Dhaka শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আগুন লাগিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে স্থানীয় নেতাদের বার্তা পাঠায় অগ্নিসংযোগকারীরা: র‌্যাব

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজধানীর মিরপুরের কালশীতে গত ১৮ নভেম্বর বসুমতি পরিবহনের একটি বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় চার জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। অগ্নিসংযোগ করে হোয়াটসঅ্যাপে স্থানীয় নেতাদের সেই বার্তা পাঠান অগ্নিসংযোগকারীরা। দলে পদ পাওয়ার আশায় তারা এমন কাজ করছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) সকালে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

এ ঘটনায় গ্রেফতাররা হলেন, আল মোহাম্মদ চাঁন (২৭), সাগর (২৫), আল আমিন ওরফে রুবেল (২৯) ও খোরশেদ আলম (৩৪)। সোমবার (২০ নভেম্বর) রাতে অভিযান চালিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

তিনি বলেন, গতকাল রাতে কয়েকজন অগ্নিসংযোগকারীকে গ্রেফতার করা হয়। তারা সরাসরি অগ্নিসংযোগের সাথে জড়িত। ফুট প্রিন্টের মাধ্যমে বোঝা যায় তারা এর আগেও অন্য পরিবহনে অগ্নিসংযোগ করেছে।

র‌্যাব জানায়, বাসে আগুন দেওয়ার জন্য গ্রেফতার চাঁন প্রত্যেকের জন্য ১০ হাজার টাকা করে পেলেও সাগর ও আল আমিনকে ৭ হাজার টাকা করে দেন। চাঁন বাসে আগুন দেওয়ার জন্য তার বন্ধুর মোটরসাইকেল থেকে ২৫০ এমএল পরিমাণ পেট্রোল বের করে এনার্জি ড্রিংকের বোতলে ভরে ওইদিন সন্ধ্যায় আল আমিনের কাছে দেন।

তিনি বলেন, গ্রেফতার হওয়া চারজন বিরোধী একটি রাজনৈতিক দলের কর্মী। তাদের দলের স্থানীয় শীর্ষ নেতাদের নিদের্শনায় গ্রেফতার আল মোহাম্মদ চাঁন রাজধানীর মিরপুর ও পল্লবীর আশপাশের এলাকায় বাসে অগ্নিসংযোগ করার পরিকল্পনা করেন।

পরবর্তী সময় গত ১৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় গ্রেফতার চাঁন ও তার সহযোগী সাগর ও আল আমিন ওরফে রুবেলসহ রাজধানীর মিরপুর-১১, তালতলা নাভানা, কালশী রোড ও সিরামিক রোড এলাকায় সুবিধাজনক স্থানে যানবাহনে আগুন দেওয়ার জন্য রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত রেকি করেন।

কমান্ডার মঈন বলেন, গ্রেফতার চাঁন যানবাহনে আগুন দেওয়ার জন্য তার বন্ধুর মোটরসাইকেল থেকে ২৫০ এমএল পরিমাণ পেট্রোল বের করে এনার্জি ড্রিংকের বোতলে ভরে ওইদিন সন্ধ্যায় আল আমিনের কাছে দেন। ওই দিনেই আবার রাত ১১টার দিকে বাসে অগ্নিসংযোগ করার জন্য রাজধানীর কালশী সড়ক রেকি করেন।

তিনি বলেন, এসময় কালশী সড়কে মসজিদের পাশে পার্ক করা বসুমতি পরিবহনের একটি বাস সুবিধাজনক হওয়ায় গ্রেফতার চাঁনের নির্দেশে সাগর ও আল আমিন বাসের কাছে যান এবং আল আমিন বাসের মাঝের জানালা খুলে পেট্রোল ঢেলে দিয়াশলাই দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেন। এরপর ঘটনাস্থল থেকে সাগরের সঙ্গে পালিয়ে যান।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, এসময় গ্রেফতার চাঁন রাস্তার আইল্যান্ডের ওপরে দাঁড়িয়ে যানবাহনে অগ্নিসংযোগের নির্দেশনা প্রদান ও ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেন। অন্য কোনো বিরোধীদলের সদস্য যাতে এ ঘটনার ছবি তুলে ও ভিডিও ধারণ করে স্থানীয় শীর্ষ নেতাদের কাছে প্রেরণ করে কৃতিত্ব নিতে না পারে সেজন্য গ্রেফতার চাঁন বাসে আগুন দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই খোরশেদকে ঘটনাস্থল থেকে ভিডিও ধারণ করে তাৎক্ষণিকভাবে পাঠাতে বলেন।

