Dhaka মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘আওয়ামী লীগ সরকারের হাতে আজ গণতন্ত্র ভূলুণ্ঠিত’

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ০৩:০৫:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • ২১৮ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আওয়ামী লীগ সরকারের হাতে আজ গণতন্ত্র ভূলুণ্ঠিত। এই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে দেশের আপামর জনতা ও ছাত্র সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। ভোটাধিকার, সন্ত্রাস-দখলদারিত্বমুক্ত নিরাপদ ক্যাম্পাস, সার্বজনীন শিক্ষা ব্যবস্থা এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ছাত্র আন্দোলন গড়ে তুলে ফ্যাসিবাদী সরকারকে উৎখাত করতে হবে।

শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ হল রুমে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্যের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবালের সভাপতিত্বে ১৫ সংগঠনের নেতারা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। এসময় সরকারকে উৎখাতে ৯ দফা দাবি ঘোষণা করা হয়।

সভাপতির বক্তব্যে ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। ফলে দেশে বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। বাংলাদেশে যে কত বেকার তা ঢাকার মোড়ে মোড়ে দাঁড়ালে বোঝা যায়। হোন্ডার লাইন (পাঠাও চালক) বেড়ে গেছে। শিক্ষাঙ্গন থেকে শিক্ষিত হয়ে তারা বেকার হয়ে বসে আছে। দলীয় পরিচয় ছাড়া আজ কোনো চাকরী হচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় আসার আগে বলেছিল ঘরে ঘরে চাকরি দেবে কিন্তু কারও চাকরি হয়নি, ১০ টাকায় চাল খাওয়াবে বলেছিল কিন্তু তা পারেনি, বিনামূল্যে সার দেওয়া হয়নি, এ সরকার মানুষের সাথে ধোঁকাবাজি করেছে। এভাবেই সরকার মানুষের সকল স্বপ্নকে হরণ করেছে।

এজন্য তিনি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আগামী সুন্দর ও সম্ভাবনাময় একটি বাংলাদেশ গঠনে কাজ করতে হবে। যেখানে দাঁড়িয়ে যে যার যোগ্যতা নিয়ে সম্মানের সাথে কাজ করবে। দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রদের আমরা এই ফ্যাসিবাদী সরকার বিরোধী আন্দোলনে সামিল হওয়ার আহ্বান জানাই। আগামীর বাংলাদেশ হবে একটি গণতান্ত্রিক, সকল অধিকার সম্পন্ন ও সম্ভাবনার বাংলাদেশ। যে বাংলাদেশে সকলে যার যার মেধার ভিত্তিতে দেশকে সমৃদ্ধ করতে পারবে।

অনুষ্ঠানে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাঈফ মাহমুদ জুয়েল বলেন, ভোটাধিকার, সন্ত্রাস-দখলদারিমুক্ত নিরাপদ ক্যাম্পাস, সার্বজনীন শিক্ষা ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় নয় দফার ভিত্তিতে বৃহত্তর ছাত্র আন্দোলন গড়ে তুলতে ক্রিয়াশীল গণতান্ত্রিক ছাত্র সংগঠন সম্মিলিতভাবে ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র ঐক্যের নাম আমি ঘোষণা করছি। এই ফ্যাসিবাদী সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ও রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক সংস্কারে আন্দোলনরত দলগুলোর ৩১ দফা বাস্তবায়ন করতে হবে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দীদের নিঃশর্ত মুক্তি এবং সাইবার সিকিউরিটি আইনসহ নিবর্তনমূলক সকল আইন বাতিল করতে হবে।

তিনি বলেন, দেশের ১৮ কোটি মানুষ যারা অধিকারবঞ্চিত, এটি তাদের একটি ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম। ভোটাধিকার বঞ্চিত মানুষ এই ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্যে অংশগ্রহণ করে একটি স্বনির্ভর, সমৃদ্ধশালী ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তুলবে। তেমন বাংলাদেশের প্রত্যাশায় ভবিষ্যতে রাজপথের সংগ্রামে সবাইকে অংশ নেওয়ার জন্য আমি আহ্বান জানাচ্ছি।

