নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আড়াই মাস পর অবশেষে তালা ভেঙে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে প্রবেশ করলেন নেতাকর্মীরা। গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের পর থেকে বন্ধ ছিল দলটির কার্যালয়। এই সময়ে অজ্ঞাত স্থান থেকে নিয়মিত ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন ও বিবৃতি পাঠিয়ে আসছিল তারা।

বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) বেলা পৌনে ১১টার দিকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে গেটের তালা ভেঙে কার্যালয়ে প্রবেশ করেন একদল নেতাকর্মী।

কার্যালয়ে প্রবেশ করে রিজভী বলেন, আড়াই মাস পর আমরা তালা ভেঙে আমাদের প্রিয় কার্যালয়ে ঢুকলাম। গত ২৮ অক্টোবর আমাদের মহাসমাবেশের দিন নারকীয় তাণ্ডব চালিয়ে আমাদের সমাবেশ পণ্ড করে দেয়। এরপর পুলিশ আমাদের কার্যালয় তালা মেরে রাখে। এত দিন কাউকে প্রবেশ করতে দেয়নি তারা। এখন আমরা কার্যালয়ে প্রবেশ করেছি। এখন ধোয়ামোছার কাজ করবো।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা পৌনে এগারোটার দিকে রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে ১৫-২০ জন নেতাকর্মীসহ অফিস স্টাফরা কার্যালয়ে প্রবেশ করেন।

এর আগে বুধবার (১০ জানুয়ারি) দলীয় কার্যালয় খোলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রহসনের এক নির্বাচন। এ বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) দুপুর ৩টায় দলের নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেবেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা।

তিনি আরও বলেন, ২৮ অক্টোবরের পর থেকে বিএনপির কার্যালয় বন্ধ রয়েছে। মূলত কার্যালয়ে আসলেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করেছে।

শায়রুল কবির খান বলেন, এর আগে শুধু ১/১১ সরকারের সময় এতো দীর্ঘসময় ধরে বিএনপির কার্যালয় বন্ধ ছিল। ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তিনি জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় স্থাপিত সাব-জেলে ৩৭২ দিন কাটানোর পর ১১ সেপ্টেম্বর মুক্তি পান। কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর ম্যাডাম দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করে দলের কার্যালয় যায়। তখন আবার দলীয় কার্যালয় খুলে স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।

গত বছরের ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশের ডাক দেয় বিএনপি। ওই মহাসমাবেশ কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পর থেকেই দলীয় কার্যালয় তালাবদ্ধ রয়েছে। তবে এর চাবি কার কাছে, তা নিয়ে রহস্য এখনও কাটেনি। এ নিয়ে প্রথম থেকেই পুলিশ এবং বিএনপি পরস্পরকে দোষারোপ করে বক্তব্য দিয়ে আসছে। বিএনপি বলছে, পুলিশ তাদের দলীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়েছে। অন্যদিকে পুলিশ বলছে, বিএনপি নিজেরাই তাদের কার্যালয়ে তালা দিয়েছে। সুতরাং চাবিও তাদের কাছেই আছে।