Dhaka শনিবার, ০৯ অগাস্ট ২০২৫, ২৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বৃষ্টির পানি ছাদ চুঁইয়ে পরে ফ্লোর তলিয়ে চরম অপরিচ্ছন্ন অবস্থা

আগৈলঝাড়ায় ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ঝুঁকিপূর্ণ

আগৈলঝাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি : 

বরিশালের আগৈলঝাড়ার ৫০শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন রোগীরা। বৃষ্টি হলেই তারা আতঙ্কে থাকেন ছাদ দিয়ে পানি চুঁইয়ে পরে ফ্লোর তলিয়ে যায়। কয়েকদিনের ভারী বর্ষণের ফলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়ার্ডে ছাদের পানি পরে ফ্লোর তলিয়ে গেছে। ভবনের ভিতরে ময়লা ও অপরিচ্ছন্ন পানির কারণে তারা বারান্দায় চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চারিপাশের ড্রেনে ময়লা জমে পানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় ভবনের পিছনে ময়লা জমে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়েছে। ভবন সংস্কারের জন্য তিনবার উর্ধতন দপ্তরে লিখিত অবেদন করা হলেও অদ্যাবধি কোন সুফল মেলেনি।

স্থানীয় ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী সূত্রে জানা গেছে, এলাকার জনসাধারণের চিকিৎসা সেবাদানের লক্ষে ১৯৭২ সালে আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা এলাকায় একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নির্মাণ করা হয়। ২০০৪ সালে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও উন্নীত হয়নি সেবা ও পরিবেশের। ভবনের বিভিন্ন স্থানে পলেস্তরা খসে পরছে। বৃষ্টি হলে ছাদ দিয়ে রোগীদের গায়ে পানি পরে ভিজে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির ছাদ চুঁইয়ে পানি পরায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়ার্ডের ফ্লোরে পানি জমার কারণে রোগিরা বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছে। এছাড়াও ভবনের বিভিন্ন স্থান দিয়ে চু্ইঁয়ে পানি পরছে। বর্তমানে রোগীরা ঝুঁকিপূর্ণভাবে চিকিৎসার জন্য ভর্তি রয়েছে। কমপ্লেক্সটির জেনারেটর দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট থাকায় বিদ্যুৎ চলে গেলে অসুস্থ রোগীরা গরমে ও অন্ধকারে চরম বিপাকে পরে থাকেন। পানি সরবরাহে সমস্যার কারণে দুর্গন্ধের ওয়াশরুম ব্যবহার করতে পারছে না রোগীরা। বৃষ্টির পানি কমপ্লেক্সটির চারপাশে জমে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভবন সংস্কারের জন্য একাধিকবার উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেও অদ্যাবধি কোন সুফল পাওয়া যায়নি।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রোগী দেলোয়ার মল্লিক, জনি সরদার, মাহিনুর বেগম বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রোগীরা সুস্থ হওয়ার জন্য ভর্তি হয়। কিন্তু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মাঝে মধ্যেই বিদ্যুৎ ও পানি থাকে না, যে কারণে ওয়াশরুম দুর্গন্ধ হয়ে যায়। ব্যবহার করা যায় না। বৃষ্টির সময় ভবনের ছাদ দিয়ে পানি পরে ফ্লোর তলিয়ে যায়।

আগৈলঝাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শিশির কুমার গাইন জানান, কমপ্লেক্সের দ্বিতল ভবনের ছাদ বেয়ে পানি পরে ওয়ার্ডের ফ্লোরগুলো তলিয়ে যায়। এতে দ্বিতীয় তলার বাথরুম টয়লেটের নোংরা পানি বের হয়ে মিশে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়েছে। ছাদের পানি চুঁইয়ে বৈদ্যুতিক পাখা শর্টসার্কিট হয়ে পরে। অনেক সময় বিদ্যুৎ না থাকায় পানি সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে বেশিরভাগ সময় ধারণ ক্ষমতার অধিক ৭০ থেকে ৮০ জন রোগী ভর্তি থাকে। একেকজন রোগীকে দেখাশুনা করার জন্য ৪-৫ জন লোক আসে। তাদের হাঁটাচলার কারণে ওয়ার্ডের ফ্লোর কর্দমাক্ত হয়ে যায় যা প্রতিদিন ২ থেকে ৩ বার পরিষ্কার করেও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা যাচ্ছেনা। এসব সমস্যার কারণে রোগীদের কাঙ্খিত সেবা প্রদানে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে।

এ ব্যাপারে আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. গোলাম মোর্শেদ সজীব সাংবাদিকদের বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মূল ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ভবনের ছাদ চুঁইয়ে পানি পরছে। ফলে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে সমস্যা হচ্ছে। ভবনটি সংস্কারের জন্য একাধিকবার উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