গণঅধিকার পরিষদের ছাত্র নেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র তারিকুল ইসলাম বলেন, স্মরণকালের ভয়াবহ ফ্যাসিবাদের কবলে আজ বাংলাদেশ। আমরা এমন এক সংকট কাল পার করছি যখন পদে পদে সাংবিধানিক আইনগুলো লঙ্ঘন করা হচ্ছে। বিরোধী মতের কণ্ঠ রোধ করা হচ্ছে। খুন, গুম, হত্যা ও জেল জুলুমের চলছে দেশ। মত প্রকাশের বিরোধী সাইবার আইন পাশ করা হয়েছে। বিরোধী মতকে দমন করার জন্য বিশেষ ক্ষমতা আইনের অপব্যবহার করা হচ্ছে। দেশের বিচার বিভাগকে দলীয়করণ করে দলীয় লোকজন বসিয়ে বিরোধী মতের লোকজনকে বিচারিকভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশকে রক্ষায় ছাত্র আন্দোলনের যে গৌরবজ্জ্বল ঐতিহ্য তা ৫২ বছরের নানান রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও নীতির কারণে আজ বিভ্রান্ত, অসংগঠিত ও পথভ্রষ্ট। অতীত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে সকল বিভ্রান্তি দূর করে ছাত্র সমাজের সামনে সম্মান ও মর্যাদার জীবনের প্রস্তাবনা তুলে ধরা তাই সময়ের দাবি। একই সাথে ভয় ও দখলমুক্ত গণতান্ত্রিক ধারার শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার নিয়ে সর্বস্তরের শিক্ষার্থীকে রাজপথে নামিয়ে ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলন, গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করা আমাদের ঐতিহাসিক কর্তব্য।

বক্তারা আরও বলেন, রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অস্তিত্ব তাই আজ আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের সাথে সম্পর্কিত হয়ে গেছে। রাষ্ট্রের প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠানকে দলীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে জনস্বার্থের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে। তারা তাদের একচেটিয়া ক্ষমতা ধরে রাখতে মরিয়া, ৭১ এর ঘাতকের ন্যায় আজ গণমানুষের মুখোমুখি হয়ে ভয় ও ত্রাসের মাধ্যমে সকল বিরোধী মত-পথকে দমনে হুংকার দিচ্ছে।

অনুষ্ঠানে নব গঠিত ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্যে ১৫ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্য জোটের ১৫টি সংগঠন হলো : জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ছাত্র ফেডারেশন, ছাত্র অধিকার পরিষদ, ছাত্রলীগ (জেএসডি), গণতান্ত্রিক ছাত্র দল (এলডিপি), নাগরিক ছাত্র ঐক্য, জাগপা ছাত্রলীগ, ছাত্র ফোরাম (গণফোরাম মন্টু), ভাসানী ছাত্র পরিষদ, জাতীয় ছাত্র সমাজ (কাজী জাফর), জাতীয় ছাত্র সমাজ (বিজেপি-পার্থ), জাগপা ছাত্রলীগ (খন্দকার লুতফর), ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ, বিপ্লবী ছাত্র সংহতি ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।

শিক্ষার মান উন্নয়ন, মাতৃভাষায় শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে জাতীয় অনুবাদ সংস্থা গঠন, মেধা ও যোগ্যতার শিক্ষাগ্রহণ, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, সব জাতিসত্তার সাংবিধানিক স্বীকৃতি, শিক্ষাঙ্গনগুলোকে সন্ত্রাস ও দখলদারিমুক্ত করা, ছাত্র সংসদ নির্বাচন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সব ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থান প্রভৃতির দাবির পাশাপাশি সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, রাষ্ট্রে সংস্কারে সরকার বিরোধী আন্দোলনে রাজনৈতিক দলগুলোর ৩১ দফা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং সাইবার সিকিউরিটি আইনসহ নিবর্তনমূলক সব ‘কালো কানুন’ বাতিলের কথাও ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্যের ঘোষিত নয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে।

ফ্যাসিবাদী ছাত্র ঐক্যের সমন্বয়ক নির্বাচিত হয়েছেন তিনজন। তারা হলেন, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মশিউর রহমান রিচার্ড ও ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীব।

ছাত্র সংগঠনগুলোর কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা কেন্দ্রীয় সমন্বয় পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল। প্রতিনিধি সভায় ছাত্রদলের সভাপতি রাশেদ ইকবাল খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন।

আবহাওয়া

সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে বাংলাদেশি তরুণীর পা বিচ্ছিন্ন

‘আওয়ামী লীগ সরকারের হাতে আজ গণতন্ত্র ভূলুণ্ঠিত’

প্রকাশের সময় : ০৩:০৫:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আওয়ামী লীগ সরকারের হাতে আজ গণতন্ত্র ভূলুণ্ঠিত। এই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে দেশের আপামর জনতা ও ছাত্র সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। ভোটাধিকার, সন্ত্রাস-দখলদারিত্বমুক্ত নিরাপদ ক্যাম্পাস, সার্বজনীন শিক্ষা ব্যবস্থা এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ছাত্র আন্দোলন গড়ে তুলে ফ্যাসিবাদী সরকারকে উৎখাত করতে হবে।

শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ হল রুমে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্যের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবালের সভাপতিত্বে ১৫ সংগঠনের নেতারা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। এসময় সরকারকে উৎখাতে ৯ দফা দাবি ঘোষণা করা হয়।

সভাপতির বক্তব্যে ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। ফলে দেশে বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। বাংলাদেশে যে কত বেকার তা ঢাকার মোড়ে মোড়ে দাঁড়ালে বোঝা যায়। হোন্ডার লাইন (পাঠাও চালক) বেড়ে গেছে। শিক্ষাঙ্গন থেকে শিক্ষিত হয়ে তারা বেকার হয়ে বসে আছে। দলীয় পরিচয় ছাড়া আজ কোনো চাকরী হচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় আসার আগে বলেছিল ঘরে ঘরে চাকরি দেবে কিন্তু কারও চাকরি হয়নি, ১০ টাকায় চাল খাওয়াবে বলেছিল কিন্তু তা পারেনি, বিনামূল্যে সার দেওয়া হয়নি, এ সরকার মানুষের সাথে ধোঁকাবাজি করেছে। এভাবেই সরকার মানুষের সকল স্বপ্নকে হরণ করেছে।

এজন্য তিনি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আগামী সুন্দর ও সম্ভাবনাময় একটি বাংলাদেশ গঠনে কাজ করতে হবে। যেখানে দাঁড়িয়ে যে যার যোগ্যতা নিয়ে সম্মানের সাথে কাজ করবে। দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রদের আমরা এই ফ্যাসিবাদী সরকার বিরোধী আন্দোলনে সামিল হওয়ার আহ্বান জানাই। আগামীর বাংলাদেশ হবে একটি গণতান্ত্রিক, সকল অধিকার সম্পন্ন ও সম্ভাবনার বাংলাদেশ। যে বাংলাদেশে সকলে যার যার মেধার ভিত্তিতে দেশকে সমৃদ্ধ করতে পারবে।

অনুষ্ঠানে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাঈফ মাহমুদ জুয়েল বলেন, ভোটাধিকার, সন্ত্রাস-দখলদারিমুক্ত নিরাপদ ক্যাম্পাস, সার্বজনীন শিক্ষা ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় নয় দফার ভিত্তিতে বৃহত্তর ছাত্র আন্দোলন গড়ে তুলতে ক্রিয়াশীল গণতান্ত্রিক ছাত্র সংগঠন সম্মিলিতভাবে ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র ঐক্যের নাম আমি ঘোষণা করছি। এই ফ্যাসিবাদী সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ও রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক সংস্কারে আন্দোলনরত দলগুলোর ৩১ দফা বাস্তবায়ন করতে হবে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দীদের নিঃশর্ত মুক্তি এবং সাইবার সিকিউরিটি আইনসহ নিবর্তনমূলক সকল আইন বাতিল করতে হবে।

তিনি বলেন, দেশের ১৮ কোটি মানুষ যারা অধিকারবঞ্চিত, এটি তাদের একটি ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম। ভোটাধিকার বঞ্চিত মানুষ এই ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্যে অংশগ্রহণ করে একটি স্বনির্ভর, সমৃদ্ধশালী ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তুলবে। তেমন বাংলাদেশের প্রত্যাশায় ভবিষ্যতে রাজপথের সংগ্রামে সবাইকে অংশ নেওয়ার জন্য আমি আহ্বান জানাচ্ছি।

