Dhaka বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫, ৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আধুনিক প্রযুক্তির কারণে, বিলুপ্তির পথে লাঙ্গল

বাউফল উপজেলা (পটুয়াখালী ) থেকে নুরুল ইসলাম সিদ্দিকী (মাসুম)

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় আধুনিক প্রযুক্তির কারণে বিলুপ্তের পথে লাঙ্গল। লাঙ্গল দিয়ে হাল চাষ করা এখন আর নেই বললেই চলে। লাঙ্গলের চাহিদা কমে যাওয়ায় ভালো নেই লাঙ্গল কারিকররা।

উপজেলার কালাইয়া লাঙ্গলের হাটে গিয়ে দেখা যায়, যৌতা গ্রাম থেকে সেলিম হাওলাদার (৭৩) ও কালাইয়া তিন দোকান গ্রামের হাবিবুল্লাহ দেওয়ান (৭০) নামে দুইজন কারিকর হাটে লাঙ্গলের পসরা সাজিয়ে আছেন।

হাবিবুল্লাহ দেওয়ান বলেন, কেওরা গাছ দিয়ে তৈরী হয় এই লাঙ্গল। এক একটি গাছ দিয়ে ৮ থেকে ১০টা লাঙ্গল তৈরী করা যায়। গ্রামে ঘুর ঘুরে গাছ সংগ্রহ করতে হয়। এক একটি গাছ সাইজ অনুযায়ী দাম। একটি লাঙ্গল বিক্রি হয় ৮শ থেকে ৯শ টাকায়। সেখান লাভ হয় দুই থেকে তিনশ টাকা।

সেলিম হাওলাদার বলেন, আমার বাবা ও দাদা বংশ পরম্পরায় এই লাঙ্গল তৈরী ও বিক্রির সঙ্গে যুক্ত। তিনি প্রায় ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই হাটে লাঙ্গল বিক্রি করতে আসেন। কিন্তু আগের মতন এখন আর লাঙ্গল চলে না। ১২ বছর আগেও এই হাটে প্রায় অর্ধশত কারিকর আসতো লাঙ্গল বিক্রি করতে। বিক্রি হতো শত শত। এখন হাটে একটা লাঙ্গল বিক্রি করতে কষ্ট হয়।

হাটে লাঙ্গল কিনে আসেছেন নওমালা বাবুরহাট গ্রামের হান্নান গাজী বলেন, আমার জমির পরিমান কম বলে আমি লাঙ্গলের ্ওপর নির্ভরশীল। তাই হাটে আসছি লাঙ্গল কিনতে।

অপর এক কৃষক হাসেম রাঢ়ি বলেন, এক সময়ে চাষাবাদের জন্য অত্যাবশ্যক ছিল গাছ থেকে তৈরী লাঙল ও গরু। গরু-লাঙল দিয়ে হাল চাষ করতে যে সময়ে লাগে তার চেয়ে কম সময়ে অধিক জমি চাষাবাদ করা যায় পাওয়ার ট্রিলার দিয়ে। এতে চাষীদের সময় ও পরিশ্রম দুটোই কম লাগে। তাই লাঙ্গল বাদ দিয়ে মানুষ আধুনিক চাষাবাদের দিকে ঝুঁকছেন।

উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের চরকান্দা গ্রামের প্রবীণ কৃষক সামছু মিয়া জানান, এক সময় নতুন প্রজন্ম ভুলে যাবে দেশে গরু-লাঙল দিয়ে জমি চাষাবাদের কাজ করতো কৃষক পরিবারগুলো। সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে অনেক ঐতিহ্যবাহী স্মৃতি একে একে বিলুপ্ত হতে চলছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মিলন বলে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চাষাবাদে পুরণো পদ্বতি পরিবর্তনে বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরাও এগিয়ে যাচ্ছি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

এইচএসসির স্থগিত পরীক্ষার নতুন সময়সূচি প্রকাশ

আধুনিক প্রযুক্তির কারণে, বিলুপ্তির পথে লাঙ্গল

প্রকাশের সময় : ০৬:২২:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫

বাউফল উপজেলা (পটুয়াখালী ) থেকে নুরুল ইসলাম সিদ্দিকী (মাসুম)

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় আধুনিক প্রযুক্তির কারণে বিলুপ্তের পথে লাঙ্গল। লাঙ্গল দিয়ে হাল চাষ করা এখন আর নেই বললেই চলে। লাঙ্গলের চাহিদা কমে যাওয়ায় ভালো নেই লাঙ্গল কারিকররা।

উপজেলার কালাইয়া লাঙ্গলের হাটে গিয়ে দেখা যায়, যৌতা গ্রাম থেকে সেলিম হাওলাদার (৭৩) ও কালাইয়া তিন দোকান গ্রামের হাবিবুল্লাহ দেওয়ান (৭০) নামে দুইজন কারিকর হাটে লাঙ্গলের পসরা সাজিয়ে আছেন।

হাবিবুল্লাহ দেওয়ান বলেন, কেওরা গাছ দিয়ে তৈরী হয় এই লাঙ্গল। এক একটি গাছ দিয়ে ৮ থেকে ১০টা লাঙ্গল তৈরী করা যায়। গ্রামে ঘুর ঘুরে গাছ সংগ্রহ করতে হয়। এক একটি গাছ সাইজ অনুযায়ী দাম। একটি লাঙ্গল বিক্রি হয় ৮শ থেকে ৯শ টাকায়। সেখান লাভ হয় দুই থেকে তিনশ টাকা।

সেলিম হাওলাদার বলেন, আমার বাবা ও দাদা বংশ পরম্পরায় এই লাঙ্গল তৈরী ও বিক্রির সঙ্গে যুক্ত। তিনি প্রায় ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই হাটে লাঙ্গল বিক্রি করতে আসেন। কিন্তু আগের মতন এখন আর লাঙ্গল চলে না। ১২ বছর আগেও এই হাটে প্রায় অর্ধশত কারিকর আসতো লাঙ্গল বিক্রি করতে। বিক্রি হতো শত শত। এখন হাটে একটা লাঙ্গল বিক্রি করতে কষ্ট হয়।

হাটে লাঙ্গল কিনে আসেছেন নওমালা বাবুরহাট গ্রামের হান্নান গাজী বলেন, আমার জমির পরিমান কম বলে আমি লাঙ্গলের ্ওপর নির্ভরশীল। তাই হাটে আসছি লাঙ্গল কিনতে।

অপর এক কৃষক হাসেম রাঢ়ি বলেন, এক সময়ে চাষাবাদের জন্য অত্যাবশ্যক ছিল গাছ থেকে তৈরী লাঙল ও গরু। গরু-লাঙল দিয়ে হাল চাষ করতে যে সময়ে লাগে তার চেয়ে কম সময়ে অধিক জমি চাষাবাদ করা যায় পাওয়ার ট্রিলার দিয়ে। এতে চাষীদের সময় ও পরিশ্রম দুটোই কম লাগে। তাই লাঙ্গল বাদ দিয়ে মানুষ আধুনিক চাষাবাদের দিকে ঝুঁকছেন।

উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের চরকান্দা গ্রামের প্রবীণ কৃষক সামছু মিয়া জানান, এক সময় নতুন প্রজন্ম ভুলে যাবে দেশে গরু-লাঙল দিয়ে জমি চাষাবাদের কাজ করতো কৃষক পরিবারগুলো। সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে অনেক ঐতিহ্যবাহী স্মৃতি একে একে বিলুপ্ত হতে চলছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মিলন বলে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চাষাবাদে পুরণো পদ্বতি পরিবর্তনে বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরাও এগিয়ে যাচ্ছি।