গ্রেফতার চাঁন ধারণকৃত ভিডিওটি হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে দলের স্থানীয় শীর্ষ নেতাদের কাছে প্রেরণ করেন। এ কাজের জন্য গ্রেফতার চাঁন প্রত্যেকের জন্য ১০ হাজার টাকা করে পেলেও গ্রেফতার সাগর ও আল আমিনকে ৭ হাজার টাকা করেন। মূলত দলের কাছে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি ও দলের প্রতি নিজেদের আস্থার প্রতিদান দিতে তারা এ সব নাশকতা ও সহিংসতার ভিডিও ধারণ করে তাদের দলের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দের কাছে প্রেরণ করতেন।

কমান্ডার মঈন বলেন, এছাড়াও নাশকতার এ সব ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রুপে শেয়ার করে তাদের সমমনা অন্যান্য অনুসারীদের নাশকতার জন্য প্ররোচিত করতেন।

গ্রেফতাররা গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর পল্টনে একটি দলের মহাসমাবেশে অংশগ্রহণের মাধ্যমে পল্টন এলাকাসহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে গণপরিবহন, ব্যক্তিগত পরিবহন ও সরকারি পরিবহনসহ বিভিন্ন যানবাহনে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগসহ নাশকতা ও সহিংসতার সাথেও জড়িত ছিল বলেও জানিয়েছে র‌্যাব।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

জোর করে চাপিয়ে দেয়া শিক্ষা সম্ভাবনা নষ্ট করে দেয় : হাসনাত আব্দুল্লাহ

আগুন লাগিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে স্থানীয় নেতাদের বার্তা পাঠায় অগ্নিসংযোগকারীরা: র‌্যাব

প্রকাশের সময় : ০১:৫১:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজধানীর মিরপুরের কালশীতে গত ১৮ নভেম্বর বসুমতি পরিবহনের একটি বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় চার জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। অগ্নিসংযোগ করে হোয়াটসঅ্যাপে স্থানীয় নেতাদের সেই বার্তা পাঠান অগ্নিসংযোগকারীরা। দলে পদ পাওয়ার আশায় তারা এমন কাজ করছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) সকালে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

এ ঘটনায় গ্রেফতাররা হলেন, আল মোহাম্মদ চাঁন (২৭), সাগর (২৫), আল আমিন ওরফে রুবেল (২৯) ও খোরশেদ আলম (৩৪)। সোমবার (২০ নভেম্বর) রাতে অভিযান চালিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

তিনি বলেন, গতকাল রাতে কয়েকজন অগ্নিসংযোগকারীকে গ্রেফতার করা হয়। তারা সরাসরি অগ্নিসংযোগের সাথে জড়িত। ফুট প্রিন্টের মাধ্যমে বোঝা যায় তারা এর আগেও অন্য পরিবহনে অগ্নিসংযোগ করেছে।

র‌্যাব জানায়, বাসে আগুন দেওয়ার জন্য গ্রেফতার চাঁন প্রত্যেকের জন্য ১০ হাজার টাকা করে পেলেও সাগর ও আল আমিনকে ৭ হাজার টাকা করে দেন। চাঁন বাসে আগুন দেওয়ার জন্য তার বন্ধুর মোটরসাইকেল থেকে ২৫০ এমএল পরিমাণ পেট্রোল বের করে এনার্জি ড্রিংকের বোতলে ভরে ওইদিন সন্ধ্যায় আল আমিনের কাছে দেন।