আগৈলঝাড়ায় ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ঝুঁকিপূর্ণ

বৃষ্টির পানি ছাদ চুঁইয়ে পরে ফ্লোর তলিয়ে চরম অপরিচ্ছন্ন অবস্থা

আগৈলঝাড়ায় ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ঝুঁকিপূর্ণ

প্রকাশের সময় : ০৯:১২:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ অগাস্ট ২০২৫

আগৈলঝাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি : 

বরিশালের আগৈলঝাড়ার ৫০শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন রোগীরা। বৃষ্টি হলেই তারা আতঙ্কে থাকেন ছাদ দিয়ে পানি চুঁইয়ে পরে ফ্লোর তলিয়ে যায়। কয়েকদিনের ভারী বর্ষণের ফলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়ার্ডে ছাদের পানি পরে ফ্লোর তলিয়ে গেছে। ভবনের ভিতরে ময়লা ও অপরিচ্ছন্ন পানির কারণে তারা বারান্দায় চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চারিপাশের ড্রেনে ময়লা জমে পানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় ভবনের পিছনে ময়লা জমে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়েছে। ভবন সংস্কারের জন্য তিনবার উর্ধতন দপ্তরে লিখিত অবেদন করা হলেও অদ্যাবধি কোন সুফল মেলেনি।

স্থানীয় ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী সূত্রে জানা গেছে, এলাকার জনসাধারণের চিকিৎসা সেবাদানের লক্ষে ১৯৭২ সালে আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা এলাকায় একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নির্মাণ করা হয়। ২০০৪ সালে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও উন্নীত হয়নি সেবা ও পরিবেশের। ভবনের বিভিন্ন স্থানে পলেস্তরা খসে পরছে। বৃষ্টি হলে ছাদ দিয়ে রোগীদের গায়ে পানি পরে ভিজে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির ছাদ চুঁইয়ে পানি পরায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়ার্ডের ফ্লোরে পানি জমার কারণে রোগিরা বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছে। এছাড়াও ভবনের বিভিন্ন স্থান দিয়ে চু্ইঁয়ে পানি পরছে। বর্তমানে রোগীরা ঝুঁকিপূর্ণভাবে চিকিৎসার জন্য ভর্তি রয়েছে। কমপ্লেক্সটির জেনারেটর দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট থাকায় বিদ্যুৎ চলে গেলে অসুস্থ রোগীরা গরমে ও অন্ধকারে চরম বিপাকে পরে থাকেন। পানি সরবরাহে সমস্যার কারণে দুর্গন্ধের ওয়াশরুম ব্যবহার করতে পারছে না রোগীরা। বৃষ্টির পানি কমপ্লেক্সটির চারপাশে জমে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভবন সংস্কারের জন্য একাধিকবার উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেও অদ্যাবধি কোন সুফল পাওয়া যায়নি।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রোগী দেলোয়ার মল্লিক, জনি সরদার, মাহিনুর বেগম বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রোগীরা সুস্থ হওয়ার জন্য ভর্তি হয়। কিন্তু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মাঝে মধ্যেই বিদ্যুৎ ও পানি থাকে না, যে কারণে ওয়াশরুম দুর্গন্ধ হয়ে যায়। ব্যবহার করা যায় না। বৃষ্টির সময় ভবনের ছাদ দিয়ে পানি পরে ফ্লোর তলিয়ে যায়।

আগৈলঝাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শিশির কুমার গাইন জানান, কমপ্লেক্সের দ্বিতল ভবনের ছাদ বেয়ে পানি পরে ওয়ার্ডের ফ্লোরগুলো তলিয়ে যায়। এতে দ্বিতীয় তলার বাথরুম টয়লেটের নোংরা পানি বের হয়ে মিশে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়েছে। ছাদের পানি চুঁইয়ে বৈদ্যুতিক পাখা শর্টসার্কিট হয়ে পরে। অনেক সময় বিদ্যুৎ না থাকায় পানি সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে বেশিরভাগ সময় ধারণ ক্ষমতার অধিক ৭০ থেকে ৮০ জন রোগী ভর্তি থাকে। একেকজন রোগীকে দেখাশুনা করার জন্য ৪-৫ জন লোক আসে। তাদের হাঁটাচলার কারণে ওয়ার্ডের ফ্লোর কর্দমাক্ত হয়ে যায় যা প্রতিদিন ২ থেকে ৩ বার পরিষ্কার করেও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা যাচ্ছেনা। এসব সমস্যার কারণে রোগীদের কাঙ্খিত সেবা প্রদানে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে।

এ ব্যাপারে আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. গোলাম মোর্শেদ সজীব সাংবাদিকদের বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মূল ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ভবনের ছাদ চুঁইয়ে পানি পরছে। ফলে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে সমস্যা হচ্ছে। ভবনটি সংস্কারের জন্য একাধিকবার উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি।