Dhaka মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আওয়ামী লীগের অধীন কোনো গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়নি : ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আওয়ামী লীগ সরকারের অধীন কোনো নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়নি, সে জন্য স্বাভাবিকভাবে জাতিসংঘ নিজ দায়িত্ব থেকেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণের প্রস্তাব দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শুক্রবার (৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ১২ দলীয় জোট লিয়াজোঁ কমিটি ও বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে, প্রত্যেকটি হয়েছে কারচুপির, যা গ্রহণযোগ্য হয়নি। অংশীদারিত্বমূলক নির্বাচন হয়নি। এগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ের নির্বাচনের মান অনুযায়ী হয়নি। স্বাভাবিকভাবে জাতিসংঘ এটাতে চিন্তিত। বাংলাদেশে যে গণতন্ত্র ছিল সেটা এখান থেকে যে চলে গেছে। নির্বাচনের মাধ্যমে সেটা ফিরে আসার যে সম্ভবনা আছে, আওয়ামী লীগের অধীনে পুরনো কায়দায় নির্বাচন হলে সেটিও থাকবে না। সেজন্য জাতিসংঘ বলেছে, সবার অংশগ্রহণে বাংলাদেশে একটা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া উচিত, যা আগে হয়নি। সে কারণে জাতিসংঘ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে এ প্রস্তাব দিয়েছে। এটা তাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।

তিনি আরও বলেন, আমরা দেখছি সরকারের যে লক্ষ্য, তারা আবার আগের কায়দায় নির্বাচন করে ক্ষমতায় যাবে। তারা সেভাবেই পরিকল্পনা করেছে। স্বাভাবিকভাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী যেটা বলেছেন, তাতে আমরা অবাক হয়নি। তিনি বলেছেন, এখানে কাউকে দরকার নেই, আমরা নিজেরাই যথেষ্ট।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, সরকারের লক্ষ্য তারা আগের কায়দায় নির্বাচন দেখিয়ে আবার ক্ষমতায় যাবে, সেভাবে তারা পরিকল্পনা করেছে। সেজন্য যুক্তরাষ্ট্রে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন যে, তারা (সরকার) সুষ্ঠু নির্বাচন করতে যথেষ্ট আগ্রহী। সেই কারণে বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তার মুখ দিয়ে বেরিয়েছে যে, যদি সবার অংশগ্রহণ না থাকে তাহলে সেই নির্বাচনের লেজিটিমেসি নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাবে। সুতরাং রিয়েলিটি ইজ দিস যে, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হলে এবং আমাদের বিরোধী জোট, আমরা যারা আছি তারা যদি অংশগ্রহণ না করি, তাহলে সেই নির্বাচনের লেজিটিমেসি থাকবে না। দেয়ার ইজ এ রিয়েলিটি। আমরা মনে করি, সরকার আগের মতো একতরফা নির্বাচন করতে চায়। সেজন্য তারা জাতিসংঘের প্রস্তাব (নির্বাচনে সহযোগিতার প্রস্তাব) রিজেক্ট করেছে।

‘বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ব্যাপারে বিএনপি জড়িত কি না তা খতিয়ে দেখা হবে’ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর এ বক্তব্যের কড়া জবাব দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পাল্টা জবাবে তিনি দাবি করেছেন, বিএনপি নয় বরং বঙ্গবাজারে মার্কেটে ‘অগ্নিসংযোগ’র ঘটনায় আওয়ামী লীগের অত্যন্ত প্রভাবশালী লোক জড়িত।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, যদি বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ডের প্রকৃত ও নিরপেক্ষ তদন্ত হয় এটি বেরিয়ে আসার তাহলে সম্ভাবনা আছে। এটা সম্পূর্ণভাবে আওয়ামী লীগের দ্বারাই হয়েছে। আওয়ামী লীগের অত্যন্ত প্রভাবশালী লোক বঙ্গবাজারকে দখল করার জন্য চেষ্টা ও কাজ করছিলেন। ফলে প্রকৃত তদন্তে হলে বেরিয়ে আসবে, আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী লোকই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত।

তিনি বলেন, বঙ্গবাজারে যে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হয়ে গেল এই সরকারের দায়-দায়িত্ব বলতে কিছু নেই। উল্টো রিমান্ডে নিয়ে সেই দরিদ্র নির্বিকার-নিশ্চুপ হকাদেরকে নানারকমভাবে হয়রানি করছে। আমরা এই সভায় এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

রমজানের কারণে আন্দোলনের ধরন কিছুটা পরিবর্তন হলেও কর্মসূচি অব্যাহত আছে বলে উল্লেখ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, যুগপৎ আন্দোলনের শরীকরা যার-যার অবস্থান থেকে কর্মসূচি পালন করছে। এ অবস্থায় আগামী দিনে আমাদের করণীয় কী তা নিয়ে ১২ দলীয় জোটের নেতাদের সঙ্গে বসেছি।

তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি আগামীতে আমাদের মধ্যে যোগাযোগ ও সমন্বয় আরও বাড়বে। তখন এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে আরও বেশি শাণিত ও কার্যকর করতে পারব।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, এনডিপি চেয়ারম্যান ক্বারী মো. আবু তাহের, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাগপা নেতা ইকবাল হোসেন, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল রকিব, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির মহাসচিব অ্যাডভোকট আবুল কাশেম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের যুগ্ম মহাসচিব মো. তফাজ্জল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির পক্ষ থেকে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও সেলিমা রহমান উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে চলাচলে অনুপযোগী, দুর্ভোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের

আওয়ামী লীগের অধীন কোনো গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়নি : ফখরুল

প্রকাশের সময় : ০৩:৫৮:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ এপ্রিল ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আওয়ামী লীগ সরকারের অধীন কোনো নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়নি, সে জন্য স্বাভাবিকভাবে জাতিসংঘ নিজ দায়িত্ব থেকেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণের প্রস্তাব দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শুক্রবার (৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ১২ দলীয় জোট লিয়াজোঁ কমিটি ও বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে, প্রত্যেকটি হয়েছে কারচুপির, যা গ্রহণযোগ্য হয়নি। অংশীদারিত্বমূলক নির্বাচন হয়নি। এগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ের নির্বাচনের মান অনুযায়ী হয়নি। স্বাভাবিকভাবে জাতিসংঘ এটাতে চিন্তিত। বাংলাদেশে যে গণতন্ত্র ছিল সেটা এখান থেকে যে চলে গেছে। নির্বাচনের মাধ্যমে সেটা ফিরে আসার যে সম্ভবনা আছে, আওয়ামী লীগের অধীনে পুরনো কায়দায় নির্বাচন হলে সেটিও থাকবে না। সেজন্য জাতিসংঘ বলেছে, সবার অংশগ্রহণে বাংলাদেশে একটা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া উচিত, যা আগে হয়নি। সে কারণে জাতিসংঘ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে এ প্রস্তাব দিয়েছে। এটা তাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।

তিনি আরও বলেন, আমরা দেখছি সরকারের যে লক্ষ্য, তারা আবার আগের কায়দায় নির্বাচন করে ক্ষমতায় যাবে। তারা সেভাবেই পরিকল্পনা করেছে। স্বাভাবিকভাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী যেটা বলেছেন, তাতে আমরা অবাক হয়নি। তিনি বলেছেন, এখানে কাউকে দরকার নেই, আমরা নিজেরাই যথেষ্ট।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, সরকারের লক্ষ্য তারা আগের কায়দায় নির্বাচন দেখিয়ে আবার ক্ষমতায় যাবে, সেভাবে তারা পরিকল্পনা করেছে। সেজন্য যুক্তরাষ্ট্রে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন যে, তারা (সরকার) সুষ্ঠু নির্বাচন করতে যথেষ্ট আগ্রহী। সেই কারণে বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তার মুখ দিয়ে বেরিয়েছে যে, যদি সবার অংশগ্রহণ না থাকে তাহলে সেই নির্বাচনের লেজিটিমেসি নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাবে। সুতরাং রিয়েলিটি ইজ দিস যে, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হলে এবং আমাদের বিরোধী জোট, আমরা যারা আছি তারা যদি অংশগ্রহণ না করি, তাহলে সেই নির্বাচনের লেজিটিমেসি থাকবে না। দেয়ার ইজ এ রিয়েলিটি। আমরা মনে করি, সরকার আগের মতো একতরফা নির্বাচন করতে চায়। সেজন্য তারা জাতিসংঘের প্রস্তাব (নির্বাচনে সহযোগিতার প্রস্তাব) রিজেক্ট করেছে।

‘বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ব্যাপারে বিএনপি জড়িত কি না তা খতিয়ে দেখা হবে’ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর এ বক্তব্যের কড়া জবাব দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পাল্টা জবাবে তিনি দাবি করেছেন, বিএনপি নয় বরং বঙ্গবাজারে মার্কেটে ‘অগ্নিসংযোগ’র ঘটনায় আওয়ামী লীগের অত্যন্ত প্রভাবশালী লোক জড়িত।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, যদি বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ডের প্রকৃত ও নিরপেক্ষ তদন্ত হয় এটি বেরিয়ে আসার তাহলে সম্ভাবনা আছে। এটা সম্পূর্ণভাবে আওয়ামী লীগের দ্বারাই হয়েছে। আওয়ামী লীগের অত্যন্ত প্রভাবশালী লোক বঙ্গবাজারকে দখল করার জন্য চেষ্টা ও কাজ করছিলেন। ফলে প্রকৃত তদন্তে হলে বেরিয়ে আসবে, আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী লোকই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত।

তিনি বলেন, বঙ্গবাজারে যে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হয়ে গেল এই সরকারের দায়-দায়িত্ব বলতে কিছু নেই। উল্টো রিমান্ডে নিয়ে সেই দরিদ্র নির্বিকার-নিশ্চুপ হকাদেরকে নানারকমভাবে হয়রানি করছে। আমরা এই সভায় এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

রমজানের কারণে আন্দোলনের ধরন কিছুটা পরিবর্তন হলেও কর্মসূচি অব্যাহত আছে বলে উল্লেখ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, যুগপৎ আন্দোলনের শরীকরা যার-যার অবস্থান থেকে কর্মসূচি পালন করছে। এ অবস্থায় আগামী দিনে আমাদের করণীয় কী তা নিয়ে ১২ দলীয় জোটের নেতাদের সঙ্গে বসেছি।

তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি আগামীতে আমাদের মধ্যে যোগাযোগ ও সমন্বয় আরও বাড়বে। তখন এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে আরও বেশি শাণিত ও কার্যকর করতে পারব।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, এনডিপি চেয়ারম্যান ক্বারী মো. আবু তাহের, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাগপা নেতা ইকবাল হোসেন, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল রকিব, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির মহাসচিব অ্যাডভোকট আবুল কাশেম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের যুগ্ম মহাসচিব মো. তফাজ্জল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির পক্ষ থেকে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও সেলিমা রহমান উপস্থিত ছিলেন।