তিনি বলেন, গ্রেফতার হওয়া চারজন বিরোধী একটি রাজনৈতিক দলের কর্মী। তাদের দলের স্থানীয় শীর্ষ নেতাদের নিদের্শনায় গ্রেফতার আল মোহাম্মদ চাঁন রাজধানীর মিরপুর ও পল্লবীর আশপাশের এলাকায় বাসে অগ্নিসংযোগ করার পরিকল্পনা করেন।

পরবর্তী সময় গত ১৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় গ্রেফতার চাঁন ও তার সহযোগী সাগর ও আল আমিন ওরফে রুবেলসহ রাজধানীর মিরপুর-১১, তালতলা নাভানা, কালশী রোড ও সিরামিক রোড এলাকায় সুবিধাজনক স্থানে যানবাহনে আগুন দেওয়ার জন্য রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত রেকি করেন।

কমান্ডার মঈন বলেন, গ্রেফতার চাঁন যানবাহনে আগুন দেওয়ার জন্য তার বন্ধুর মোটরসাইকেল থেকে ২৫০ এমএল পরিমাণ পেট্রোল বের করে এনার্জি ড্রিংকের বোতলে ভরে ওইদিন সন্ধ্যায় আল আমিনের কাছে দেন। ওই দিনেই আবার রাত ১১টার দিকে বাসে অগ্নিসংযোগ করার জন্য রাজধানীর কালশী সড়ক রেকি করেন।

তিনি বলেন, এসময় কালশী সড়কে মসজিদের পাশে পার্ক করা বসুমতি পরিবহনের একটি বাস সুবিধাজনক হওয়ায় গ্রেফতার চাঁনের নির্দেশে সাগর ও আল আমিন বাসের কাছে যান এবং আল আমিন বাসের মাঝের জানালা খুলে পেট্রোল ঢেলে দিয়াশলাই দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেন। এরপর ঘটনাস্থল থেকে সাগরের সঙ্গে পালিয়ে যান।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, এসময় গ্রেফতার চাঁন রাস্তার আইল্যান্ডের ওপরে দাঁড়িয়ে যানবাহনে অগ্নিসংযোগের নির্দেশনা প্রদান ও ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেন। অন্য কোনো বিরোধীদলের সদস্য যাতে এ ঘটনার ছবি তুলে ও ভিডিও ধারণ করে স্থানীয় শীর্ষ নেতাদের কাছে প্রেরণ করে কৃতিত্ব নিতে না পারে সেজন্য গ্রেফতার চাঁন বাসে আগুন দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই খোরশেদকে ঘটনাস্থল থেকে ভিডিও ধারণ করে তাৎক্ষণিকভাবে পাঠাতে বলেন।

গ্রেফতার চাঁন ধারণকৃত ভিডিওটি হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে দলের স্থানীয় শীর্ষ নেতাদের কাছে প্রেরণ করেন। এ কাজের জন্য গ্রেফতার চাঁন প্রত্যেকের জন্য ১০ হাজার টাকা করে পেলেও গ্রেফতার সাগর ও আল আমিনকে ৭ হাজার টাকা করেন। মূলত দলের কাছে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি ও দলের প্রতি নিজেদের আস্থার প্রতিদান দিতে তারা এ সব নাশকতা ও সহিংসতার ভিডিও ধারণ করে তাদের দলের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দের কাছে প্রেরণ করতেন।

কমান্ডার মঈন বলেন, এছাড়াও নাশকতার এ সব ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রুপে শেয়ার করে তাদের সমমনা অন্যান্য অনুসারীদের নাশকতার জন্য প্ররোচিত করতেন।

গ্রেফতাররা গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর পল্টনে একটি দলের মহাসমাবেশে অংশগ্রহণের মাধ্যমে পল্টন এলাকাসহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে গণপরিবহন, ব্যক্তিগত পরিবহন ও সরকারি পরিবহনসহ বিভিন্ন যানবাহনে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগসহ নাশকতা ও সহিংসতার সাথেও জড়িত ছিল বলেও জানিয়েছে র‌্যাব।