গণঅধিকার পরিষদের ছাত্র নেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র তারিকুল ইসলাম বলেন, স্মরণকালের ভয়াবহ ফ্যাসিবাদের কবলে আজ বাংলাদেশ। আমরা এমন এক সংকট কাল পার করছি যখন পদে পদে সাংবিধানিক আইনগুলো লঙ্ঘন করা হচ্ছে। বিরোধী মতের কণ্ঠ রোধ করা হচ্ছে। খুন, গুম, হত্যা ও জেল জুলুমের চলছে দেশ। মত প্রকাশের বিরোধী সাইবার আইন পাশ করা হয়েছে। বিরোধী মতকে দমন করার জন্য বিশেষ ক্ষমতা আইনের অপব্যবহার করা হচ্ছে। দেশের বিচার বিভাগকে দলীয়করণ করে দলীয় লোকজন বসিয়ে বিরোধী মতের লোকজনকে বিচারিকভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশকে রক্ষায় ছাত্র আন্দোলনের যে গৌরবজ্জ্বল ঐতিহ্য তা ৫২ বছরের নানান রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও নীতির কারণে আজ বিভ্রান্ত, অসংগঠিত ও পথভ্রষ্ট। অতীত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে সকল বিভ্রান্তি দূর করে ছাত্র সমাজের সামনে সম্মান ও মর্যাদার জীবনের প্রস্তাবনা তুলে ধরা তাই সময়ের দাবি। একই সাথে ভয় ও দখলমুক্ত গণতান্ত্রিক ধারার শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার নিয়ে সর্বস্তরের শিক্ষার্থীকে রাজপথে নামিয়ে ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলন, গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করা আমাদের ঐতিহাসিক কর্তব্য।

বক্তারা আরও বলেন, রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অস্তিত্ব তাই আজ আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের সাথে সম্পর্কিত হয়ে গেছে। রাষ্ট্রের প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠানকে দলীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে জনস্বার্থের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে। তারা তাদের একচেটিয়া ক্ষমতা ধরে রাখতে মরিয়া, ৭১ এর ঘাতকের ন্যায় আজ গণমানুষের মুখোমুখি হয়ে ভয় ও ত্রাসের মাধ্যমে সকল বিরোধী মত-পথকে দমনে হুংকার দিচ্ছে।

অনুষ্ঠানে নব গঠিত ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্যে ১৫ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্য জোটের ১৫টি সংগঠন হলো : জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ছাত্র ফেডারেশন, ছাত্র অধিকার পরিষদ, ছাত্রলীগ (জেএসডি), গণতান্ত্রিক ছাত্র দল (এলডিপি), নাগরিক ছাত্র ঐক্য, জাগপা ছাত্রলীগ, ছাত্র ফোরাম (গণফোরাম মন্টু), ভাসানী ছাত্র পরিষদ, জাতীয় ছাত্র সমাজ (কাজী জাফর), জাতীয় ছাত্র সমাজ (বিজেপি-পার্থ), জাগপা ছাত্রলীগ (খন্দকার লুতফর), ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ, বিপ্লবী ছাত্র সংহতি ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।

শিক্ষার মান উন্নয়ন, মাতৃভাষায় শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে জাতীয় অনুবাদ সংস্থা গঠন, মেধা ও যোগ্যতার শিক্ষাগ্রহণ, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, সব জাতিসত্তার সাংবিধানিক স্বীকৃতি, শিক্ষাঙ্গনগুলোকে সন্ত্রাস ও দখলদারিমুক্ত করা, ছাত্র সংসদ নির্বাচন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সব ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থান প্রভৃতির দাবির পাশাপাশি সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, রাষ্ট্রে সংস্কারে সরকার বিরোধী আন্দোলনে রাজনৈতিক দলগুলোর ৩১ দফা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং সাইবার সিকিউরিটি আইনসহ নিবর্তনমূলক সব ‘কালো কানুন’ বাতিলের কথাও ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্যের ঘোষিত নয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে।

ফ্যাসিবাদী ছাত্র ঐক্যের সমন্বয়ক নির্বাচিত হয়েছেন তিনজন। তারা হলেন, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মশিউর রহমান রিচার্ড ও ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীব।

ছাত্র সংগঠনগুলোর কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা কেন্দ্রীয় সমন্বয় পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল। প্রতিনিধি সভায় ছাত্রদলের সভাপতি রাশেদ ইকবাল খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন।