চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ভোটাধিকার হরণ করা আওয়ামী লীগ সরকার যে আইনে (আন্তর্জাতিক অপরাধ) ট্রাইব্যুনাল গঠন করে নিরপরাধ ব্যক্তিদের হত্যা করেছে, সে আইনেই তাদের বিচার আমরা দেখতে চাই। আশা করি, সে আদালতেই আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরদের বিচার হবে।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের শরকরবাটী হেফজুল উলুম ফায়েজা খানম কালিম মাদরাসায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রোকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আল্লাহ জালিমকে ছাড় দেন কিন্তু ছেড়ে দেন না। আওয়ামী লীগ সরকার জামায়াতে ইসলামীকে শেষ করে দিতে চেয়েছিল। দুনিয়াদারির কোনো সংগঠন হলে শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু আমাদের শুরু হচ্ছে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু দিয়ে, আমদের সঙ্গে আল্লাহ ছিলেন। এখনও আছেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার তিনবার নির্বাচন করেছে। কিন্তু দেশের মানুষ একটি নির্বাচনেও ভোট দিতে পারেনি। তারা নিজেরা নিজেরাই ভোট করেছে। ভোটকেন্দ্রে কুকুর ঘুমিয়েছে। মানুষ যায়নি। প্রশাসনের ব্যক্তিরা ছিলেন আওয়ামী লীগের সাজানো। জনগণ তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
শফিকুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ১৫টি বছর গুম, খুন করে ক্ষমতায় টিকে ছিল। সাধারণ মানুষকে ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে রেখেছিল।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের মানুষকে মানুষ মনে করত না। দেশের মানুষের সেবা করার বদলে তারা হয়েছিল দেশের মালিক। সেবক হতে পারেনি। বিগত দিনে কোরআনের মাহফিলে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। তাফসির মাহফিল থেকে বক্তাদের পুলিশ এসে তুলে নিয়ে গেছে। এগুলো আমরা ঘৃণা করি।
জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, ভোটের অধিকার হরণ করা আওয়ামী লীগ সরকার যে আইনে ট্রাইব্যুনাল গঠন করে নিরপরাধ ব্যক্তিদের হত্যা করেছে, সে আইনেই আমরা তাদের বিচার দেখতে চাই। তারা ১৬ বছর গুম খুন করে ক্ষমতায় টিকে ছিল। সাধারণ মানুষকে ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে রেখেছিল।
শফিকুর রহমান বলেন, প্রতিদিন অন্য সংগঠনের নেতাকর্মীদের নামে গুম খুন চাঁদাবাজি ধর্ষণসহ নানান অভিযোগ প্রকাশ হচ্ছে। কিন্তু জামায়াতে ইসলামীর ২ কোটি ৪২ লাখ রেজিস্ট্রার্ড কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে একটিও অভিযোগ আসেনি। আগামী দিনেও আসবে না। তিনি বলেন, আগামী দিনে একটি মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চাই, যে বাংলাদেশে কোনো বৈষম্য থাকবে না। সম্প্রতি আন্দোলনে বেহায়া-বেপরোয়া সরকার খুনের নেশায় মেতে উঠেছিল, জনগণের বুকের ওপর গুলি ছুড়েছে। তারা আবার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চায়।
জামায়াতের আমির আরও বলেন, ‘সম্প্রতি আন্দোলনে বেহায়য়া-বেপরোয়া সরকার জনগণের বুকের ওপর যে গুলি ছুড়েছে-খুনের নেশায় মেতে উঠেছিল, তারা আবার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চায়। কিন্তু আগে বিগত তাদের তামাসার নির্বাচনের বিচার করতে হবে। এরপর জনগণ সিদ্ধান্ত নেবেন।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আমির মাওলানা আবুজার গিফারীর সভাপতিত্বে রুকন সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন— ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য সাবেক পৌর মেয়র মো. নজরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রাজশাহী মহানগরী আমির ড. মাওলানা কেরামত আলী, সাবেক এমপি অধ্যাপক লতিফুর রহমান প্রমুখ।