধিকাংশই নির্যাতিত, পরীক্ষিত। তারা ঢাকায় যেমন আন্দোলনের সময় ছিলেন, জেলায়-তৃণমূল পর্যায়ে তাদের অবদান অনেক বেশি। ১ হাজার ৫৫৩ জনের মধ্যে আমাদের বেছে নিতে হয়েছে মাত্র ৪৮ জনকে।’
যৌথসভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিমসহ আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর উত্তর দক্ষিণ, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।