নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজধানীর আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রো রেলের পরীক্ষামূলক চলাচল উদ্বোধন করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শুক্রবার (৭ জুলাই) বিকেল ৪টা ৩৫ মিনিটে রাজধানীর আগারগাঁও মেট্রোরেল স্টেশনে পরীক্ষামূলক চলাচল উদ্বোধন করেন তিনি। আগামী অক্টোবর মাসে এই অংশে আনুষ্ঠানিকভাবে চলতে পারে রাজধানীর নতুন এই গণপরিবহন।
উদ্বোধনী বক্তৃতায় ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি শেখ হাসিনা সরকারের একটা গুরুত্বপূর্ণ মেগা প্রকল্প এমআরটি লাইনের আরেকটা মাইলস্টোন অতিক্রম করতে যাচ্ছি। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত আজকে প্রথম ট্রায়াল রান হতে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশে মেট্রো রেলের এটাই আমাদের প্রথম কাজ। এরপরে আমরা আরো পাঁচটি লাইন আনছি। আপনারা জানেন পাতাল রেলের কাজ শুরু হয়েছে। মোট ছয়টি মেট্রো রেলের ঢাকায় যুক্ত হবে।
এর আগে বুধবার মধ্যরাতে হঠাৎ করেই প্রথমবারের মতো আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশে চলাচল করে মেট্রোরেল। এর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে পরীক্ষামূলক চলাচল রান উদ্বোধনের আগেই পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানো হয়।
গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেল উত্তরা-আগারগাঁও অংশে চলাচল শুরু করে। দ্বিতীয় ধাপে আগারগাঁও-মতিঝিল অংশ যাত্রী পরিবহনের লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে অক্টোবরে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের উপ-মহাব্যবস্থাপক নাজমুল ইসলাম ভূইয়া গণমাধ্যমকে জানান, আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগে বুধবার রাতে পরীক্ষামূলকভাবে চলেছে মেট্রোরেল। টেস্ট রান সফল হলে শুরু হবে ট্রায়াল রান। এরপর আগামী অক্টোবরে পুরোদমে যাত্রী চলাচল শুরু হবে।
আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশে মেট্রোরেলের স্টেশন সাতটি। এগুলো হচ্ছে— বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওয়ানবাজার, শাহবাগ, টিএসসি, সচিবালয় ও মতিঝিল। এর মধ্যে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে চালু হতে পারে তিনটি স্টেশন— ফার্মগেট, শাহবাগ ও মতিঝিল। এসব স্টেশনের গড়ে ৯৭ ভাগ কাজ শেষ।
ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক জানিয়েছিলেন, মেট্রোরেলের দ্বিতীয় অংশে সব স্টেশন একসঙ্গে চালু করা সম্ভব না হলে প্রথমে কয়েকটি চালু করা হবে। ধীরে ধীরে বাকি স্টেশনগুলোও চালু করা হবে।
অন্যদিকে, মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত তৃতীয় অংশ ২০২৫ সালে চালুর লক্ষ্যে কাজ এগিয়ে যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, এমআরটি লাইন-৬ প্রকল্পের বর্তমান ব্যয় হচ্ছে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। এর মধ্যে উন্নয়ন সহযোগী জাইকার অর্থায়ন ১৯ হাজার ৭১৯ কোটি টাকা ও সরকারি অর্থায়ন ১৩ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা।
প্রথমে প্রকল্পটি মতিঝিল পর্যন্ত হওয়ার কথা থাকলেও ১.১৬ কিলোমিটার পরিধি বাড়িয়ে কমলাপুর রেলস্টেশন পর্যন্ত নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ফলে প্রকল্পটির ব্যয় ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা হয়েছে। এজন্য অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে ১১ হাজার ৪৮৭ কোটি টাকা।
এখন মেট্রোরেল উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ২১ দশমিক ২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ হবে। উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে কমলাপুর পুরো পথ পাড়ি দিতে যাত্রীদের ব্যয় হবে ১০০ টাকা।